রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৩:২৯ পূর্বাহ্ন

রুশ জ্বালানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপে বিভক্ত ইইউ

ভয়েসবাংলা প্রতিবেদক / ১৯৩ বার
আপডেট : বৃহস্পতিবার, ৭ এপ্রিল, ২০২২

ইউক্রেনীয় শহর বুচাতে রুশ হত্যাযজ্ঞের খবর সামনে আসার পর বিশ্বের ধনী গণতান্ত্রিক দেশগুলো রাশিয়ার বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞা জারি করতে শুরু করেছে। এই অবস্থায় স্পষ্ট হচ্ছে যে, রাশিয়াকে শায়েস্তা করার এই সহজ পন্থা অবলম্বন করতে করতে পশ্চিমাদের মধ্যে ক্লান্তি চলে এসেছে। এমনকি মিত্রদের মধ্যে পরের পদক্ষেপ কী হবে তা নিয়ে বিভাজন দেখা দিয়েছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) রাশিয়ার জ্বালানি খাতে প্রথম নিষেধাজ্ঞা জারি করার প্রস্তাব করেছে। এই প্রস্তাবে রাশিয়ার কয়লা আমদানি নিষিদ্ধ করা হতে পারে। কিন্তু এই বিষয়ে ইইউ দেশগুলোর মধ্যে বিভক্তি রয়েছে। কারণ রাশিয়ার তেল ও গ্যাস তাদের অর্থনীতির জন্য প্রয়োজনীয়। রাশিয়ার শীর্ষ ঋণদাতা এসবার ব্যাংক, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ও রুশ সরকারের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও জি-৭ জোটভুক্ত দেশগুলো। এর মাধ্যমে তাদেরকে মার্কিন ডলারভিত্তিক আর্থিক ব্যবস্থা থেকে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র মার্কিনিদের রাশিয়ায় বিনিয়োগ নিষিদ্ধ করেছে এবং মস্কোকে মার্কিন ব্যাংকে থাকা অর্থ থেকে রাষ্ট্রীয় ঋণ পরিশোধের সুযোগ বন্ধ করেছে।যদিও বুধবার গত ছয় সপ্তাহের মধ্যে নিষেধাজ্ঞায় থাকা রুবলের দাম সর্বোচ্চ অবস্থায় রয়েছে। মার্কিন অর্থমন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, এই নিষেধাজ্ঞাগুলো ১৯৮০ দশকের সোভিয়েত আমলের কঠোর বদ্ধ অর্থনীতিতে রাশিয়াকে ফিরিয়ে নিচ্ছে। কিন্তু মার্কিন নিষেধাজ্ঞার ফাঁক থাকায় জ্বালানি রফতানি থেকে রাশিয়ার রাজস্ব আয় অব্যাহত ছিল। যা ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার তহবিল যোগাবে। মার্কিন অর্থমন্ত্রী জ্যানেট ইয়েলেন দেশটির আইনপ্রণেতাদের বলেছেন, রাশিয়ার তেল ও গ্যাসের ওপর নির্ভরশীলতা থাকার কারণে রুশ জ্বালানিতে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ এখনও সম্ভব না।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের ব্যবহৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের প্রায় ৪০ শতাংশ সরবরাহ করে রাশিয়া। আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থা (আইইএ)-এর তথ্য অনুসারে, যার মূল্য প্রতিদিন ৪০০ মিলিয়ন ডলার। ইইউ’র এক-তৃতীয়াংশ তেল আসে রাশিয়া থেকে, যা প্রতিদিন ৭০০ মিলিয়ন ডলার। নিউ ইয়র্কের থিংক ট্যাংক কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশন্স-এর আন্তর্জাতিক অর্থনীতি পরিচালক বেন স্টেইল বলেন, আমরা এমন পর্যায়ে পৌঁছে গেছি যেখানে আমাদেরও কিছুটা ভুগতে হচ্ছে। প্রথম দিকের নিষেধাজ্ঞা এমনভাবে জারি করা হয়েছিল যাতে আমাদের ওপর প্রভাব না পড়ে।

রুশ জ্বালানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপে বিভক্ত পশ্চিমারা

রুশ তেলে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে ইউরোপে বিভাজনের বিষয়টি প্রকাশ্যে এসেছে এই সপ্তাহে। শনিবার লিথুয়ানিয়া ঘোষণা দেয় তারা দেশীয় চাহিদা মেটাতে রুশ গ্যাস আমদানি বন্ধ করবে। বৃহস্পতিবার রুশ জ্বালানি আমদানি বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে এস্তোনিয়া। আর অস্ট্রিয়ার অর্থমন্ত্রী ম্যাগনাস ব্রানার রুশ তেল ও গ্যাসে নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিরোধিতা করেছেন। তিনি বলেছেন, এই নিষেধাজ্ঞায় রাশিয়ার চেয়ে তাদের দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে বেশি।

বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান বলেন, রাশিয়া চাইলে তার দেশ রুশ মুদ্রা রুবলে জ্বালানির মূল্য পরিশোধ করবে। এর আগে হাঙ্গেরির পররাষ্ট্রমন্ত্রী পিটার সিজ্জার্তো বলেন, রাশিয়ার সঙ্গে তার দেশের গ্যাস সরবরাহ চুক্তিতে ইইউ কর্তৃপক্ষের কোনও ভূমিকা নেই। তিনি জানান, এই বিষয়ে রাশিয়ার গ্যাজপ্রম এবং হাঙ্গেরির রাষ্ট্রায়ত্ত্ব প্রতিষ্ঠান এমভিএম এর মধ্যে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি রয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর