রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৪:১৮ পূর্বাহ্ন

লোভ-লালসার ঊর্ধ্বে ছাত্রলীগকে আদর্শবান কর্মী গড়ে তোলার পরামর্শ প্রধানমন্ত্রীর

ভয়েসবাংলা প্রতিবেদক / ২০৮ বার
আপডেট : বুধবার, ৫ জানুয়ারী, ২০২২

ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের লোভ-লালসার ঊর্ধ্বে থেকে আদর্শবান কর্মী হিসেবে নিজেদের গড়ে তোলার পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, ছাত্র রাজনীতি থেকেই রাজনৈতিক নেতৃত্ব গড়ে ওঠে। কাজেই নিজেদের নেতৃত্ব হিসেবে গড়ে তুলতে গেলে সেভাবেই কাজ করতে হবে। খেয়াল রাখবে, লোভের বশবর্তী হয়ে পা পিছলে পড়ে যেও না।

বুধবার ছাত্রলীগের ৭৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।  প্রধানমন্ত্রী রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অংশ নেন।

ছাত্রলীগের সাংগঠনিক অভিভাবক আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‌‌রাজনৈতিক নেতা হিসেবে যারা নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে চাও, তাদের আদর্শ নিয়ে সততার সঙ্গে প্রগতির পথে এগিয়ে যেতে হবে। নিজেকে শক্ত করে সততার পথে থেকে এগিয়ে যাবে, সংগঠনকে শক্তিশালী করবে, জাতির পিতার আদর্শ নিয়ে কাজ করবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় কাজ করবে। সেভাবেই নেতৃত্ব গড়ে উঠবে।

ছাত্রলীগের প্রত্যেক নেতাকর্মীকে পড়াশোনার ওপর জোর দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ছাত্রলীগের মূলমন্ত্রই হচ্ছে শিক্ষা। প্রতিটি ছাত্রলীগ নেতাকর্মীকে প্রকৃত শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। এই শিক্ষা সেই শিক্ষা নয়, কোনও মতে পয়সা বানানোর শিক্ষা না, শিক্ষাটা অন্তর থেকে অনুধাবন করতে হবে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য। ছাত্রলীগের আরেকটি মূলমন্ত্র হচ্ছে শান্তি। কাজেই ছাত্রলীগকে সেটা মনে রাখতে হবে। সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ, দুর্নীতি এ সবকিছু থেকে দূরে থাকতে হবে। কখনও যেন কোনও ছাত্র বা যুব সমাজ এই সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, দুর্নীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত না হয়। অতিমারি করোনার প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘করোনা একটা শিক্ষা দিয়ে গেছে মানুষকে—ধন সম্পদ কোনও কিছু কাজে লাগে না। অর্থ সম্পদ কোনও কিছু কাজে লাগে না। মানুষকে যেমন হঠাৎ করে মরতে হয়, আবার সম্পদ বানালেও যে সেগুলো কোনও কাজেই লাগে না, করোনা কিন্তু সেই শিক্ষা দিয়ে গেছে সবাইকে। কাজেই অহেতুক অর্থের পেছনে না ছুটে মানুষের জন্য কাজ করা একজন রাজনৈতিক নেতার কাজ। সেটাই মাথায় রাখতে হবে।

উন্নত জাতি গঠনে শিক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‌একটা জাতিকে যদি দারিদ্র্যমুক্ত করতে হয়, শিক্ষা হচ্ছে সবচেয়ে বড় হাতিয়ার। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন—শিক্ষায় যে অর্থ ব্যয় সেটা হচ্ছে বিনিয়োগ। সেই অর্থটা কাজে লাগে। শিক্ষিত জাতি ছাড়া কখনও একটা উন্নত জাতি হওয়া সম্ভব না। শিক্ষার ওপর আমরা গুরুত্ব দিয়েছি। শিক্ষা বহুমুখী করা—সেই ব্যবস্থাটাও আমরা নিয়েছি।

অশিক্ষিত নেতৃত্ব একটি দেশকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায় মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘আমি কারও নাম বলবো না, একটু বলতে চাই শুধু—অল্প শিক্ষিত বা স্বশিক্ষিত বা অশিক্ষিত নেতৃত্ব একটা দেশকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়। আজকে সেই ধ্বংসস্তূপ থেকে (বাংলাদেশকে) উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত করেছি। শিক্ষিত তরুণদের চাকরির পেছনে না ছুটে উদ্যোক্তা হওয়ার আহ্বান জানিয়ে সরকার প্রধান বলেন, একজন শিক্ষিত ছেলেপেলে বেকার থাকতে পারে না। সঙ্গে সঙ্গে আমাদের যুব সমাজ, তরুণ প্রজন্ম তাদের আমরা বিভিন্নভাবে উৎসাহ দিচ্ছি নিজে চাকরির পেছনে ঘুরে না বেড়িয়ে নিজেদের উদ্যোক্তা হতে হবে। চাকরি দেওয়ার যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। তার জন্য যা যা সুযোগ আমরা তা সৃষ্টি করে দিয়েছি।

একটি মহল দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশের কিছু মানুষ সবসময় সেই দেশ সৃষ্টির পর থেকে আমি দেখি—সবসময় কোনও একটা প্রভু খুঁজে নিয়ে তাদের পদলেহন করতে ব্যস্ত থাকে। তাদের কোনও আত্মমর্যাদাবোধ নেই। তাদের নিজের প্রতি কোনও আত্মবিশ্বাস নেই। এদের দিয়ে দেশের মানুষের কল্যাণ হয় না। তারা তো দেশের মানুষের ভাগ্যের কথা চিন্তা করে না। কাজেই তারা ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত থাকে। কিন্তু নীতি-আদর্শ নিয়ে চললে, সৎ পথে থাকলে যেকোনও বাধা অতিক্রম করা যায়। সেটা প্রমাণ করেছি আমরা।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর