রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০১:২৩ পূর্বাহ্ন

ভারতের বিপক্ষে দাপুটে জয় টাইগ্রেসদের

ভয়েস বাংলা প্রতিবেদক / ১২ বার
আপডেট : বৃহস্পতিবার, ১৩ জুলাই, ২০২৩

ভারতের মেয়েরা সিরিজের প্রথম দুই টি-টোয়েন্টি জিতে আগেই সিরিজ নিশ্চিত করেছিল। তাই সিরিজের তৃতীয় টি-টোয়েন্টিটা ভারতের জন্য ছিল কেবলই নিয়ম রক্ষার ম্যাচ। প্রতিটি রানের জন্যই যেন রুদ্ধশ্বাস অপেক্ষা। গ্যালারিতে অল্প দর্শকের আওয়াজ বাড়ে, বেড়ে যায় জয়ের সম্ভাবনাও। অপেক্ষা বাড়ে, উইকেট হারানোয় বাড়ে শঙ্কাও। কিন্তু শেষে এসে অবসান হয় দীর্ঘ পাঁচ বছরের অপেক্ষার। মেয়েদের ক্রিকেটে ভারতের বিপক্ষে জয় আসে অবশেষে। হোম অব ক্রিকেটে টাইগ্রেসদের ধবল ধোলাই এড়ানোর ম্যাচে আগে ব্যাট করতে নেমে টাইগ্রেসদের ১০৩ রানের লক্ষ্য দেয় সফরকারীরা। ছোট লক্ষ্য তাড়া করতে ওপেনার শামিমা সুলতানার ৪২ রানের ইনিংস ভর করে ৪ উইকেটে ভারতকে হারিয়ে হোয়াইটওয়াশ লজ্জা এড়ালো বাংলাদেশ।
বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১০২ রান সংগ্রহ করে ভারতের মেয়েরা। জবাবে রান তাড়া করতে নেমে ১৮.২ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়েই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় স্বাগতিকরা।
এই জয়ে প্রায় ৫ বছর পর ভারতের মেয়েদের হারাল টাইগ্রেসরা। এর আগে ২০১৮ সালের এশিয়া কাপের ঐতিহাসিক ফাইনালের ভারতকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল বাংলাদেশ। এছাড়া দ্বিপাক্ষিক সিরিজে প্রতিবেশীদের বিপক্ষে প্রথম জয় এটি। সব মিলিয়ে এটা ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের মেয়েদের তৃতীয় জয়।
টস জিতে ব্যাট করতে নেমে মারুফা আক্তারের করা প্রথম ওভারে ৭ রান নেয় ভারত। দ্বিতীয় ওভারে সুলতানার বল বুঝতে না পারা স্মৃতি মান্ধানা ক্যাচ স্লিপে দাঁড়ানো ফাহিমা খাতুনের হাতে। ২ বলে ১ রান করেন এই ব্যাটার। এরপর আরেক উদ্বোধনী ব্যাটার শেফালি ভার্মাকেও আউট করেন তিনি। ১৪ বলে ১১ রান করেন শেফালি ক্যাচ দেন স্বর্ণার হাতে। জেমাইমা রদ্রিগেজের সঙ্গে এরপর ৪৫ রানের জুটি গড়েন অধিনায়ক হারমানপ্রিত। ২৬ বলে ২৮ রান করা জেমাইমাকে আউট করে এই জুটি ভাঙেন স্বর্ণা আক্তার, দুর্দান্ত স্টাম্পিং করেন উইকেটরক্ষক নিগার সুলতানা জ্যোতি। ৩ চার ও ১ ছক্কায় ৪১ বলে ৪০ রান করা হারমানপ্রিত সাজঘরে ফেরেন ফাহিমা খাতুনের বলে। তাকেও স্টাম্পিং করন জ্যোতি। এরপর দ্রুত উইকেট হারাতে থাকে ভারত। শেষ পাঁচ উইকেট তারা হারায় ১১ রানে। বাংলাদেশের হয়ে ৪ ওভারে ১৬ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন রাবেয়া খান। এছাড়া দুটি উইকেট পান সুলতানা।
জবাব দিতে নেমে ১২ রানের উদ্বোধনী জুটি এনে দেন সাথী রাণী ও শামীমা সুলতানা। ৯ বলে ১০ রান করে সাথী ফেরেন মিন্নু মনির বলে। এরপর তিন নম্বরে খেলতে নেমে রান করতে পারেননি দিলারা আক্তার। এই ব্যাটার ৭ বলে ১ রান করে সাজঘরে ফেরত যান। মনির বলেই স্টাম্পিংয়ের শিকার হন তিনি। চারে ব্যাটিংয়ে আসেন অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি, শামীমার সঙ্গী হন তিনি। ‍দুজনের সিঙ্গেল নিয়ে ম্যাচের গতিপথ ঠিক রাখেন। কিন্তু জয়ের জন্য দরকার ছিল বাউন্ডারির, প্রয়োজন ছিল জ্যোতিকেও। বাংলাদেশ অধিনায়ক দেবিকা ভাদিয়ার বলে উইকেটরক্ষকের হাতে ক্যাচ দেন।
২০ বলে ১৪ রান করে জ্যোতির বিদায়ের পর শঙ্কা জেগেছিল। কিন্তু তখনও দলকে ম্যাচে রাখেন শামীমা। এগারোতম ওভারে ১১ রান নিয়ে আসেন তিনি। জ্যোতির বিদায়ে কঠিন হয়ে আসা ম্যাচ আরও বেশি শঙ্কায় পড়ে স্বর্ণা আউট হলে। স্বাগতিক ব্যাটারদের মধ্যে মারার জন্য সুখ্যাতি আছে তার। কিন্তু ৭ বল খেলে ২ রান করে জেমাইমার বল তুলে মারতে গিয়ে বাউন্ডারিতে ক্যাচ দেন তিনি।
এরপরও দলের আশা টিকিয়ে রেখেছিলেন শামীমা ও সুলতানা। ১৭তম ওভারে এসে ফের ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। টানা দুই বলে ফেরেন সুলতানা খাতুন ও শামীমা। ইনিংস উদ্বোধনে আসা শামীমা সার্কেলের ভেতর বল রেখে রান নিতে গিয়ে আউট হন। ৩ চারের ইনিংসে ৪৬ বলে ৪২ রান করেন তিনি। বাংলাদেশ ম্যাচ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয় ১৮তম ওভারে এসে। তৃতীয় বলে নো বল করেন কানুইজা। ওই বলে আসে তিন রান। এরপর ফ্রি হিটে চার হাঁকান নাহিদা আক্তার।
বাকি কাজটা রিতু মণিকে নিয়ে সহজেই সারেন নাহিদা। টি-টোয়েন্টিতে ভারতের বিপক্ষে কেবল তৃতীয় জয় এটি বাংলাদেশের। আগের দুটিই এসেছিল ২০১৮ সালের এশিয়া কাপে, ওয়ানডেতে জেতেনি কখনো। পাঁচ বছর পর ভারতের বিপক্ষে পাওয়া জয়ের পর অবশ্য কোনো উদযাপন করেনি স্বাগতিক মেয়েরা।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর