রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৫:১৪ পূর্বাহ্ন

রাশিয়া থেকে তেল কিনতে চুক্তি করতে যাচ্ছে তালেবান

ভয়েসবাংলা প্রতিবেদক / ৪০ বার
আপডেট : মঙ্গলবার, ৩০ আগস্ট, ২০২২

রাশিয়ার সাথে চুক্তি হলে বিদেশিদের সঙ্গে তালেবানের ক্রমবর্ধমান বাণিজ্যিক লেনদেনের বিষয়টিই স্পষ্ট হবে।

ইউক্রেইনে চলমান যুদ্ধের মধ্যে রাশিয়া থেকে গ্যাসোলিন ও বেনজিন কেনার জন্য চুক্তির শর্ত নিয়ে মস্কোতে চূড়ান্ত আলোচনা করছে তালেবানের প্রতিনিধি দল।

আফগানিস্তানের অর্থ মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হাবিবুর রহমান হাবিব রয়টার্সকে বলেছেন, আফগান বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল মস্কোতে অবস্থান করছে এবং গম, গ্যাস ও তেল সরবরাহের চুক্তি চূড়ান্তের জন্য তারা কাজ করছেন। তারা রাশিয়ার কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করছেন। চুক্তি হলে বিস্তারিত জানানো হবে।

আফগান বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রীর কার্যালয়ের একটি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, এ মাসে আফগান মন্ত্রী পর্যায়ের প্রতিনিধিদল রাশিয়া সফরের পর থেকে তালেবানের বাণিজ্য ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা চুক্তির কাজ সারতে মস্কোতে অবস্থান করছেন। আমরা চুক্তির ভাষা নিয়ে কাজ করছি। গ্যাসোলিন ও বেনজিনের বিষয়ে আমরা প্রায় একমত হয়েছি। চুক্তির কাজ শিগগিরই শেষ হওয়ার আশা করছেন তালেবান কর্মকর্তারা। তবে রাশিয়ার পররাষ্ট্র ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের কোনো মুখপাত্র রয়টার্সের অনুরোধে মন্তব্য করতে রাজি হননি।

তালেবানের ভারপ্রাপ্ত বাণিজ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনার জন্য অগাস্টের মাঝামাঝি সময়ে মস্কো সফর করেন। ওই সফরের পরই দুই দেশের মধ্যে চূড়ান্ত আলোচনার খবর জানাল তালেবান কর্তৃপক্ষ। দুই দশকের আফগানিস্তান মিশন শেষে গত বছরের অগাস্টে সেখান থেকে সম্পূর্ণভাবে সেনা প্রত্যাহার করে যুক্তরাষ্ট্রসহ নেটোভুক্ত দেশগুলো; এরপরই প্রেসিডেন্ট আশরাফ গানির সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতায় বসে তালেবান। ওই বছরের ১৫ অগাস্ট কাবুল দখলের কয়েক দিনের মধ্যে সরকার গঠন করে সশস্ত্র দলটি, যারা এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পায়নি।

তবে রাশিয়ার চুক্তি সম্পন্ন হলে বিদেশি দেশগুলোর সঙ্গে তালেবানের ক্রমবর্ধমান বাণিজ্যিক লেনদেনের বিষয়টিই স্পষ্ট হবে। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেইনে হামলার পর থেকে রাশিয়ার ওপর নানা ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের পশ্চিমা মিত্ররা। অন্য দেশগুলোকেও রাশিয়ার তেল ব্যাবহার কমিয়ে আনার কথা বলছে যুক্তরাষ্ট্র। তারা বলছে, রাশিয়ার তেলের ব্যবহার কমানোর লক্ষ্য রুশ সরকারের রাজস্ব কমানো, যাতে তারা ওই অর্থ ইউক্রেইনে আগ্রাসনের কাজে লাগাতে না পারে।

তালেবান নেতৃত্বাধীন আফগানিস্তান এবং রাশিয়া উভয়েই যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সরকারগুলোর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞায় রয়েছে। নিষেধাজ্ঞার কারণে আফগানিস্তানের ব্যাংকগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অধিকাংশ আন্তর্জাতিক ব্যাংক আফগান ব্যাংকগুলোর সঙ্গে লেনদেন করতে অনিচ্ছুক।

তালেবানের সরকারের একটি সূত্র রয়টার্সকে বলেছে, রাশিয়ার কাছ থেকে জ্বালানি আমদানি করলে কীভাবে অর্থ পরিশোধ করা হবে সে ব্যাপারে তাদের একটি পরিকল্পনা আছে। তবে সরকারি ব্যাংকগুলো ব্যবহার করা হবে কিনা, সে ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু তারা জানায়নি।

তালেবান সরকার ক্ষমতায় আসার পর আফগানিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সম্পদ অবরুদ্ধ করে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। ব্যাংক খাতে নিষেধাজ্ঞা এবং তালেবানের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি না থাকার পরও কিছু দেশ কাবুলের সঙ্গে ব্যবসা করছে। এর ফলে অভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যেও বিশ্ব বাজারে প্রবেশ করার সুযোগ পাচ্ছে তালেবান।

পাকিস্তান প্রতিদিন হাজার হাজার টন কয়লা আমদানি করেছে আফগানিস্তান থেকে। উভয় দেশের মধ্যে বেসরকারি বাণিজ্যিক লেনদেন হচ্ছে। কয়লা রপ্তানি করে মিলিয়ন ডলারের শুল্ক পাচ্ছে তালেবান প্রশাসন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর