শুক্রবার সংসদের বৈঠকে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ‘বিরোধী দলীয় নেতা এবং উপনেতা (পারিতোষিক ও বিশেষাধিকার) বিল-২০২১’ সংসদে উপস্থাপন করেন।
পরে বিলটি ১৪ দিনের মধ্যে পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।
সামরিক শাসন আমলে ১৯৭৯ সালের এ সংক্রান্ত অধ্যাদেশটি বাতিল করে বাংলায় নতুন আইন করতে বিলটি আনা হয়েছে।
বিলে বলা হয়েছে, বিরোধী দলীয় নেতা সরকারের একজন মন্ত্রীর জন্য ধার্য বেতন, ভাতা, অন্যান্য বিশেষাধিকার পাবেন।
আর বিরোধী দলীয় উপনেতা একজন প্রতিমন্ত্রীর সমান বেতন, ভাতা, ও অন্যান্য বিশেষাধিকার পাবেন।
বিরোধী দলীয় নেতার অর্থ ‘স্পিকারের বিবেচনা মতে সময় সময়, যে সংসদ সদস্য সরকারি দলের বিরোধিতাকারী সর্বোচ্চ সংখ্যক সদস্য নিয়ে গঠিত দল বা অধিসংঘের নেতা’।
জাতীয় নির্বাচন শেষে সংসদ গঠনের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পাওয়া রাজনৈতিক দল সংসদে প্রধান বিরোধীদল হিসেবে দায়িত্ব পালন করে।
প্রধান বিরোধীদলের সংসদীয় দল বৈঠক করে বিরোধীদলীয় নেতা ও উপনেতা মনোনীত করে থাকে। পরে তারা স্পিকারকে সেটি লিখিতভাবে জানায়। স্পিকার কার্যপ্রণালী বিধি অনুযায়ী পদক্ষেপ নিয়ে থাকেন।
তবে ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ সংসদ নির্বাচনের পর বর্তমান সংসদের প্রধান বিরোধীদল জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রয়াত চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ দলের কোনো বৈঠক ছাড়াই ২০১৯ সালের ৪ জানুয়ারি গণমাধ্যমে বিবৃতি পাঠিয়ে ঘোষণা দেন যে, দলের পদাধিকার বলে তিনিই হবেন সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা এবং তার ভাই জি এম কাদের হবেন বিরোধীদলীয় উপনেতা।
এরপর ২০১৯ সালের ১০ জানুয়ারি এরশাদকে বিরোধীদলীয় নেতা ও জি এম কাদেরকে বিরোধীদলীয় উপনেতা হিসেবে স্বীকৃতি দেন স্পিকার।
পরে ওই বছরের ২২ মার্চ স্পিকারকে দেওয়া চিঠিতে জি এম কাদেরের পরিবর্তে রওশন এরশাদকে বিরোধীদলীয় উপনেতা করার অনুরোধ জানান এরশাদ। পরদিন ২৩ মার্চ রওশনকে বিরোধীদলীয় উপনেতা হিসেবে স্বীকৃতি দেন স্পিকার।
এরপর ২০১৯ সালের গত ১৪ জুলাই একাদশ সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ মারা গেলে নাটকীয়তা ও পালাপাল্টি চিঠি চালাচালির পর তার স্ত্রী রওশন এরশাদ বিরোধীদলীয় নেতা এবং ভাই জিএম কাদেরকে বিরোধীদলীয় উপনেতা নির্বাচিত হন।