শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ১০:২০ অপরাহ্ন

বিশ্বকে বিনয় শেখালেন জেসিন্ডা আরডার্ন: ব্লুমবার্গ

ভয়েস বাংলা রিপোর্ট / ২৯ বার
আপডেট : বৃহস্পতিবার, ১৯ জানুয়ারী, ২০২৩

চারিত্রিক বিনয় দেখিয়ে নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন জেসিন্ডা আরডার্ন। বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য আমি আমার সবটুকু দিয়েছি। কিন্তু এটা আমার থেকে অনেক কিছু কেড়ে নিয়েছে।

পদত্যাগের ঘোষণাকে তার ‘চারিত্রিক বিনয়ের প্রমাণ’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গের মতামত বিভাগের সম্পাদক আন্দ্রেয়া পাপুক। তিনি প্রতিবেদনে বলেন, আরডার্নকে অবশ্যই স্মরণ করা হবে। তবে তার সিদ্ধান্তকে সম্মান করা উচিত। এটি রাজনীতি ও ব্যবসায় বৈচিত্র্য অর্জনের চ্যালেঞ্জগুলো প্রতিফলিত করে। শুধু নারীদের সেখানে নিয়ে যাওয়া নয়, এটি তাদের ধরে রাখারও বিষয়। আমরা চাই, আরডার্নের মতো রাজনীতিবিদরা টিকে থাকুন। কারণ তারাই পারেন পরিবর্তন আনতে।

পদত্যাগের ঘোষণা দেওয়ার সময় ৪২ বছর বয়সী জেসিন্ডা বলেন, তিনি সাড়ে পাঁচ বছর প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। এটা তার জীবনের সবচেয়ে সার্থক সময়। তবে এ সময় নানা চ্যালেঞ্জও ছিল। তিনি বলেন, তিনি একজন মানুষ। রাজনীতিবিদেরা মানুষ। তারা যত দিন পারেন, তত দিন সবটুকু দিয়েই কাজ করেন। তারপর সময় হলে সরে দাঁড়ান। এখন তার সেই সরে দাঁড়ানোর সময় হয়েছে। তবে জেসিন্ডা দাবি করেন, প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব কঠিন হওয়ার কারণে তিনি পদত্যাগ করছেন না। অন্যরা তার চেয়ে আরও ভালো কাজ করতে পারেন বলে বিশ্বাস করেন তিনি।

মাত্র ৩৭ বছর বয়সে বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ নারী সরকার প্রধান হয়ে বিশ্বব্যাপী আলোড়ন তুলেছিলেন জেসিন্ডা আরডার্ন। ২০১৯ সালে ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদে চরমপন্থির গুলিতে ৫১ জন নিহত হয়। এ ঘটনায়  নিউজিল্যান্ডের বন্দুক আইন সংস্কার করেন তিনি। একই বছরের ডিসেম্বরে নিউজিল্যান্ড উপকূলে আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতে ২২ জন মারা যায়। এ ঘটনায়ও মর্মাহত হয়েছিলেন তিনি। মহামারি আরডার্নের মেধার পরীক্ষা নিয়েছে।

আরডার্ন যে বিরক্ত হতেন না, তা কিন্তু নয়। এটি তার আরেকটি চারিত্রিক প্রমাণ যে, তিনি রাজনীতির রুক্ষতা ও গণ্ডগোলের ঊর্ধ্বে উঠে ভালো খেলোয়াড় হতে পারেন। একবার এক বিরোধী নেতাকে অপমান করে ক্ষমা চেয়েছিলেন আরডার্ন। সেই অপমানসূচক বক্তব্যের নথি দাতব্য অর্থ সংগ্রহের জন্য নিলামে তুললে এক লাখ নিউজিল্যান্ড ডলারে বিক্রি হয়। সেই নথিতে আরডার্নের অফিসিয়াল সই ছিল।

২০২০ সালের নির্বাচনে বিপুল জয়ের মধ্য দিয়ে জেসিন্ডা দ্বিতীয় মেয়াদে নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী হন। যদিও এবার তার জনপ্রিয়তায় কিছুটা ভাটা দেখা যায়। তার অন্যতম কারণ- সরকারের প্রতি জনগণের আস্থা কম থাকা, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার অবনতি, রক্ষণশীল বিরোধীদের পুনরুত্থান। এসব বিষয় জেসিন্ডার ওপর চাপ তৈরি করছিল, যার আলামতও প্রকাশ পেয়েছিল।

যখন দেশের আদিবাসী জনসংখ্যার কথা আসে, তখন আরডার্নের ব্র্যান্ড অফ গভর্নিং আবার প্রদর্শিত হয়। তিনি মাওরি নারী নানাইয়া মাহুতাকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর হাই-প্রোফাইল পোর্টফোলিওতে নিযুক্ত করেছিলেন। যখন তার দল প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে ২০২৫ সালের মধ্যে স্কুলগুলি তাদের পাঠ্যক্রমে মাওরি ভাষাকে একীভূত করবে।

প্রতিবেদনের বলা হয়, বিশ্বের এক নম্বর টেনিস তারকা অ্যাশলে বার্টির টেনিস ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন, আমি সন্দেহ করি যে আরডার্নের ঘোষণার সঙ্গে  আমাদের অস্বস্তি আমাদের সঙ্গে আরও বেশি সম্পর্কযুক্ত রোল মডেলের জন্য লোভনীয়। যা বিশ্বব্যাপী সবাই গর্বিত। তারা শক্তিশালী, দক্ষ, দৃঢ়, কিন্তু চাপের মধ্যেও অনুগ্রহ প্রদর্শন করে। এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি বিশ্বে তাদের প্রয়োজন। সূত্র: ব্লুমবার্গ


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর