রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ১২:৪৯ পূর্বাহ্ন

হাইকোর্টের বিচারপতির বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ

ভয়েসবাংলা প্রতিবেদক / ১৬৩ বার
আপডেট : বৃহস্পতিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২

সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের বিরুদ্ধে গাইবান্ধা-৫ (সাঘাটা-ফুলছড়ি) উপ-নির্বাচনে রাজনৈতিক মতবিনিময় সভায় অংশ নেওয়ার ঘটনায় আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ তোলা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির বিএনপিপন্থী ৬ আইনজীবী নেতা প্রধান বিচারপতি বরাবর এ অভিযোগ দাখিল করেন। আইনজীবীরা হলেন সমিতির কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ কামাল হোসেন, সিনিয়র সহ-সম্পাদক মাহফুজ বিন ইউসুফ, সহ-সম্পাদক মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান খান, কার্যনির্বাহী সদস্য গোলাম আকতার জাকির, মনজুরুল আলম সুজন ও কামরুল ইসলাম।

লিখিত অভিযোগে বলা হয়, ‘সুপ্রিম কোর্ট বাংলাদেশের মানুষের বিচার পাওয়ার সর্বশেষ আশ্রয়স্থল। ধর্ম, বর্ণ, দলমত নির্বিশেষে এদেশের সব মানুষ তাদের বিচার পাওয়ার আশায় এবং সাংবিধানিক সংকটে সুপ্রিম কোর্টের শরণাপন্ন হয়ে থাকেন। আদালত তার সততা, নিরপেক্ষতা, প্রজ্ঞা ও আইনের আলোকে দেশের মানুষের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করে থাকেন। এদেশের মানুষ এখনও এটাই বিশ্বাস করে। একজন  বিচারপতি যখন বিচারিক দায়িত্ব পালন করেন, তখন তার ধর্মীয়, রাজনৈতিক বা অন্য সব পরিচয়ের ঊর্ধ্বে উঠে নিরপেক্ষ বিচার করে থাকেন। আইনের আলোকে সুষ্ঠু বিচার করা যেমন জরুরি, তেমনই সাধারণ মানুষের মধ্যে ন্যায়বিচার পাওয়া যাবে, নিরপেক্ষ বিচার পাওয়া যাবে—এই বিশ্বাস থাকাটাও জরুরি। বিচার বিভাগের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস ধরে রাখার আবশ্যকতায় সিভিল আপিল নম্বর ০৬/২০১৭ বাংলাদেশ সরকার এবং অন্যান্য বনাম অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান সিদ্দিকী এবং অন্যান্য মামলায় বিচারপতিদের জন্য আচরণবিধি নির্ধারণ করে দেওয়া হয়।

অভিযোগে আররও বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে, মিডিয়ায় ও ভিডিও থেকে প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের মাননীয় বিচারপতি মোহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকার আসন্ন জাতীয় সংসদ উপ-নির্বাচনে গাইবান্ধা-৫ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর নির্বাচনি মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন। ওই মতবিনিময় সভায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা ও প্রার্থী উপস্থিত ছিলেন এবং মাইক হাতে মাননীয় বিচারপতি মহোদয়কে বক্তব্য দিতে দেখা গেছে। ওই মতবিনিময় সভায় উপস্থিত সংসদ সদস্য প্রার্থী মাননীয় বিচারপতিকে তার স্থানীয় অভিভাবক হিসেবে উল্লেখ করেছেন। ওই সভাকে রাজনৈতিক দলের মতবিনিময় সভা হিসেবে উল্লেখ করেছেন। একটি রাজনৈতিক দলের মতবিনিময় সভায় উপস্থিত হয়ে তিনি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ কর্তৃক নির্ধারিত নিম্নলিখিত আচরণ বিধি ভঙ্গ করেছেন।

আমরা (অভিযোগকারীরা) সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মনে করি, ওই ঘটনার মাধ্যমে বিচারপতি মোহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকার সুপ্রিম কোর্টের বিচারক হিসেবে আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন এবং সুপ্রিম কোর্টের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছেন। তাই এ বিষয়ে আমরা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি।

প্রসঙ্গত, বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকার হলেন প্রয়াত ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়ার মেয়ের জামাতা। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিচারপতির স্ত্রী ও ফুলছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফারজানা রাব্বী বুবলী জানান, আমি গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলাম। কিন্তু দলের সিদ্ধান্তে আমি সেখান থেকে সরে এসেছি। যে কারণে গত ১৫ সেপ্টেম্বর আমার বাড়িতে আমার এবং আমার বাবা প্রয়াত ফজলে রাব্বী মিয়ার অনুসারীরা, বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী এবং আত্মীয় স্বজনেরা আসেন। মনোনয়ন না পাওয়ার বিষয়ে তাদের মাঝে সান্ত্বনামূলক বক্তব্য দেই। পরে প্রয়াত বাবার জন্য মোনাজাতের ব্যবস্থা করা হয়। স্বাভাবিকভাবেই আমার স্বামী বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকার সে মোনাজাতে উপস্থিত ছিলেন। মোনাজাত শেষে মাহমুদ হাসান রিপন আমার বাড়িতে আসেন। এরপর উপস্থিত নেতাকর্মীদের মাঝে তিনি সৌজন্যমূলক বক্তব্য রাখেন। এরপর আমার প্রয়াত বাবাকে নিয়ে কিছু কথা বলেছিলেন আমার স্বামী বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকার।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর