রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৩:২৮ পূর্বাহ্ন

সুপ্রিম কোর্ট বারে ভাঙচুরের ঘটনা মানুষ ভালোভাবে নিচ্ছে না: হাইকোর্ট

ভয়েস বাংলা প্রতিবেদক / ৭ বার
আপডেট : রবিবার, ৬ আগস্ট, ২০২৩

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতিতে ভাঙচুরের ঘটনা দেশের মানুষ ভালোভাবে নিচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতিতে ভাঙচুরের মামলায় বিএনপির ১৮ আইনজীবীর জামিন আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রবিবার বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।
উচ্চ আদালত থেকে জামিন পাওয়া সত্ত্বেও আসামিদের গ্রেফতারের ঘটনায় উষ্মা প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, জামিন আদেশ থাকা সত্ত্বেও যখন গ্রেফতার করা হয়, ধরে নিয়ে টর্চার করা হয়, তখন মৌখিক আদেশে আর কী হবে! হাইকোর্টের সেই অবস্থান এখন আর নাই। এছাড়া সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতিতে ভাঙচুরের ঘটনা দেশের মানুষ ভালোভাবে নিচ্ছে না বলে মন্তব্য করেন আদালত।
পরে আদালত বিএনপি আইনজীবীদের জামিন আবেদন গ্রহণ করে শুনানির জন্য সোমবার দিন ঠিক করে দেন।
বারের সম্পাদকের কক্ষ ভাঙচুরের মামলায় বিএনপির ১৮ আইনজীবীর আগাম জামিন চেয়ে হাইকোর্টের এই বেঞ্চে যান সিনিয়র আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী, জয়নুল আবেদনীসহ বেশ কয়েকজন আইনজীবী। জামিন আবেদনটি আদালতে উপস্থাপন করে এজে মোহাম্মদ আলী আজই (রবিবার) শুনানি করার সুযোগ চেয়ে বলেন, আপনাদের (হাইকোর্টের) এখতিয়ার আছে। জরুরি ভিত্তিতে একটি তালিকা করে নিতে পারেন। এখনই সাপ্লিমেন্ট করে নিতে পারেন। তখন আদালত বলেন, আপনারা অন্য সিনিয়র কোর্টে (হাইকোর্ট বেঞ্চে) চেষ্টা করুন, প্লিজ।
তখন আইনজীবীরা বলেন, আপনারা সব কোর্ট যদি এমন করেন, তাহলে আমাদের কী হবে, আমরা কোথায় যাবো? জুডিসিয়ারির যদি এমন অবস্থা হয়, যেখানে আমরা আইনজীবীরা এখানেই প্রাক্টিস করছি। এই অঙ্গনের আইনজীবী হিসেবে আমরা সুরক্ষা চাইছি। এ বিষয়ে আপিল বিভাগেরও নির্দেশনা রয়েছে। পরে আদালত বলেন, ঠিক আছে, আজকে দিয়ে যান, কালকে শুনবো। কালকে তালিকায় আসবে।
তখন বিএনপির আইনজীবী জয়নুল আবেদীন ও ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল আদালতকে বলেন, তাহলে কাল পর্যন্ত পুলিশ যাতে গ্রেফতার না করে, সেই নির্দেশ দিয়ে দেন। আমরা তো সব সময় আপনাদের কাছেই আসি। আপনাদের যদি একটা আদেশ থাকে— যাতে পুলিশ কাউকে গ্রেফতার না করে। প্রয়োজনে একটি মৌখিক আদেশ দেন।
এ সময় সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতিতে ভাঙচুরের ঘটনার বিষয়টি উল্লেখ করে আদালত বলেন, এসব অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা কে বা কারা করেছে, তা জানি না। কিন্তু সারা দেশের মানুষ এগুলোকে ভালোভাবে নিচ্ছে না।
এ সময় আইনজীবী মামুন মাহবুব, জয়নুল আবেদীন, এজে মোহাম্মদ আলী, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদলের বক্তব্যকে অ্যাকাডেমিক বক্তব্য উল্লেখ করে হাইকোর্ট বলেন, যা বলছেন তার সবই অ্যাকাডেমিক, আমরা অ্যাকাডেমির মধ্যে আছি, প্রাক্টক্যালি নেই।
আদালত বলেন, আমাদের বক্তব্য হচ্ছে— আমরা অর্ডার পাস করেছি। তারপরও বিভিন্ন জায়গায় আসামি ধরা হয়েছে। টাকা চাইছে, এমন ধরনের ঘটনাও আছে। ল’ ইয়ার সার্টিফিকেট দিয়েছেন, তারপরও ধরে নিয়ে কোর্টে হাজির করেছে। রিমান্ডেও পাঠিয়েছে। হাইকোর্টের অনলাইনে আদেশ আছে, সেটাও দেখে না। পরে আদালত সোমবার (৭ আগস্ট) আবেদনটি শুনবেন বলে জানিয়ে দেন।
এর আগে তারেক দম্পতিকে দেওয়া সাজার বিরুদ্ধে রায়ের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন ও বিক্ষোভ মিছিল করে বিএনপি সমর্থিত আইনজীবীরা। মিছিলের এক পর্যায়ে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবীদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি ও হামলার ঘটনা ঘটে। এদিন আওয়ামী লীগ মমর্থিত বার সভাপতি ও সেক্রেটারির কক্ষে ভাঙচুর চালায় বিএনপির আইনজীবীরা। এ ঘটনায় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সহকারী সুপারিনটেনডেন্ট মো. রফিক উল্লাহ বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় বিএনপির ১৮ জন আইনজীবীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর