শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ১১:৫৭ অপরাহ্ন

যেভাবে গ্রেফতার করা হয় চেয়ারম্যান বাবুকে

ভয়েস বাংলা প্রতিবেদক / ১৬ বার
আপডেট : শনিবার, ১৭ জুন, ২০২৩

ভোররাতে চিৎকার চেঁচামেচি শুনে ঘুম ভেঙে যায় ইউপি সদস্য লুৎফর রহমানের। বাড়ির পাশে প্রতিবেশী মমতাজ আলীর বাড়ির চারপাশে র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও স্থানীয়দের শোরগোল। কাছে গিয়ে জানতে পারেন, ওই বাড়ি থেকে তিনজনকে আটক করেছে র‌্যাব। তাদের একজন জামালপুরের বকশীগঞ্জের সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিম হত্যার মূল আসামি ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবু। তবে অন্য দুজনের বিষয়ে জানতে পারেননি। কেউ কোনও কথাই বলছেন না। সবাই ভীতসন্ত্রস্ত। বাড়িটির চারপাশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সতর্ক সশস্ত্র পাহারা।
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার চিলাহাটি ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের চরতিস্তাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা লুৎফর রহমান এভাবেই চেয়ারম্যান বাবুকে গ্রেফতারের ঘটনা বর্ণনা করছিলেন। তিনি জানান, শনিবার (১৭ জুন) ভোর ৪টা থেকে ৫টার দিকে মমতাজ আলীর বাড়ি ঘেরাও করেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। একপর্যায়ে তারা ওই বাড়ি থেকে ইউপি চেয়ারম্যান বাবু এবং তার দুই সহযোগীকে আটক করেন।
এ বিষয়ে দেবীগঞ্জ উপজেলার চিলাহাটি ইউপি চেয়ারম্যান হারুন উর রশিদ ও সদস্য লুৎফর রহমান জানান, নীলফামারী র‌্যাব-১৩-এর সহযোগিতায় ঢাকা থেকে র‌্যাবের ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের সদস্যরা এই অভিযান পরিচালনা করেন। ওই চেয়ারম্যান বাবুর দূর সম্পর্কের চাচা হন স্থানীয় মমতাজ আলী। তার বাড়ি থেকেই বাবুকে আটক করা হয়। এ সময় তার সঙ্গে আসা আরও দুই ব্যক্তিকেও আটক করে র‌্যাব।
স্থানীয় বাসিন্দা মিন্টু প্রধান বলেন, ভোররাত থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত মমতাজ আলীর বাসায় অভিযান চালায় র‌্যাব। এ সময় পুরো এলাকা থমথমে ছিল। অভিযানের খবর শুনে স্থানীয় লোকজন ছুটে আসেন।
দেবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জামাল হোসেন বলেন, র‌্যাব এই অভিযানের বিষয়ে আমাদের সঙ্গে কোনও আলোচনা করেনি। তবে আমরা স্থানীয়ভাবে শুনেছি, র‌্যাব এসে চেয়ারম্যান বাবুসহ তিন জনকে আটক করেছে। আটকের পর র‌্যাবের টিম তাদের নিয়ে ঢাকায় রওনা দিয়েছে।
পঞ্চগড়ের পুলিশ সুপার (এসপি) এসএম সিরাজুল হুদা বলেন, জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার সাধুরপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুসহ তিন জনকে র‌্যাব আটক করেছে এ বিষয়টি আমরা নিশ্চিত হয়েছি। র‌্যাব এ বিষয়ে আমাদের সঙ্গে কোনও আলোচনা করেনি এবং সহযোগিতাও চায়নি। সম্ভবত র‌্যাব ঢাকায় আনুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টি জানাবে।
স্থানীয়রা জানান, পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় জামালপুর অঞ্চলের মানুষ বসবাস করেন। এই সুবাদেই চেয়ারম্যান বাবু তার দূর সম্পর্কের চাচা মমতাজ আলীর বাসায় আশ্রয় নেন। দেবীগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে তারা ভারতে আশ্রয় নিতে চেয়েছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত ১৪ জুন রাতে পেশাগত দায়িত্ব পালন শেষে বাড়ি ফেরার পথে জামালপুরের বকশীগঞ্জ বাজারের পাটহাটি এলাকায় নাদিমের ওপর হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার বেলা ৩টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
নিহত সাংবাদিক নাদিম বাংলানিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের জামালপুর প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত ছিলেন। নাদিমের স্ত্রী মনিরা বেগম অভিযোগ করেন, সংবাদ প্রকাশের জেরে সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুর লোকজন নাদিমের ওপর হামলা চালায়।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর