রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৩:৪৪ পূর্বাহ্ন

১২ মার্চ কাজে যোগ দিচ্ছেন মাঠ প্রশাসনের আন্দোলনকারী কর্মচারীরা

ভয়েসবাংলা প্রতিবেদক / ১৯৫ বার
আপডেট : বুধবার, ৯ মার্চ, ২০২২

অনেকটাই নমনীয় মনোভাব ব্যক্ত করে চলমান আন্দোলন থেকে সরে এসে কাজে যোগ দিচ্ছেন মাঠ প্রশাসনের আন্দোলনকারী কর্মচারীরা। আগামী ১২ মার্চ ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের দফতরে অনুষ্ঠিতব্য বৈঠকে আনুষ্ঠানিকভাবে এমন ঘোষণা দেওয়া হতে পারে বলে তারা জানিয়েছেন।

জানা গেছে,  শনিবার বিভাগীয় কমিশনারের দফতরে আন্দোলনকারী সংগঠনগুলোর নেতাদের বৈঠক হবে। তাতে বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন। সেখানে আন্দোলনকারীদের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হতে পারে। ওই আশ্বাসের ভিত্তিতেই চলমান আন্দোলন থেকে সরে এসে কাজে যোগ দেওয়ার ঘোষণা দেবেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

পদবি বদল ও বেতন গ্রেড উন্নীতকরণের দাবিতে বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক (ডিসি), উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়ের কর্মচারীরা টানা কর্মবিরতি পালন করছেন। এ জন্য নামজারি, জলমহাল, চলমান টেন্ডার কার্যক্রম, ইজারা মূল্য আদায়, অর্পিত সম্পত্তির লিজমানি আদায়, মিসকেস ও গণশুনানি সম্ভব হচ্ছে না। ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ। এমন প্রেক্ষাপটে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম একাধিক জেলার জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে কর্মচারীদের আন্দোলন স্থগিতের প্রস্তাব দেন। ডিসিরা তাদের জানিয়েছেন, মন্ত্রিপরিষদ সচিব তাদের দাবি বাস্তবায়নের বিষয়টি দ্রুত সুরাহা করবেন। তাই আন্দোলন স্থগিত রাখতে বলেছেন।

বিভিন্ন জেলায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আন্দোলনের ফলে জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, এমনকি সহকারী ভূমি অফিসগুলোয় এক ধরনের অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়। বাংলা ট্রিবিউনের সিলেট, রাজশাহী, খুলনা, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, যশোর, রংপুর ও কুমিল্লার প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, প্রায় সব দফতর তালাবদ্ধ রেখে কর্মচারীদের নিজ নিজ দফতরের বারান্দা ও অফিস চত্বরে আড্ডা দিতে দেখা গেছে। কর্মচারীরা জানিয়েছেন, দাবি না মানলে আন্দোলন চলবে। তবে নেতাদের মুখে ভিন্ন সুর। তারা বলছেন, ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন এবং ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের মতো দুটি বড় উৎসব রয়েছে। এ কারণেই আন্দোলন বন্ধ রেখে কাজে যোগ দেওয়াটা জরুরি।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ কালেক্টরেট সহকারী সমিতির মহাসচিব মো. আনোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, সাংগঠনিক মতামত সভাপতি আকবর হোসেন দেবেন। আমি ব্যক্তিগত মতামতে বলতে চাই, ওপর-নিচ উভয় দিকেরই চাপ রয়েছে। তাই আন্দোলন আর দীর্ঘ করা ঠিক হবে না। বিভাগীয় কমিশনার এবং জেলা প্রশাসক স্যারেরা আমাদের অভিভাবক। তাদের আশ্বাসের প্রতি আস্থা রাখতে হয়। তারা জানিয়েছেন, সরকারের ওপর মহলে কথা হয়েছে। তারা আমাদের দাবির প্রতি আন্তরিক। তাই আমরা একটা যৌথ মিটিংয়ের মাধ্যমে আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দিতে চাই।

সূত্র জানিয়েছে, কর্মচারী সমন্বয় পরিষদের ব্যানারে বিদ্যমান বেতন কাঠামোর ২০টি গ্রেডকে ১০টি গ্রেডে রূপান্তর এবং অন্তর্বর্তী ব্যবস্থায় ৪০ শতাংশ মহার্ঘ্য ভাতা দেওয়ার দাবি তোলা হয়েছে। টাইমস্কেল সিলেকশন গ্রেড পুনর্বহাল, আগের মতো শতভাগ পেনশন প্রদানসহ গ্র্যাচুইটির হার এক টাকায় ৫০০ টাকা নির্ধারণ করারও দাবি তাদের। বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট মূল বেতনের ২০ শতাংশ এবং ন্যায্যমূল্যে রেশন প্রদানেরও দাবি করেছেন তারা।

গত শনিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় কচি-কাঁচার মেলা মিলনায়তন সংগঠনের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি সমাবেশে পরিষদের মহাসচিব নোমানুজ্জামান আল আজাদ এই পাঁচ দাবি জানান। দাবি বাস্তবায়নে দৃশ্যমান পদক্ষেপ দেখা না গেলে ২৮ মার্চ ঢাকাসহ সারা দেশে ১৪ লাখ গণকর্মচারীর পক্ষে বিক্ষোভ কর্মসূচির কথাও বলেন তিনি।

এদিকে এই কর্মবিরতিতে কার্যত স্থবির হয়ে পড়েছে মাঠ প্রশাসন। গুরুত্বপূর্ণ চিঠি গ্রহণ ও প্রেরণসহ গুরুত্বপূর্ণ কোনও কাজই গত মঙ্গলবার থেকে করেননি তারা। এতে মাঠ প্রশাসনে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে বলে ভিন্ন ভিন্ন চিঠি দিয়ে কেবিনেট সচিবকে জানিয়েছেন ডিসি, ইউএনও এবং এসিল্যান্ডরা। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মাঠ প্রশাসনের কর্মচারীদের দাবিতে অনেক অসঙ্গতি রয়েছে। এসব দাবি শতভাগ মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। কারণ, সচিবালয় ও জেলা প্রশাসনের কাজের ধরন এক নয়।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর