রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০২:০০ পূর্বাহ্ন

বন্যপ্রাণী সংক্রান্ত অপরাধ দমনে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা: বনমন্ত্রী

ভয়েস বাংলা রিপোর্ট / ১৩ বার
আপডেট : সোমবার, ২২ মে, ২০২৩

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেছেন, সরকার বন্যপ্রাণী সংক্রান্ত অপরাধের দমনে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছে। সে লক্ষ্যে অবৈধভাবে বন্যপ্রাণী কেনা-বেচা, শিকার বা হত্যা, পাচারজনিত অপরাধ নিয়ন্ত্রণসহ বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের লক্ষ্যে গণসচেতনতা সৃষ্টিতে ‘বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট’ নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে।

‘বাস্তবায়ন করি অঙ্গীকার, জীববৈচিত্র্য হবে পুনরুদ্ধার’-  প্রতিপাদ্যে সোমবার (২২ মে) ‘আন্তর্জাতিক জীববৈচিত্র্য দিবস-২০২৩’ পালন উপলক্ষ্যে বন অধিদফতরে আয়োজিত আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

আলোচনা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার, মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী, মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, অতিরিক্ত সচিব ইকবাল আব্দুল্লাহ হারুন এবং পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. আবদুল হামিদ প্রমুখ। সভায় সভাপতিত্ব করেন বন অধিদফতরের প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী।

শাহাব উদ্দিন বলেন, সরকার জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে ইতোমধ্যে জাতিসংঘের ‘কনভেনশন অন বায়োলজিক্যাল ডাইভার্সিটি’-তে সই করেছে। জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও এর উপাদানগুলোর টেকসই ব্যবহার নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে ‘বাংলাদেশ জীববৈচিত্র্য আইন-২০১৭’ প্রণয়ন করা হয়েছে। জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ, বন্যপ্রাণীর অবাধে বিচরণ ও প্রজননের জন্য ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ২৫টি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য, ২০টি জাতীয় উদ্যান, ২টি বিশেষ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এলাকা, ২টি মেরিন প্রটেক্টেড এরিয়া, ১টি উদ্ভিদ উদ্যান, ৩টি ইকোপার্ক এবং ২টি শকুন নিরাপদ এলাকা ঘোষণা করা হয়েছে।

বনমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার বঙ্গোপসাগরের সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ডের ১ লাখ ৭৩ হাজার ৮০০ হেক্টর এলাকা এবং সেন্টমার্টিন দ্বীপ সংলগ্ন ১ হাজার ৭৪৩ বর্গ কিলোমিটার এলাকাকে মেরিন প্রটেকটেড এরিয়া হিসেবে ঘোষণা করেছে, এর ফলে এখন আইনের মাধ্যমে এই বিশাল সামুদ্রিক এলাকার জলজ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। সিলেট অঞ্চলে অবস্থিত জলাভূমির বন রাতারগুল ও নওগাঁর আলতাদিঘীকে বিশেষ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া দেশে ২টি রামসার সাইট ও ৬টি ফ্লাইওয়ে সাইট রয়েছে।

শাহাব উদ্দিন বলেন, ‘জীববৈচিত্র্য সংক্রান্ত গবেষণার জন্য অর্থায়ন করা হচ্ছে। দেশে প্রথমবারের মতো বিরল ও বিলুপ্তপ্রায় উদ্ভিদ প্রজাতির লাল তালিকা প্রণয়নের কার্যক্রম প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।  জীববৈচিত্র্যের লীলাভূমি সুন্দরবন রক্ষায় সরকারি অর্থায়নে একাধিক প্রকল্প চলমান রয়েছে। এছাড়া, ‘স্মার্ট প্যাট্রোলিং’-এর ফলে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য এখন অধিক সুরক্ষিত। সুন্দরবনের ৫২ শতাংশ এলাকা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের অর্ন্তভুক্ত করা হয়েছে। সুন্দরবনের ওপর নির্ভরশীল স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য বিকল্প কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করা হয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, ‘জীববৈচিত্র্যের অন্যতম উপাদান উদ্ভিদ কিংবা প্রাণী ক্ষতিগ্রস্ত হলে প্রতিবেশ ব্যবস্থার ওপর নেমে আসবে চরম বিপর্যয়। জীববৈচিত্র্য বিপন্ন হলে বিপর্যস্ত হবে মানবসভ্যতাও। তাই আমাদের নিজেদের স্বার্থেই জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে অগ্রণী হতে হবে। সুতরাং, জীববৈচিত্র্য পুনরুদ্ধার কার্যক্রমকে আরও কার্যকর ও গতিশীল করতে হলে সবার অঙ্গীকারাবদ্ধ হতে হবে। এছাড়া বনজসম্পদের অবৈধ আহরণ নির্মূলে মাঠ পর্যায়ের প্রত্যেক বিভাগ ও ইউনিট নিয়মিত টহল কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

এর আগে সকালে শাহবাগ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি পর্যন্ত বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের অংশগ্রহণে এক বর্ণাঢ্য র‍্যালি অনুষ্ঠিত হয়।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর