মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ০৪:০৭ পূর্বাহ্ন

লাল তীরের দেশে প্রথম ইন্টারন্যাশনাল সীড টেস্টিং অ্যাসোসিয়েশনের সনদ

ভয়েস বাংলা প্রতিবেদক / ৯ বার
আপডেট : শুক্রবার, ২৩ জুন, ২০২৩

বিশ্বের সর্বোচ্চ বীজের মাননিয়ন্ত্রক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল সীড টেস্টিং অ্যাসোসিয়েশনের স্বীকৃতি ও সনদ পেয়েছে লাল তীর সীড লিমিটেডের সহযোগী প্রতিষ্ঠান এমএনটি সীড টেস্টিং ল্যাবরেটরি। দেশের প্রথম কোন বীজ পরীক্ষাগার এ সনদ পেল।
শুক্রবার গাজীপুরের বাসনে লালতীর সীড লিমিটেডের প্রধান গবেষণা কেন্দ্রে এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। এ সময় লাল তীর সীড লিমিটেডের চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহবুব আনাম এবং জেনারেল ম্যানেজার ড. আব্দুর রশিদসহ কোম্পানির অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলন বলা হয়েছে, লাল তীরের এমএনটি বীজ পরীক্ষাগার বাংলাদেশের সরকারি ও বেসরকারি খাতে বীজের মান নির্ণয়কারী পরীক্ষাগারগুলোর মধ্যে প্রথম বিশ্বের সর্বোচ্চ বীজমান প্রত্যয়ন সংস্থার স্বীকৃতি ও সনদ পেয়েছে। এখন থেকে এ পরীক্ষাগারের জারিকৃত বীজের গুণমানের প্রত্যয়পত্র বিশ্বের সকল দেশের সরকার এবং বেসরকারী খাত কর্তৃক গ্রহণযোগ্য হবে।
১৯৯৫ সালে লাল তীর সীড লিমিটেড প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এটা বেসরকারি খাতে প্রথম গবেষণাভিত্তিক বীজ কোম্পানি। এ পর্যন্ত লাল তীর ৩৫টি বিভিন্ন ফসলের ১৯৯টি জাত উদ্ভাবন করেছে, যার মধ্যে ৮৭টি হাইব্রিড। পাশাপাশি দেশি জাত সংরক্ষণে এ পর্যন্ত লাল তীর বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে ও প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে বিভিন্ন ফসলের ১ লাখ ৩০ হাজার জার্মপ্লাজম সংগ্রহ করেছে।
লাল তীর সীড লিমিটেডের চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, আমাদের খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে গেলে হয় জমি বাড়াতে হবে না হয় উৎপাদন বাড়াতে হবে। কিন্তু আমাদের জমি বাড়ানো কোন সুযোগ নেই। সেজন্য সবাই উৎপাদনশীলতাকে গুরুত্ব দিচ্ছে, আমরাও সে কাজটি করছি। তিনি বলেন, দেশের সার্বিক উৎপাদনশীলতা বাড়াতে আমাদের ল্যবের এ স্বীকৃতি বড় প্রভাব ফেলবে। পাশাপাশি বিদেশে বীজ রপ্তানির ক্ষেত্রে নতুন দুয়ার উন্মোচন হবে। এটি দেশের বীজ উন্নয়ন ও আমাদের পরীক্ষাগারের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্বীকৃতি।
আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, এক সময়ে দেশে ফসল উৎপাদনের একটি বড় বাধা ছিল মানসম্পন্ন বীজের অভাব। স্থানীয় জার্মপ্লাজম ব্যবহার করে বিভিন্ন ফসলের হাইব্রিড ও উন্মুক্ত পরাগায়িত উচ্চফলনশীল জাত উদ্ভাবন ও উন্নয়ন করাই ছিল আমাদের এ প্রতিষ্ঠানের প্রধান লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। এ লক্ষ্য অর্জনে শুরু থেকেই গবেষণা ও প্রজননের মাধ্যমে জাত উন্নয়নের কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। দেশের বিভিন্ন স্বীকৃত পর এখন আমাদের বিশ্বমানের স্বীকৃতিগুলো আসছে। লাল তীরের আরেকটি উদ্দেশ্য ছিল দেশীয় শাকসবজির জাত উন্নয়নের সাথে সাথে স্থানীয়ভাবে উদ্ভাবিত উন্নত ফসলের বীজ দেশে উৎপাদন করা এবং কৃষকের চাহিদা অনুযায়ী বীজ সরবরাহ করা।
ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহবুব আনাম বলেন, বাংলাদেশে উৎপাদিত লাল তীরের বীজ দেশের বাইরেও যেমন: মধ্যপ্রাচ্য, দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, ইউরোপ এবং উত্তর আমেরিকায় রপ্তানি করা হচ্ছে। ২০১৫ সালে ইন্টারন্যাশনাল সীড টেস্টিং অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য পদ অর্জন করার পর থেকে আমাদের পরীক্ষাগার তাদের সব পদ্ধতি-প্রক্রিয়া অনুসরণ করে বীজের গুণগতমান পরীক্ষা করে আসছে। এই সংস্থা ২০১৫ সাল থেকে দীর্ঘ সাত বছর আমাদের কার্য-প্রক্রিয়া ও পদ্ধতি যাচাই-বাছাই ও বহুমুখী পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর ২০২৩ সালের মে মাসে বীজ পরীক্ষাগারকে বিশ্ব মানসম্পন্ন হিসেবে স্বীকৃতি সনদ অনুমোদন করেছে।
মাহবুব আনাম বলেন, ইতিপূর্বে আমাদের পরীক্ষাগার বাংলাদেশ সরকারের শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ বাংলাদেশ অ্যাক্রিডিটেশন বোর্ড কর্তৃক স্বীকৃতি সনদ অর্জন করেছে। অছাড়া বিশ্ব মানদণ্ডে গুণমানসম্পন্ন ব্যবস্থাপনার জন্য আন্তর্জাতিক সংস্থা (ISO) কর্তৃক প্রত্যয়িত (ISO 9001: 2015)। তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত বিশ্বের ৮৩টি দেশের ১৩০টি ল্যাবরেটরি ইন্টারন্যাশনাল সীড টেস্টিং অ্যাসোসিয়েশনের স্বীকৃত এবং বীজের মান নির্ণয় ও সনদ দেওয়ার জন্য অনুমোদিত। এসব পরীক্ষাগার আন্তর্জাতিক বীজ বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বীজের গুণমানের সনদপত্র কমলা এবং নীল) ইস্যু করার জন্য ক্ষমতাপ্রাপ্ত। এই সনদ বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর