রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০২:০৯ পূর্বাহ্ন

মাধ্যমিক থেকে উচ্চশিক্ষা স্তর চালু রাখার কথা ভাবছে সরকার

ভয়েসবাংলা প্রতিবেদক / ১০৭ বার
আপডেট : শনিবার, ৮ জানুয়ারী, ২০২২

করোনা সংক্রমণ বেড়ে গেলেও আপাতত মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক এবং উচ্চশিক্ষা স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধের চিন্তা না করে চালু রাখার কথা ভাবছে সরকার। এজন্য টিকা কার্যক্রমে জোর দেওয়া হচ্ছে। অর্থাৎ ১২ বছরের বেশি বয়সী শিক্ষার্থীদের টিকা দিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের স্কুল-কলেজ-মাদ্রারাসায় পাঠদান সচল রাখার কথাও ভাবছে সরকার। আর উচ্চ শিক্ষা স্তরে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীদের টিকা কার্যক্রম অনেকটা এগিয়ে নেওয়ায় সেগুলো এখনই বন্ধের চিন্তায় রাখা হয়নি।

এ বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীরা ১২ বছরের নিচে, তারা টিকার যোগ্য নয়। আমাদের শিক্ষকদের টিকা দেওয়া হয়েছে। যদি ১২ বছরের নিচের শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয় তখন সেই সিদ্ধান্ত মানবো। করোনা সংক্রমণ বেড়ে গেলে এবং টিকার সিদ্ধান্ত না পেলে কি প্রাথমিক স্তরের প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হবে এমন প্রশ্নের জবাবে গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে আমরা সেটাই করবো।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, করোনা সংক্রমণ বেড়ে গেলে যারা টিকা নেওয়ার পর্যায়ে পড়ে না সেই ১২ বছর বয়সীদের নিচে অর্থাৎ প্রাথমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে হয়তো শুরুতে বন্ধ করা হবে। গত কয়েক দিন ধরে করোনা সংক্রমণ বেড়েছে, যদিও গত দু’বছর মার্চ-এপ্রিলে সংক্রমণের হার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু রাখার বাধা হয়ে দাঁড়ায়।

শনিবার শনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ১১৬ জন, আর মৃত্যু হয়েছে একজনের। এদিন শনাক্তের হার ৫ দশমিক ৭৯ শতাংশ। নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন দেখা যাওয়ায় প্রতিদিন শনাক্তের হার বাড়ায় করণীয় নিয়ে রোববার (৯ জানুয়ারি) করোনা বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সঙ্গে বৈঠক করবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি শনিবার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, রোববার পরামর্শক কমিটির সঙ্গে মিটিং আছে। তাদের সঙ্গে কথা বলে পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবো। এর আগে শুক্রবার জাতীয় পরামর্শের মধ্যে শিক্ষার্থীসহ সবাইকে দ্রুত টিকার আওতায় নিয়ে আসতে পরামর্শ দেয়।

শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, আমাদের ধারণা মার্চ-এপ্রিলে সংক্রমণ বাড়ে। কিন্তু যে পরিমাণে বাড়তে শুরু করেছে তাতে পরিকল্পনায় কিছুটা সমন্বয় দরকার হবে। আমরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করতে চাই না। আমরা চাই আমাদের শিক্ষার্থীরা যেন টিকা নিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যায়। সেই ব্যবস্থা করা হয়েছে। তার সঙ্গে হয়তো একটু অসুবিধা হতে পারে। যারা ১২ বছরের কম বয়সী, তাদের নিয়ে একটু সমস্যা হতে পারে। আমরা সেই বিষয় নিয়েও কাজ করছি।

নাম প্রকাশ অনিচ্ছুক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, সরকার টিকার ওপরই জোর দিচ্ছে। ১২ বছরের ঊর্ধ্বে অর্থাৎ মাধ্যমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক এবং উচ্চ শিক্ষা স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো চালু রাখার চিন্তা করছে। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বন্ধ করলে হয়তো সেশনজট বেড়ে যাবার শঙ্কায় শিক্ষার্থীদের আন্দোলন হতে পারে। আর তাদের টিকা কার্যক্রমও চলছে। অন্যদিকে, প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীরা টিকা উপযোগী না হওয়ায় তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো পরিস্থিতি দেখে বন্ধ করা হতে পারে।

ওমিক্রন ধরনে সংক্রমণে হার বেড়ে যাওয়ায় গত ৩ জানুয়ারি সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠকে ১২ বছরের ঊর্ধ্বে শিক্ষার্থীদের দ্রুত টিকার আওতায় আনার নির্দেশনা দেওয়া হয়।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক শনিবার মানিকগঞ্জে এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, বিশ্বের অনেক দেশে ভয়াবহভাবে করোনা সংক্রামণ বাড়ছে। বাংলাদেশে করোনা সংক্রামণ এখনো নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। স্কুল-কলেজ খোলা রয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করার জন্য আপাতত কোনো পরিকল্পনা নেই। তবে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের জন্য যাত্রীবাহী বাস-ট্রেন-লঞ্চে অর্ধেক যাত্রী বহনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যেই এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে নির্দেশনা আসবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর