রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০২:০০ পূর্বাহ্ন

রাতভর জেরা পার্থ-অর্পিতাকে, বেরিয়ে আসছে নতুন তথ্য

ভয়েসবাংলা প্রতিবেদক / ৫৬ বার
আপডেট : শনিবার, ৩০ জুলাই, ২০২২

শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় নতুন তথ্য বেরিয়ে এলো। সদ্য বরখাস্ত পশ্চিমবঙ্গের শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ অর্পিতার পাসপোর্টে একাধিক দেশের ভিসা দেখা গেছে। ফলে বিদেশে অর্থ পাচার হয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা করছে তদন্তকারীরা।

সূত্রের খবর, শুক্রবার (২৯ জুলাই) জোকা ইএসআই হাসপাতলে প্রবেশের সময় থেকে কান্নাকাটি শুরু করেছিলেন অর্পিতা। রাতেও একই অবস্থায় ছিলেন। এরমধ্যেও তাকে জেরা করেন ইডি’র কর্মকর্তারা।

শনিবার (৩০ জুলাই) সকাল ৮টা থেকে থেকেই দুর্নীতি মালায় গ্রেফতার পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও অর্পিতা মুখোপাধ্যাকে সিজিও কমপ্লেক্সে জেরা শুরু করেন ইডির কর্মকর্তারা। নগদ অর্থ উদ্ধারের পাশাপাশি একাধিক ব্যাংক অ্যাকাউন্টে দু’জনের নামে রুপি রয়েছে, এমন তথ্য পেয়েছেন তদন্তকারীরা। এরই ভিত্তিতে এদিন জেরা করা হয়েছে তাদের।

আরেকটি সূত্রে জানা গেছে, এই মামলায় নতুন একটি তথ্য পেয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তারা। অর্পিতা পাসপোর্টের ভিসা দেখে জানা গেছে, দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে প্রায়ই যেতেন তিনি। বিশেষ করে বাংলাদেশ, নেপাল, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, মালেশিয়ায় একাধিকবার ভ্রমণে যান অর্পিতা। অর্পিতার কেন বারবার এই দেশগুলোয় যেতেন? তার সদুত্তর পাওয়া যায়নি। কেউ তাকে এই বিদেশ যাওয়ার রুপি দিতেন? নাকি নিজের খরচে তিনি যেতেন, এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে ইডি। অর্পিতার প্রায় সময় বিদেশ যাত্রার পেছনে অন্য কোনও উদ্দেশ্য থাকতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। বিদেশ যাত্রার তদন্তের স্বার্থে আগামী ৩ আগস্টের পর আদালতে তাকে আবারও হেফাজতে নিতে পারে ইডি।

ইডি সূত্রে খবর, অর্পিতা ইতিমধ্যে দাবি করেছেন, তার ফ্ল্যাট থেকে প্রায় ৫০ কোটি টাকা উদ্ধার হলেও সে টাকা তার নয়। প্রশ্ন উঠছে অর্পিতা কী কারও কালো টাকা সাদা করার চেষ্টা করছিলেন? সূত্রে খবর, প্রাথমিকভাবে অর্পিতা বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন, কোথাও তিনি পার্থ চট্টোপাধ্যায় নামে প্রভাবশালী রাজনীতিকের হাতের পুতুল ছিলেন। কিন্তু এমটা মানতে নারাজ তদন্তকারীরা। তাদের প্রশ্ন,‘ শুধু টাকার জন্যই কী অর্পিতা পার্থর ঘনিষ্ঠ হয়েছিলেন?

এদিকে তদন্তের স্বার্থে বিদেশে থাকা পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামাই কল্যাণময় ভট্টাচার্যের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন সংশ্লিষ্টরা। তাকে দ্রুত কলকাতায় ফিরতে নির্দেশ দিয়েছে ইডি। অর্পিতার বেলঘরিয়ার ঠিকানায় রেজিস্ট্রেশন করা একটি টেক্সটাইল কোম্পানির হদিস পাওয়া গেছে। এই প্রতিষ্ঠানের মধ্য দিয়ে কালো টাকা সাদা করা হতো বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

পার্থও নাকতলার বাড়িতে প্রায়ই যেতেন বলে জানিয়েছেন অর্পিতার গাড়ির চালক প্রণব ভট্টাচার্য। পার্থই নাকি তাকে অর্পিতার গাড়ির চালক হিসেবে ঠিক করে দেন। তিনি বলেন, অর্পিতার গ্যারেজে বিলাসবহুল সিটি, মার্সিডিজ বেঞ্জ, মিনি কুপার, মাহিন্দ্রা আলটুরাস গাড়ি ছিল। কিন্তু তিনমাস ধরে গাড়িগুলো দেখা যাচ্ছে না। পার্থর বেহালার ম্যানটন অফিস যেতেন তিনি। একবার বোলপুরেও গিয়েছিলেন অর্পিতা তার মাকে নিয়ে। তিনি বলেন, টাকার কথা তিনি জানতেন না। পার্থদার কর্মীরা আসতেন। খাবার দাবার পৌঁছে দিতেন।পার্থদা কমই আসতেন। যাওয়ার পথে রাতের দিকে ঘুরে যেতেন। কল্যাণ মাঝে মাঝে আসতো। পার্লারের দেখাশোনা করতো। যা জানি ইডির কাছে সত্য বলবো।

এদিন বিকেলে আবারও ইডির কর্মকর্তারা অর্পিতার হরিদেবপুরের ডায়ম-সিটির বিলাসবহুল বাসায় যান। আবাসনের সিকিউরিটি রেজিস্ট্রার খাতা ও সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখেন। অর্পিতার কাছে কারা আসতেন আবাসনে, কাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন তিনি? এসব খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর