শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০৯:৫৮ অপরাহ্ন

যোগাযোগ ব্যবস্থায় সূতিকাগার হবে পদ্মা সেতু: প্রধানমন্ত্রী

ভয়েসবাংলা প্রতিবেদক / ৬৮ বার
আপডেট : শুক্রবার, ২৪ জুন, ২০২২

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘পায়রা সমুদ্রবন্দর, বৃহৎ নদীগুলোর ওপর নির্মিত সেতু, রামপাল ও পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ মোংলা সমুদ্রবন্দরের পূর্ণ ক্ষমতা ব্যবহারে পদ্মা সেতু যোগাযোগ ব্যবস্থায় সূতিকাগার হিসেবে কাজ করবে। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের এ মাহেন্দ্রক্ষণে দেশবাসীকেও আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান প্রধানমন্ত্রী।

স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে শুক্রবার (২৪ জুন) দেওয়া এক বাণীতে তিনি এ কথা বলেন। আগামীকাল ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের দিনকে ‘এক গৌরবোজ্জ্বল ঐতিহাসিক দিন’ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে বলেন, চ্যালেঞ্জিং পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নে নিয়োজিত সর্বস্তরের দেশি-বিদেশি প্রকৌশলী, পরামর্শক, কর্মকর্তা-কর্মচারী, নিরাপত্তা তদারকিতে নিয়োজিত সেনাবাহিনী ও নির্মাণ শ্রমিকসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে তাদের অবদান ও অক্লান্ত পরিশ্রমের জন্য অভিবাদন জানাই। সেতুর দুই প্রান্তের জনগণ জমি প্রদানের মাধ্যমে এবং নানাভাবে প্রকল্প বাস্তবায়নে সহায়তা করায় তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ এনে বিশ্বব্যাংকের করা মামলার প্রসঙ্গ টেনে শেখ হাসিনা বলেন, ‘কানাডার আদালত বিশ্বব্যাংকের উত্থাপিত সকল অভিযোগ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন বলে রায় দেয়। সকল দুর্নীতির অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হয়। আমরা বিশ্বব্যাংকের ঋণ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি। বাংলাদেশ নিজস্ব অর্থায়নে সেতু নির্মাণের ঘোষণা দিলে জনগণের কাছ থেকে বিপুল সমর্থন পাই।’

জনতার শক্তি হৃদয়ে ধারণ করে সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ সম্পন্ন করেছেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। দুর্নীতিমুক্ত বীরের জাতি হিসেবে বাঙালি নিজেদের বিশ্বের বুকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণে বজ্রকণ্ঠে উচ্চারিত- ‘সাত কোটি মানুষকে দাবায়ে রাখতে পারবা না’- এই চিরপ্রেরণার বাণীতে উজ্জীবিত হয়ে আমরা প্রমাণ করেছি আমাদের নিজস্ব সক্ষমতা।’’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পদ্মা সেতু নির্মাণের ফলে রাজধানীর সঙ্গে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার নিরবচ্ছিন্ন, সাশ্রয়ী ও দ্রুত যোগাযোগ প্রতিষ্ঠিত হবে। বিপুল সম্ভাবনাময় এই অঞ্চলের বহুমুখী উন্নয়নে এই সেতুর গুরুত্ব অপরিসীম। বিশেষ করে শিল্পায়ন ও পর্যটন শিল্পে অগ্রসর এ অঞ্চলের উন্নয়নে নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে। টুঙ্গীপাড়াস্থ জাতির পিতার সমাধি সৌধ, সুন্দরবন এবং কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতসহ নানা প্রত্নতাত্ত্বিক ও দর্শনীয় স্থানসমূহে পর্যটকের আগমন বৃদ্ধি পাবে। নদী বিধৌত উপকূলীয় অঞ্চলের কৃষি ও মৎস্য সম্পদ আহরণ এবং দেশব্যাপী দ্রুত বাজারজাতকরণে পদ্মা সেতু বিশেষ ভূমিকা পালন করবে।’

‘পদ্মা সেতু যোগাযোগ ব্যবস্থায় সূতিকাগার হিসেবে কাজ করবে’ বলেও উল্লেখ করেন সরকার প্রধান। তিনি বলেন, ‘এই অঞ্চলে অবস্থিত গুরুত্বপূর্ণ বেনাপোল, ভোমরা, দর্শনা প্রভৃতি স্থলবন্দরের মাধ্যমে আন্তদেশীয় বাণিজ্য বৃদ্ধি পাবে। এ সেতুর মাধ্যমে দুই প্রান্তে বিদ্যুৎ, গ্যাস, অপটিক্যাল ফাইবারসহ পরিষেবাসমূহের সংযোগ স্থাপিত হবে। পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের ফলে সার্বিকভাবে দেশের উৎপাদন ১ দশমিক ২৩ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে এবং প্রতি বছর ০ দশমিক ৮৪ শতাংশ হারে দারিদ্র্য নিরসনের মাধ্যমে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে এ সেতু অনন্য অবদান রাখবে।’

দেশপ্রেমিক জনগণের আস্থা ও সমর্থনের ফলেই উন্নয়নের এ নতুন অধ্যায় উন্মোচিত হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আগামী দিনেও গণমানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা ও স্বপ্ন পূরণে আমরা আন্তরিকভাবে কাজ করে যাবো। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও উন্নত-সমৃদ্ধ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আজীবন লালিত স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সক্ষম হবো, ইনশাআল্লাহ। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর