শনিবার, ২৫ মে ২০২৪, ১০:০৯ পূর্বাহ্ন

ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার রিমান্ডে পি কে হালদার

ভয়েসবাংলা প্রতিবেদক / ১৫৪ বার
আপডেট : শনিবার, ১৪ মে, ২০২২

বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ মামলার মূল অভিযুক্ত প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদারকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ থেকে গ্রেফতার করার পর তাকে আদালতে তুলে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা  ইনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) নিজেদের হেফাজতে হয়েছে। শনিবার (১৪ মে) দুপুরে পি কে হালদারসহ মোট ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়।

ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশ হাইকমিশন সূত্র জানিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গে এক অভিযানে আলোচিত পি কে হালদারসহ ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ইডি এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, প্রশান্ত কুমার হালদার পশ্চিমবঙ্গে নিজেকে শিবশঙ্কর হালদার নামে পরিচয় দিয়ে ভারতীয় নাগরিকত্ব নিয়েছেন। তিনি জালিয়াতি করে রেশন কার্ড, ভারতীয় ভোটার আইডি কার্ড, প্যান কার্ড ও আধার কার্ড নিয়েছিলেন। তার সহযোগীরাও সেখানে জালিয়াতি করে ভারতীয় নাগরিকত্ব নিয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গ’র উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার অশোক নগরের একটি বাড়িতে আত্মগোপনে ছিলেন তিনি।

শুক্রবার (১৩ মে) পি কে হালদারের ব্যক্তিগত আইনজীবী সুকুমার মৃধার সম্পত্তির সন্ধানে কলকাতা ও উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালায় ভারতের এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। এদিন ভোরে উত্তর ২৪ পরগণার অশোকনগর ও দক্ষিণ ২৪ পরগণার পোলেরহাটে দুটি বাড়িসহ বিভিন্ন জায়গায় সুকুমার মৃধার বেআইনি সম্পত্তির খোঁজে অভিযান শুরু করে ইডি। কর্মকর্তারা বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে এই তল্লাশি চালান বলে জানা গেছে। এ সময় তাদের সঙ্গে প্রচুর নিরাপত্তাকর্মী ছিলেন। সূত্রে জানা গেছে, মৃধার একটি বাড়ি থেকে প্রচুর অর্থ পেয়েছে ইডি। তবে এই টাকা কোথা থেকে এসেছে সেই বিষয়ে তারা এখনও নিশ্চিত হতে পারেনি।

ইডি সূত্র জানিয়েছে, তদন্ত শেষে উদ্ধারকৃত অর্থের উৎস সম্পর্কে তারা নিশ্চিত হতে পারবেন। এর সঙ্গে বাংলাদেশের অর্থ পাচার মামলার আসামি প্রশান্ত কুমার হালদার (পি কে হালদার) জড়িত কিনা তাও তদন্ত রিপোর্ট এলে জানা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। সুকুমার মৃধা বাংলাদেশে বসবাস করলেও পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় তার অনেক মাছের ভেড়ি আছে বলে অভিযোগ রয়েছে৷ পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছে ইডি।

এদিন আদালত ছুটি থাকায় পি কে হালদার সহ অভিযুক্তদের বিশেষ আদালতে তোলা হয়। ইডির আইনজীবী তদন্তের স্বার্থে অভিযুক্তদের নিজেদের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন। বিচারক এই মামলায় ৫ জন পুরুষ আসামির ১৭ মে পর্যন্ত ইডি হেফাজত ও এক নারী আসামির ১৭ মে পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।

এদিকে ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার থেকে এদের খোঁজে ইডি আধিকারিকরা অশোকনগরসহ রাজ্যের ৯ জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালায়। ২৪ ঘণ্টা তল্লাশি অভিযান চালিয়ে ৬ জনকে গ্রেফতার করে। মামলার সরকারি আইনজীবী অরিজিৎ চক্রবর্তী জানিয়েছেন, মূলত বাংলাদেশে ব্যাংকের ১০ হাজার কোটি টাকা প্রতারণার ঘটনায় মূল অভিযুক্ত প্রশান্ত কুমার হালদার, তার ভাই গণেশ হালদারসহ বাংলাদেশের বাসিন্দা স্বপন মৈত্র ও উত্তম মৈত্র, ইমাম হোসেন এবং আমানা সুলতানা ওরফে শর্মি হালদারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শনিবারই আটককৃতদের আদালতে আনা হয়। গ্রেফতারকৃত শর্মিকে ১৭ মে পর্যন্ত জেল হেফাজত এবং বাকিদের ইডি হেফাজতে পাঠানো হয়েছে।

জানা গেছে, বাংলাদেশে ভুয়া একটি সংস্থা তৈরি করে  বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক থেকে বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা তুলেন মূল অভিযুক্ত প্রশান্ত কুমার হালদার। এরপর সেই টাকা পশ্চিমবঙ্গে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এমনই তদন্তে উঠে আসে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্তে। সেই তথ্য দিয়ে বাংলাদেশ সরকারের তরফ থেকে চলতি মাসে যোগাযোগ করা হয় ভারত সরকারের সঙ্গে। এরপরই ভারত সরকারের তরফ থেকে বাংলাদেশের থেকে আসা টাকার উৎস খুঁজতে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটকে। সেই তদন্ত শুরু করে শুক্রবার অশোকনগর, কলকাতার বাইপাসের একটি অফিস ও ভাঙ্গরের মোট ৯টি জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালায় ইডি। দীর্ঘ তল্লাশি অভিযানের পর শনিবার প্রশান্ত হালদারসহ ৬ জনকে গ্রেফতার করে ইডি। ইডি সূত্রে খবর, এই অভিযুক্তদের মাধ্যমেই টাকা ভারতে এসে পৌঁছাত। এদের পিছনে অন্য কোনও প্রভাবশালী ব্যক্তির যোগ আছে কিনা সেটা তদন্ত করে দেখছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর