রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ১২:৪৯ পূর্বাহ্ন

বৃষ্টির বাধায় বাংলাদেশকে থামতে হলো ২০৭ রানে

ভয়েস বাংলা রিপোর্ট / ২৬ বার
আপডেট : সোমবার, ২৭ মার্চ, ২০২৩

তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথমটিতে টসে হেরে আগে ব্যাট করতে নামে টাইগাররা। পাওয়ার প্লেতে লিটন দাস ও রনি তালুকদারের রেকর্ড জুটিতে বড় সংগ্রহের ভীত পেয়ে যায় সাকিব আল হাসানের দল। শেষ পর্যন্ত রনির ৬৭ রানের বিধ্বংসী ইনিংসে ১৯.২ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ২০৭ রানের বিশাল সংগ্রহ পায় স্বাগতিকরা। বৃষ্টির কারণে ইনিংসের শেষ চার বল মাঠে গড়ায় নি। আপাতত বন্ধ রয়েছে খেলা।

আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতেও আগ্রাসী মন্ত্রে ব্যাটিং করেছে বাংলাদেশ। চট্টগ্রামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে বড় স্কোরের দেখা পেয়েছে। ১৯.২ ওভারে দলীয় ২০৭ রানের সময় বৃষ্টি নামলে পরে সেখানেই শেষ হয়েছে স্বাগতিকদের ইনিংস। বৃষ্টিতে আপাতত খেলা বন্ধ রয়েছে।

অবশ্য লিটন-রনি যেভাবে বিস্ফোরক গতিতে ব্যাট করছিলেন, তাদের জুটি টিকে থাকলে স্কোর আরও বেশি হতে পারতো। লিটন ৪৭ রানে আউট হওয়ার পর আরও বেশি ঝড় তুলে খেলেছেন রনি। ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি পাওয়া এই ব্যাটার আউট হতেই কিছুটা ছন্দ হারায় তারা। তার পরেও শামীম, হৃদয় ও সাকিবের ব্যাটিং স্কোর দুইশো ছাড়াতে ভূমিকা রাখে। যার মূল ভিতটাই গড়ে দিয়েছে লিটন-রনির ৯১ রানের বিস্ফোরক ওপেনিং জুটি। আইরিশদের হয়ে ৪৫ রানে দুটি উইকেট নিয়েছেন ক্রেইগ ইয়াং। একটি করে নিয়েছেন হ্যারি টেক্টর, মার্ক অ্যাডায়ার, গ্রাহাম হিউম।

রান দুইশো ছাড়ানোর পর আউট হৃদয়

শামীমের বিদায়ের পর রানের গতি বাড়াতে চেষ্টা করছিলেন সাকিব-হৃদয় জুটি। হৃদয়ের ছক্কায় ১৯তম ওভারে স্কোর দুইশোও ছাড়িয়েছে। তবে একই ওভারে হৃদয়কে আর ঝড় তুলতে দেননি মার্ক অ্যাডায়ার। ৮ বলে ১ ছক্কায় ১৩ রান করা হৃদয় ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফিরেছেন।

ইনিংস বড় করতে পারেননি শামীম

রনির বিদায়ের পর রানের গতি কমে গিয়েছিল। শামীম হোসেন অনেকক্ষণ ক্রিজে থাকলেও গতি বাড়াতে পারছিলেন না। মার্ক অ্যাডায়ারের ১৭তম ওভারে মারমুখী হতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। তাতে ২০ বলে ৩০ রানে ফিরেছেন শামীম। তার ইনিংসে ছিল ২টি চার ও ১ ছয়ের মার।

৬৭ রানে থামলেন রনি

লিটনের আউটে বিস্ফোরক ওপেনিং জুটি ভাঙলেও নিজ লক্ষ্যে অবিচল ছিলেন রনি। তার ব্যাটেই স্কোর দেড়শো ছাড়িয়েছে। তবে ইনিংসটাকে বেশি লম্বা করতে পারলেন না। ১৪তম ওভারে তাকে বোল্ড করেছেন হিউম। ফেরার আগে ৩৮ বলে ৬৭ রান করেছেন রনি। তার টর্নেডো ইনিংসে ছিল ৭টি চার ও ৩টি ছয়ের মার।

সাজঘরে শান্ত

লিটনের বিদায়ের পর রনিকে খুব বেশি সঙ্গ দিতে পারেননি শান্ত। টেক্টরের বলে ১৪ রানে স্টাম্পড হয়ে ফিরেছেন তিনি। তার ১৩ বলের ইনিংসে ছিল একটি ছয়।

রনির ফিফটি

রনির প্রথম ফিফটি২৪ বলে রনির হাফসেঞ্চুরি

লিটন ব্যর্থ হলেও আরেক ওপেনার রনি তালুকদার ঠিকই ফিফটি তুলে নিয়েছেন ঝড়ো ব্যাটিংয়ে। নবম ওভারে ২৪ বলে তুলে নেন ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি। একই ওভারে বাংলাদেশের স্কোরও ছাড়ায় একশ।

লিটনের বিদায়ে ভাঙলো বিস্ফোরক জুটি

টস হেরে ব্যাট করতে নামলেও ব্যাটিংয়ে আইরিশদের ওপর শাসনই করেছে বাংলাদেশ। দুই ওপেনার লিটন দাস ও রনি তালুকদার প্রভাব বিস্তারী ব্যাটিংয়ে ৬ ওভারেই যোগ করেছেন রেকর্ড ৮১ রান। সপ্তম ওভারেও তারা সেই আগ্রাসন বজায় রেখেছিলেন। অষ্টম ওভারে ৯১ রানের বিস্ফোরক জুটি ভাঙে লিটনের বিদায়ে। ইয়াংয়ের বলে ৪৭ রানে ব্যাট করতে থাকা লিটন মারতে গিয়ে স্টার্লিংয়ের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়েছেন। তাতে ৩ রানের জন্য হাফসেঞ্চুরি বঞ্চিত হয়েছেন তিনি। লিটনের ২৩ বলের বিস্ফোরক ইনিংসে ছিল ৪টি চার ও ৩টি ছয়।

লিটন-রনি

লিটন-রনি ঝড়ো গতিতে রান তুলেছেন।পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশের রেকর্ড সংগ্রহ

শুরুতে অফস্পিনার হ্যারি টেক্টরকে দিয়ে বোলিংয়ের সূচনা করে আয়ারল্যান্ড। কিন্তু লিটন দাস আত্মবিশ্বাসী ভঙ্গিতে ছক্কা মেরে নিজেদের ইনটেন্ট সম্পর্কে প্রতিপক্ষকে জানিয়ে দেন শুরুর ওভারেই। পরের ওভারে মার্ক অ্যাডায়ারকেও ছাড় দেননি রনি তালুকদার। ছক্কা মেরে আগ্রাসী সূচনার ধারাবাহিকতা বজায় রাখেন। তার পর তো হাত খুলে মেরেছেন দুই ওপেনার। ভয়ডরহীন ব্যাটিংয়ে আইরিশদের ওপর চেপে বসেন দুজনেই। অবস্থা এমন দাঁড়ায় ৫ ওভারে ৫ ভিন্ন বোলার আক্রমণে এনেও তারা রানের গতি কমাতে পারেনি। তাতে দুই ওপেনারের বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে পাওয়ার প্লেতে নিজেদের সর্বোচ্চ সংগ্রহের রেকর্ড গড়ে বাংলাদেশ। যোগ করে ৮১ রান। সর্বশেষ নিদাহাস ট্রফিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৭৪ রান এসেছিল।

আয়ারল্যান্ড-বাংলাদেশ টস

আয়ারল্যান্ড-বাংলাদেশ টসসিরিজে টানা চতুর্থ ম্যাচে টস হেরেছে বাংলাদেশ  

১১ বছর পর দ্বিপাক্ষিক সিরিজে টি-টোয়েন্টিতে মুখোমুখি আয়ার‌ল্যান্ড-বাংলাদেশ। চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সিরিজের প্রথম ম্যাচে টস জিতে বোলিং নিয়েছে আইরিশরা। তাতে সিরিজে টানা চার ম্যাচে টস জয়ের ভাগ্য হয়েছে সফরকারীদের।

ওয়ানডে সিরিজ ২-০ তে নিশ্চিত করায় সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটেও যে স্বাগতিকদের আধিপত্য থাকবে সেটা নিশ্চিত। তাছাড়া সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি সিরিজেও বাংলাদেশ বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করেছে। তবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে গত বছর ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ইংল্যান্ডকে হারানোর আত্মবিশ্বাস থাকায় এই ফরম্যাটে ইতিবাচক কিছু করতে মুখিয়ে আয়ারল্যান্ড।

যদিও শক্তির বিচারে বাংলাদেশ অনেকখানি এগিয়ে। দুই দলের লড়াইয়েও এগিয়ে স্বাগতিক দল। এখন পর্যন্ত পাঁচ মুখোমুখিতে বাংলাদেশের জয় তিনটিতে। আয়ারল্যান্ডের একটি। ২০০৯ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে জয়ের পর আইরিশরা এ ফরম্যাটে বাংলাদেশকে আর হারাতে পারেনি।

২০১২ সালে দুই দলের হওয়া সর্বশেষ সিরিজটিতেও জয় ছিল বাংলাদেশের। সেবার বাংলাদেশের কাছে আইরিশ দল ধবলধোলাই হয়েছিল।

তিন পেসার ও তিন স্পিনার নিয়ে নেমেছে বাংলাদেশ 

সর্বশেষ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের একাদশ থেকে একটি পরিবর্তন এনেছে বাংলাদেশ। বামহাতি তানভীর ইসলামের জায়গায় এসেছেন আরেক বামহতি স্পিনার নাসুম আহমেদ।

বাংলাদেশ একাদশ: লিটন দাস, রনি তালুকদার, নাজমুল হোসেন শান্ত, সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), তাওহীদ হৃদয়, শামীম হোসেন, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাসকিন আহমেদ, নাসুম আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান ও হাসান মাহমুদ।

আয়ারল্যান্ড একাদশ: পল স্টার্লিং (অধিনায়ক), রস অ্যাডয়ার, লরকান টাকার, হ্যারি টেক্টর, কার্টিস ক্যাম্ফার, জর্জ ডকরেল, গ্যারেথ ডেলানি, মার্ক অ্যাডায়ার, ক্রেইগ ইয়াং, গ্রাহাম হিউম ও বেন হোয়াইট।

টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ওভার থেকেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করতে থাকে দুই ওপেনার। লিটন-রনির ব্যাটে ভর করে ইনিংসের প্রথম ওভারেই ১১ রান তুলে বাংলাদেশ। হ্যারি টেক্টরের প্রথম ৩ বলে ২ রান আসার পর চতুর্থ বলে ডাউন দা গ্রাউন্ডে এসে লং অন দিয়ে ছক্কা মারেন লিটন দাস। পরবর্তীতে মার্ক এডেয়ারের ওভার থেকে আসে ১৪ রান। এরপর আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে দ্রুত রান তুলতে থাকে বাংলাদেশ।

পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশের রেকর্ড স্কোর তুলে রনি ও লিটন। পাওয়ার প্লে’তে কোনও উইকেট না হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ৮১ রান তুলে স্বাগতিক বাংলাদেশ। যা পাওয়ার প্লে’তে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ স্কোর।

এর আগে সাকিব বাহিনীর পাওয়ার প্লে’তে সর্বোচ্চ রান ছিল ৭৪। ২০১৮ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এই রান করেছিল লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। কিন্তু অষ্টম ওভারে ব্যক্তিগত ৪৭ রান করে সাজঘরে ফিরেন ওপেনার লিটন।

তবে এক প্রান্তে দাঁড়িয়ে থেকে নিজের অর্ধশতক পূরণ করেন আরেক ওপেনার রনি তালুকদার। আইরিশদের বোলারদের উপর চড়াও হয়ে ব্যক্তিগত ৬৭ রান করে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন এই ডানহাতি ব্যাটার।

শেষ দিকে শামীম হোসেন পাটুয়ারীর ৩০ রান ও সাকিবের  রানের ইনিংসে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ২০৭ রানের বিশাল সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর