শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ১০:২০ অপরাহ্ন

যা ইচ্ছে তাই করবেন, সেটি মেনে নেওয়া যায় না: তদন্ত কর্মকর্তাকে হাইকোর্ট

আদালত প্রতিবেদক / ৮৫ বার
আপডেট : রবিবার, ৩০ জানুয়ারী, ২০২২

রাজশাহীর পুটিয়ায় শ্রমিক নেতা নুরুল ইসলাম হত্যা মামলায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) তদন্ত কর্মকর্তা মো. শামীম আক্তারের লিখিত ব্যাখ্যায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছে হাইকোর্ট। রবিবার (৩০ জানুয়ারি) শুনানিকালে তাকে উদ্দেশ করে আদালত বলেছে, ‘৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে এ দেশ স্বাধীন হয়েছে। আপনারা (তদন্ত কর্মকর্তা) যা ইচ্ছে তাই করবেন, সেটি মেনে নেওয়া যায় না। আপনাকে হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী তদন্ত সম্পন্ন করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই নির্দেশনা প্রতিপালন করেননি।’

তদন্ত কর্মকর্তা মো. শামীম আক্তারকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি না দিয়ে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে আবারও লিখিত ব্যাখ্যা দাখিলের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। তলব আদেশে তদন্ত কর্মকর্তা ব্যাখ্যা নিয়ে হাজির হওয়ার পর রবিবার (৩০ জানুয়ারি) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. সেলিমের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেয়।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবু ইয়াহিয়া দুলাল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মিজানুর রহমান। তদন্ত কর্মকর্তার পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মো. আসাদুজ্জামান।

হাইকোর্টের পূর্ব নির্দেশনা অনুযায়ী আজ ব্যাখ্যাসহ হাজিরা দেন পিবিআই কর্মকর্তা মো. শামীম আক্তার। হাইকোর্টে দাখিল করা ব্যাখ্যায় তিনি বলেছেন, মামলার বাদীর কাছে প্রথম এজাহার চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি তা দেননি। এছাড়া ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরামর্শ করেই তদন্ত সম্পন্ন করে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। আদালত তদন্ত কর্মকর্তার ব্যাখ্যায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন এবং তাকে পুনরায় ব্যাখ্যা দাখিলের নির্দেশ দেন।

পুঠিয়ার সড়ক ও পরিবহন মটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি ছিলেন নুরুল ইসলাম। নির্বাচনের ফলকে কেন্দ্র করে তাকে ২০১৯ সালের ১০ জুন হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় তার মেয়ে নিগার সুলতানা আট জনের নাম উল্লেখ করে পুঠিয়া থানায় এজাহার দাখিল করেন। কিন্তু সেটি লিপিবদ্ধ না করে ছিড়ে ফেলে দেন থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাকিল উদ্দিন আহমেদ। পরে সাদা কাগজে বাদীর সই রেখে নিজেরাই একটি এজাহার সৃজন করে তা থানায় লিপিবদ্ধ করেন তিনি। পরবর্তীকালে হাইকোর্টের নির্দেশে গঠিত বিচারিক অনুসন্ধান কমিটির তদন্তে এটি বেরিয়ে আসে।

২০১৯ সালের ১ ডিসেম্বর হাইকোর্ট মামলাটি তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দেয়। রায়ে হাইকোর্ট বলে, আদালত প্রত্যাশা করে পিবিআই প্রধান ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার মামলাটি তদন্ত তদারকিতে বিশেষ ভূমিকা রাখবেন। বর্তমান তদন্তকারী কর্মকর্তা/সংস্থাকে অবিলম্বে কেস ডকেট পিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তরের নির্দেশ দেওয়া হলো। পিবিআইকে তদন্তকালে সংবাদদাতার মূল এজাহারের বর্ণনা, রাজশাহীর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক অনুসন্ধান রিপোর্ট ও অনুসন্ধান কার্যক্রমে সাক্ষীদের সাক্ষ্য বিবেচনায় গ্রহণের জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো। কিন্তু হাইকোর্টের এই নির্দেশনা না মেনেই তদন্ত সম্পন্ন করেন পিবিআইয়ের তদন্ত কর্মকর্তা শামীম আক্তার।

এদিকে একই মামলার আসামি আবুল কালাম ওরফে আবু জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন। তার জামিন আবেদনের শুনানিকালে আদালতের নির্দেশনা না মেনে তদন্ত করার বিষয়টি হাইকোর্টের নজরে আসে। এরপরই তদন্ত কর্মকর্তাকে তলবের পাশাপাশি এ বিষয়ে তার ব্যাখ্যা দাখিল করতে বলা হয়েছিল।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর