রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০১:২৫ পূর্বাহ্ন

বেশি মুনাফার আশায় বাজারে ভোজ্যতেলের কৃত্রিম সংকট

ভয়েসবাংলা প্রতিবেদক / ১১৭ বার
আপডেট : সোমবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২১

বেশি মুনাফার আশায় ব্যবসায়ীরা সয়াবিন ও পাম তেল মজুদ করে বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে প্রতিলিটার সয়াবিন ১৬০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা মন্ত্রী ও সচিবের অনুমোদন পেলেই কার্যকর হবে—এমন সংবাদ পেয়েই তারা সয়াবিন ও পাম তেল মজুত করছেন বলে জানা গেছে।

সূত্র জানায়, বর্তমানে সরকার নির্ধারিত দর অনুযায়ী প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল ১২৯ টাকা, বোতলজাত সয়াবিন ১৫৩ টাকা, পাঁচ লিটারের বোতল ৭২৮ টাকা ও পাম তেল প্রতি লিটার ১১৬ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু আবারও সয়াবিন ও পাম তেলের দাম বাড়ানোর আবেদন করেছে দেশে সয়াবিন তেল পরিশোধনকারী মিল মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন।

সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে ভোজ্য তেলসহ নিত্যপণ্যের মজুত পরিস্থিতি, আমদানি ও দাম নির্ধারণী সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এএইচএম সফিকুজ্জামান। সভায় ভোজ্যতেল পরিশোধনকারী বিভিন্ন কোম্পানির কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

সভাশেষে অতিরিক্ত সচিব সফিকুজ্জামান জানিয়েছিলেন, সভায় মিল মালিকরা প্রতিলিটার সয়াবিন তেলের দাম ১৬৮ টাকা নির্ধারণ করার প্রস্তাব করেছিলেন। আলোচনা শেষে খোলা সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৩৬ টাকা, বোতলজাত সয়াবিন তেল প্রতিলিটার ১৬০ টাকা, বোতলজাত ৫ লিটার তেলের দাম ৭৬০ টাকা, আর পাম অয়েল প্রতি লিটার ১১৯ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। বাণিজ্যমন্ত্রী ও বাণিজ্য সচিবের অনুমোদন পেলেই এই দর কার্যকর হবে। এমন সংবাদের পর থেকেই ব্যবসায়ীরা নিশ্চিত হন যে সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানো হচ্ছে। তাই তারা আপাতত সয়াবিন ও পাম তেল বিক্রি করা কমিয়ে দিয়ে মজুত করছেন। বেশি মুনাফার আশায় ব্যবসায়ীরা এ কাজটি করছেন বলে জানিয়েছেন ভোক্তারা।

রাজধানীর মানিকনগরে বসবাসকারী বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মচারী তোফাজ্জেল হোসেন জানিয়েছেন, সকালে মহল্লার কয়েকটি দোকানে সয়াবিন তেল কিনতে গিয়ে পাইনি। দোকানদাররা জানিয়েছেন, সকালে কোম্পানির গাড়ি আসেনি। কাওরান বাজারে গিয়েও নাকি তারা তেল পাননি। তাই সকাল থেকেই মহল্লার দোকানে সয়াবিন তেল বিক্রি করতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন তোফাজ্জেল হোসেন।

জানা গেছে, বেশ কিছু দিন ধরেই আন্তর্জাতিক বাজারের দোহাই দিয়ে বাজারে আবারও সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানোর দাবি জানিয়ে আসছিলেন ভোজ্যতেল পরিশোধনকারী মিল মালিকরা। তারা বোতলজাত ও খোলা সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটারে ৭ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব দেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে।

অতিরিক্ত সচিব বলেন, সয়াবিন তেল পরিশোধনকারী মিল মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রস্তাব ছিল বোতলজাত প্রতি লিটার সয়াবিন তেল ১৬৮ টাকা করার। ট্যারিফ কমিশন একাধিকবার বসে অ্যানালাইসিস করে ১৬২ টাকা (বোতলজাত সয়াবিন তেল) করার সুপারিশ করেছে। এটা ছিল সেপ্টেম্বর মাসের অ্যাভারেজ রিপোর্ট। আজ দীর্ঘক্ষণ আলোচনা করে প্রতি লিটার বোতলজাত তেলের দাম ঠিক করা হয়েছে ১৬০ টাকা, যেটার আগে দাম ছিল ১৫৩ টাকা। সভায় খোলা সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৩৬ টাকা, বোতলজাত ৫ লিটার তেলের দাম ৭৬০ টাকা, আর পাম অয়েল প্রতি লিটার ১১৯ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। বাণিজ্যমন্ত্রী ও সচিব এই প্রস্তাবে অনুমোদন দিলে তা বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন আনুষ্ঠানিকভাবে সবাইকে জানিয়ে দেবে। বর্তমানে নির্ধারিত দাম হচ্ছে খোলা সয়াবিন প্রতি লিটার ১২৯ টাকা, ৫ লিটারের বোতল ৭২৮ টাকা ও পাম তেল প্রতি লিটার ১১৬ টাকা।

এদিকে একই বাজারের কিচেন মার্কেটের পাইকারি ব্যবসায়ী তোফাজ্জেল হোসেন মজুতের বিষয়টি অস্বীকার করে জানিয়েছেন, মিল কর্তৃপক্ষ সাপ্লাই কমিয়ে দিয়েছেন। চাহিদা অনুযায়ী আমারা সয়াবিন পাচ্ছি না, পাম অয়েলও পাচ্ছি না। খুচরা বিক্রেতাদের আমরা চাহিদা অনুযায়ী পণ্য দিতে পারছি না।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর