বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া গভীর নিম্নচাপ ঘনীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড় মোখায় পরিণত হয়েছে। এটি আরও ঘনীভূত হয়ে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। আগামী রবিবার আছড়ে পড়তে পারে কক্সবাজার উপকূলে। ঝড়ের প্রভাবে সাগর বিক্ষুব্ধ থাকায় দেশে এ চার সমুদ্র বন্দরে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদফতর।
আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন বলেন, এর প্রভাব এখনও বাংলাদেশের উপকূলে পড়তে শুরু করেনি। তবে শুক্র ও শনিবার এই ঝড়ের প্রভাবে কোথাও কোথাও বৃষ্টি শুরু হতে পারে। এটি এখন ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। এখন গতিবেগ কম আছে। এটি আরও ঘনীভূত হলে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। তখন এর গতিবেগ আরও অনেক বেড়ে যাবে। তিনি জানান, রবিবার সকাল থেকে দুপুরের মধ্যে এটি দেশেএ উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে। সম্ভাব্য গতিপথ কক্সবাজার আর মিয়ানমারের মাঝখান দিয়ে এটি উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
প্রসঙ্গত, কক্সবাজার উপকূল বলতে টেকনাফ, মহেশখালীসহ আশপাশের সব উপকূল বোঝানো হয়েছে। এ ছাড়া এই ঝড়ের সম্ভাব্য গতিপথে সেন্টমার্টিনকেও দেখা যাচ্ছে। ফলে প্রবল ঘূর্ণিঝড় হলে সবার আগে এটি আঘাত হানবে সেন্টমার্টিনেই।
আবহাওয়ার বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও আশপাশের এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘণীভূত হয়ে একই এলাকায় ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’য় পরিণত হয়েছে। এটি আজ সকালে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ২৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ- দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ২২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ২৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ২২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরো ঘনীভূত হয়ে আগামীকাল অর্থাৎ ১২ মে সকাল পর্যন্ত উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে এবং পরবর্তীতে দিক পরিবর্তন করে ক্রমান্বয়ে উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর বিক্ষুব্ধ রয়েছে। এ জন্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরগুলোকে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
পাশাপাশি উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে তাদের গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হলো।
