রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৪:৪৭ পূর্বাহ্ন

সাধারণ জনগণ ইসির সিদ্ধান্তে হতবাক: তথ্যমন্ত্রী

ভয়েসবাংলা প্রতিবেদক / ১৫৫ বার
আপডেট : বৃহস্পতিবার, ১৩ অক্টোবর, ২০২২

তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, গাইবান্ধার উপনির্বাচনে মাঠে কর্মরত নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা লিখিত দিয়েছেন নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে, কোনও গণ্ডগোল হয়নি, আর ৫০০ কিলোমিটার দূরে বসে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে নির্বাচন কমিশন পুরো উপনির্বাচন বাতিল করেছে, যে কারণে জনগণই বলছে কমিশনের এ সিদ্ধান্ত প্রশ্নবিদ্ধ।

বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে এ বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, নির্বাচন কমিশনের ওই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে এটিও প্রমাণিত হয়েছে, নির্বাচন সবসময় নির্বাচন কমিশনের অধীনেই হয়, তাদের সিদ্ধান্তই সবাই ওপরে, সরকারের সেখানে ভূমিকা নেই। ফলে বিএনপিসহ কেউ কেউ যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার, নিরপেক্ষ সরকার প্রভৃতি নানা ধরনের সরকারের ফর্মুলা দেয় সেটিরও কোনও যৌক্তিকতা নেই।

ড. হাছান বলেন, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বা মন্ত্রী হিসেবে নয়, সেখানকার ভোটার, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং বিভিন্ন টক শোতে আমি যেটা দেখেছি-শুনেছি, তা থেকে আমাদের মনে হচ্ছে, সাধারণ জনগণ তাদের এই সিদ্ধান্ত হতবাক হয়েছে, কারণ নির্বাচনি এলাকার কোথাও কোনও ধরণের গণ্ডগোল হয়নি। এছাড়া কোনও পোলিং অফিসার, প্রিজাইডিং অফিসার, রিটার্নিং অফিসার, সহকারী রিটার্নিং অফিসারের পক্ষ থেকে কোনও অভিযোগ ছিল না। আর নির্বাচন কমিশন ৫০০ কিলোমিটার দূরে বসে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে নির্বাচন বাতিলের সিদ্ধান্ত দিয়েছেন।

ড. হাছান মাহমুদ এ সময় প্রিজাইডিং অফিসারদের লিখিত রিপোর্টের কপি উপস্থাপন করে বলেন, যেখানে নির্বাচন কমিশন এই কথাগুলো বলছে, সেখানে আমার কাছে ৯৮টা কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসারের লিখিত রিপোর্ট আছে যে ভোট সুষ্ঠু হয়েছে, কোনও ধরণের গণ্ডগোল হয়নি এবং রিটার্নিং অফিসারের নির্দেশে ভোট বন্ধ করেছে।

যুক্তি দিয়ে মন্ত্রী বলেন, হু ইজ অন দ্যা গ্রাউন্ড, প্রিজাইডিং অফিসার ইজ অন দ্যা গ্রাউন্ড এবং তারা লিখিত দিয়েছেন, ভোট সুষ্ঠু, অবাধ, স্বচ্ছ হচ্ছে। আর এখানে ৫০০ কিলোমিটার দূরে বসে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে ভোট যখন বন্ধ করা হলো, মানুষ এতে শুধু হতবাক হয়নি, মানুষ বলছে, নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্ত প্রচণ্ড প্রশ্নবোধক একটি সিদ্ধান্ত। সেটা আমি বলছি না, আমার দলও বলছে না। সেখানে আমাদের প্রার্থী এবং প্রার্থীর সমর্থকরা এর প্রতিবাদ জানিয়েছে।

ঢাকা থেকে ৫০০ কিলোমিটার দূরের ক্যামেরার রেজুলেশন কেমন ছিল, ইন্টারনেট সংযোগ কেমন ছিল, সেটি একটা বড় প্রশ্ন উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, সেটি একটি দুর্গম এলাকা। সেখান থেকে সিসি ক্যামেরা কতটুকু স্বচ্ছ বা কারেক্ট ফুটেজ দিচ্ছিল সেটা একটা বড় প্রশ্ন। বোদ্ধাজনেরা বলছেন, সেখানে একজন বৃদ্ধ লোককে আরেকজন হাঁটতে সাহায্য করছে, পোলিং অফিসার, প্রিজাইডিং অফিসারদের জন্য কেউ চা এনেছে, পানি এনেছে, কেউ প্রাকৃতিক ডাকে সাড়া দিতে গেছে, আবার ঢুকেছে। নির্বাচন কমিশন যে বলছে সেখানে কোনও কোনও কেন্দ্রে তারা ভোটারের বাইরে লোক দেখতে পেয়েছেন, ইন্টারনেট গতির কারণে ফুটেজের রেজুলেশন যেখানে আপ-ডাউন করে, সেখানে ৫০০ কিলোমিটার দূরে বসে ঠিকভাবে মানুষ চিহ্নিত করা সম্ভব কি না, প্রশ্ন রেখেছেন বোদ্ধাজনেরা।

৫৩ কেন্দ্রের বিষয়ে অভিযোগে পুরো নির্বাচন বাতিল হওয়া যৌক্তিক কি না এমন প্রশ্নের জবাবে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন কমিশন বলেছে ৫৩টি কেন্দ্রে তারা এ ধরণের ঘটনা দেখেছে। ৫৩টি কেন্দ্র মানে ১৪৫টি কেন্দ্রের এক তৃতীয়াংশ। আমাদের প্রার্থীও প্রশ্ন রেখেছেন, সেই ৫৩টি কেন্দ্রের ভোট স্থগিত বা বাতিল হতে পারতো, বাকি কেন্দ্রের ভোট কেন বাতিল হলো। কমিশনের মতে অন্য কেন্দ্রগুলোতে সুষ্ঠু ভোট হয়েছে, নির্বাচন কমিশনেরও কোনও আপত্তি নেই। তাহলে অন্য কেন্দ্রের ভোট কেন স্থগিত হলো, মানুষের কাছে সেটাও একটা বড় প্রশ্ন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর