বড় হারে এশিয়া কাপ মিশন শুরু করেছে বাংলাদেশ। শারজাহ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ৭ উইকেটে হেরেছে সাকিব আল হাসানের দল। ১২৮ রানের লক্ষ্যে খেলতে নামা আফগানিস্তানের প্রথম উইকেট নেন সাকিব আল হাসান। ১৮ বলে ১১ রান করা রহমানউল্লাহ গুরবাজকে স্টাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেলে ভাঙেন ১৫ রানের উদ্বোধনী জুটি। দ্বিতীয় সাফল্যের জন্যও অপেক্ষা করতে হয়নি খুব একটা।
আজ (মঙ্গলবার) এশিয়া কাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ ৭ উইকেটে হেরেছে আফগানদের কাছে। শারজা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে নির্ধারিত ২০ ওভারে বাংলাদেশ ৭ উইকেটে করে ১২৭ রান। সেই লক্ষ্যে খেলতে নেমে ৩ উইকেট হারিয়ে ৯ বল আগেই জয় নিশ্চিত করে আফগানিস্তান। এ নিয়ে টানা দ্বিতীয় ম্যাচ জিতলো তারা। তাতে টুর্নামেন্টের সুপার ফোর নিশ্চিত করেছে নবিরা। অনেক আশার কথা শোনানো হয়েছিল। কিন্তু সেসবের বাস্তব প্রমাণ মিলল না মাঠে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে করা হলো না নূন্যতম লড়াইও।
আফগানিস্তানের ব্যাটিং অর্ডারে খুব বেশি গভীরতা নেই। দুই ওপেনারের সঙ্গে মোহাম্মদ নবিকে তুলে নিতে পারলেই জয়ের পথ তৈরি করা সম্ভব। এই রকম একটা ধারণা হয়তো অনেকের মধ্যেই ছিল। বাংলাদেশের বোলাররা ৬২ রানের মধ্যে এই তিন ব্যাটারকে তুলে নিলো। কিন্তু যে ধারণা ছিল না, সেটিই বাস্তবে রূপ দিলেন দুই জাদরান- নাজিবউল্লাহ ও ইব্রাহিম। আফগান ব্যাটিংয়ের গভীরতা দেখিয়ে হারের তিক্ততা দিলেন বাংলাদেশকে।
ইনিংসের দশম ওভারে হজরতউল্লাহ জাজাইকে এলবিডব্লিউ আউট করেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। ২৬ বলে ২৩ রান করে আউট হন এই ব্যাটার। এরপর মোহাম্মদ নবীও ৯ বলে ৮ রান করে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের বলে আউট হলে কিছুটা চাপে পড়ে আফগানিস্তান।
কিন্তু অল্প লক্ষ্য টপকাতে তাদের বেগ পেতে হয়নি খুব একটা। ইব্রাহিম জাদরান ৪ চারে ৪১ বলে ৪২ এবং ৬ ছক্কা ও ১ চারে নজিবউল্লাহ জাদরানের ১৭ বলে ৪৩ রানে ভর করে সহজ জয় পেয়েছে আফগানিস্তান।
এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে টুর্নামেন্টে নিজেদের প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৭ উইকেট হারিয়ে ১২৭ রানের বেশি করতে পারেনি বাংলাদেশ । টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। এক চারে ৮ বলে ৬ রান করে সাজঘরে ফেরত যান দীর্ঘদিন পর দলে ফেরা নাঈম শেখ। মুজিব-উর-রহমানের বলে বোল্ড হয়েছেন তিনি।
এই স্পিনার নিজের দ্বিতীয় ওভারেই ফিরিয়েছেন এনামুল হক বিজয়কে। এই ওপেনার সুইপ করতে গেলে বল প্যাডে লাগে, শুরুতে আম্পায়ার আউট না দিলেও রিভিউতে বাঁচতে পারেননি তিনি। ১৪ বল খেলে কেবল ৫ রান করেন বিজয়।
সাকিব আল হাসানকে বেশ সাবলীলই মনে হচ্ছিল। টানা দুই বলে দুই চারও হাঁকিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু মুজিবের বলে বোল্ড হয়ে থেমেছে ৯ বলে তার ১১ রানের ইনিংস। এরপর মুশফিকুর রহিমও নিজের ইনিংসকে লম্বা করতে পারেননি।
৪ বলে ১ রান করেন তিনি, এলবিডব্লিউ হন রশিদ খানের বলে। একই দশা হওয়া আফিফ ১৫ বলে ১২ রান করেন। ক্রিজে অনেক্ষণ টিকে থাকলেও নিজের ইনিংসকে অর্থবহ করতে পারেননি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। রশিদের বলে ইব্রাহিম জাদরানের হাতে ক্যাচ তুলে দেওয়ার আগে ১ চারে ২৭ বলে ২৫ রান করেন তিনি। বাংলাদেশকে লড়াই করার মতো সংগ্রহ এনে দেন মোসাদ্দেক হোসেন। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে ৩ চার ও ১ ছক্কায় ৩১ বলে ৪৮ রান করেন তিনি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১২৭/৭ (মোসাদ্দেক ৪৮*, মাহমুদউল্লাহ ২৫, মেহেদী ১৪, আফিফ ১২, সাকিব ১১, নাঈম ৬, এনামুল ৫, মুশফিক ১; মুজিব ৪-০-১৬-৩, রশিদ ৪-০-২২-৩)।
আফগানিস্তান: ১৮.৩ ওভারে ১৩১/৩ (নাজিবউল্লাহ ৪৩*, ইব্রাহিম ৪২*, জাজাই ২৩, গুরবাজ ১১, নবি ৮; সাকিব ৪-০-১৩-১, মোসাদ্দেক ২.৩-০-১২-১, সাইফউদ্দিন ২-০-২৭-১)।
ফল: আফগানিস্তান ৭ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচসেরা: মুজিব উর রহমান।