রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৪:১৭ পূর্বাহ্ন

শিক্ষাক্রমে সংস্কার নয়, ট্রান্সফরমেশন হচ্ছে: শিক্ষামন্ত্রী

ভয়েসবাংলা প্রতিবেদক / ১৬০ বার
আপডেট : মঙ্গলবার, ১৯ জুলাই, ২০২২

শিক্ষাক্রম পরিবর্তন বা সংস্কার নয়, এর ট্রান্সফরমেশন হচ্ছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজি (আইইউবিএটি)-এর ষষ্ঠ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে তিনি রাষ্ট্রপতি ও আচার্যের প্রতিনিধি হিসেবে সভাপতির বক্তব্য রাখেন।

জর্জিয়ার ককেশাস বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট এবং ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অফ ইউনিভার্সিটি প্রেসিডেন্টস-এর বোর্ড চেয়ারম্যান  অধ্যাপক ড. কখা শেঞ্জেলিয়া সমাবর্তনে মূল বক্তা ছিলেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী এবং আইএসি যুক্তরাজ্য-এর রেসিডেন্ট জাজ ও ফিনল্যান্ডের অনারারি কনসাল জুলিয়ান ফিলিপস। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন আইইউবিএটি’র বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান জুবের আলিম।

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, নতুন শিক্ষাক্রমে প্রাক-প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত শিক্ষার খোলনলচে বদলে ফেলছি। এখন পরিবর্তন ও সংস্কারের কথা বলছি না, ট্রান্সফরমেশনের কথা বলছি। শিক্ষার্থীদের করে শিখতে হবে। অথচ ব্যাপক অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। বলা হচ্ছে— সমস্ত শ্রেণির পাঠ্যসূচি থেকে ইসলাম ধর্ম সম্পর্কিত সব বাদ দেওয়া হচ্ছে।  আপনাদের অনুরোধ করবো গুজবে কান দেবেন না। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে আমাদের অনেক দায়িত্বশীল হতে হবে।

উচ্চশিক্ষা প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, গ্র্যাজুয়েটদের যে প্রত্যাশা আর চাকরিদাতাদের যে প্রত্যাশা, এ দুয়ে বিস্তর ফরাক। শিক্ষার্থীদের সফট স্কিল বিশ্ববিদ্যালয়গুলো দিতে পারছে না এখনও। সে কারণে আমাদের শিক্ষার্থীরা খুব ভালো পড়াশোনা করছে, ডিগ্রি অর্জন করছে। কিন্তু আশপাশের দেশের শিক্ষার্থীদের তুলনায় পিছিয়ে পড়ছে। প্রতিবেশী অনেক দেশের শিক্ষার্থীরা এতো বেশি লেখাপড়া না করেও সফট স্কিল অর্জন করে বলে তাদের চাকরির ক্ষেত্রে অফার করা হচ্ছে। কাজেই আমাদের জন্য জরুরি কাজ হলো ইন্ডাস্ট্রিজ-অ্যাকাডেমিয়া লিংকেজ। কোনও কোনও বিশ্ববিদ্যালয় এটা শুরু করেছে। সবাইকেই করতে হবে। কর্ম জগতে কী প্রয়োজন সেটি জানতে হবে। তাহলে দক্ষ জনশক্তি তৈরি হবে।

মন্ত্রী বলেন, কমিউনিকেশন স্কিল, কোলাবরেশন স্কিল, প্রব্লেম সলভিং স্কিলসহ নানা রকমের স্কিল জানতে হবে। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরোমের গবেষণা বলছে— সেকেন্ডারি স্কুলে কোলাবরেটিং প্রব্লেম সলভিং শেখানো হলে তা বিশ্ব অর্থনীতিতে ২ দশমিক ৪৫ ট্রিলিয়ন ডলার যুক্ত করবে। আমরা মাধ্যমিক পর্যায় থেকে এটা শুরু করার চেষ্টা করছি। কিন্তু যারা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পার করে এসেছে তাদের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে এটা শেখাতে হবে।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমি খুব জ্ঞান অর্জন করলাম, দক্ষতা অর্জন করলাম। কিন্তু মূল্যবোধ যদি না থাকে; সততা, নিষ্ঠা, মানবিকতা, অসাম্প্রদায়িকতা, দেশপ্রেম যদি না থাকে তাহলে সেটা খুব ভালো করলাম না। এই কাজগুলো শিক্ষার অবিচ্ছেদ্য অংশ হতে হবে। যেভাবে দ্রুত বিশ্ব বদলে যাচ্ছে তাতে আজকের ডিগ্রি পাঁচ বছর পর আর না-ও লাগতে পারে। সে জন্য রি-স্কিল করতে হবে, আপ-স্কিল করতে হবে।

শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্টদের উদ্দেশে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা অর্থবহ করতে এবং এর সুফল সকল নাগরিকের কাছে পৌঁছাতে হবে। এজন্য শুধু সরকারকে নয়, সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে যেন ধর্মের নামে কারও অধিকার ভুলুণ্ঠিত না হয়।তিনি বলেন, মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, নারী নির্যাতন থেকে নিজেদের মুক্ত রাখবেন। সাম্প্রদায়িতকার বিষবাষ্প যেন হৃদয়কে আচ্ছন্ন না করে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর