রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০২:৪৯ পূর্বাহ্ন

ফিফা অ্যাওয়ার্ডে আর্জেন্টাইনদের জয়জয়কার

ভয়েস বাংলা রিপোর্ট / ২১ বার
আপডেট : বুধবার, ১ মার্চ, ২০২৩

ক্যারিয়ারে অধরা বিশ্বকাপ জয় করার কারণে সুপারস্টার লিওনেল মেসি ফিফা বর্ষসেরা ফুটবলার হতে চলেছেন এটা অনেকটা অবধারিত ছিল। অবশেষে সেটাই হয়েছে। অনুমিতভাবেই ২০২২ সালের ‘দ্য বেস্ট ফিফা ফুটবল অ্যাওয়ার্ডস’ অনুষ্ঠানে সেরা পুরুষ ফুটবলার হয়েছেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক মেসি। মঙ্গলবার ভোরে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে জমকালো আয়োজনে মেসিসহ বিভিন্ন বিভাগের সেরাদের হাতে শ্রেষ্ঠত্বের স্মারক তুলে দেন বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফার সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্টিনো। ফিফা সদস্যভুক্ত দেশের জাতীয় দলের কোচ, অধিনায়ক, সাংবাদিক ও ফিফার ওয়েবসাইটে দেয়া ফুটবলপ্রেমীদের ভোটে সেরাদের নির্বাচন করা হয়েছে।

ফিফার সেরা ফুটবলারের খেতাব পুনরুদ্ধারের পথে মেসি হারিয়েছেন ক্লাব সতীর্থ পিএসজির কিলিয়ান এমবাপে ও রিয়াল মাদ্রিদের ফরাসি ফরোয়ার্ড করিম বেঞ্জামাকে। সবার সেরা হওয়ার পথে মেসি পেয়েছেন সর্বোচ্চ ৫২ পয়েন্ট। ৪৪ পয়েন্ট পেয়ে বিশ্বকাপের গোল্ডেন বুট জয় করা এমবাপে হয়েছেন দ্বিতীয় আর রিয়াল মাদ্রিদকে গত মৌসুমে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ও স্প্যানিশ লা লিগা জেতানো বেঞ্জামা ৩৪ পয়েন্ট পেয়ে হয়েছেন তৃতীয়। অবাক করা বিষয় হচ্ছে, মেসি ২০২২ সালে ফিফার সেরা ফুটবলার হলেও একই বছরের ব্যালন ডি’অরের ৩০ জনের সংক্ষিপ্ত তালিকাতেই জায়গা পাননি। শুধু মেসি নন, ৩০ জনের তালিকাতে ছিল না আর্জেন্টিনার কোনো ফুটবলার।

২০০৫ সালের পর মেসি ও ১৯৯৪ সালের পর কোনো আর্জেন্টাইনকে ছাড়া করা হয় ব্যালন ডি’অরের সংক্ষিপ্ত তালিকা। গত ২৭ বছরে প্রতিবারই সংক্ষিপ্ত তালিকায় ছিলেন আর্জেন্টিনা থেকে ন্যূনতম একজন করে ফুটবলার। ২০০৫ থেকে প্রতিবার ছিলেন মেসি। সেই ধারাবাহিকতায় ছেদ ঘটে গেল বছর। কিন্তু বিশ্বকাপ জয় করার কারণে একই বছরে ফিফার সেরা ফুটবলারের খেতাব বগলদাবা করেছেন খুদে জাদুকর।
এবার বর্ষসেরা হওয়ার মধ্য দিয়ে গৌরবময় রেকর্ড গড়েছেন মেসি। বিশ্বের একমাত্র ও প্রথম ফুটবলার হিসেবে সাতবার ফিফা সেরা হয়েছেন তিনি। সমানসংখ্যক ব্যালন ডি’অরও জয় করেছেন। অর্থাৎ মেসি হচ্ছেন বিশ্বের একমাত্র ফুটবলার যিনি সাতবার করে ফিফা সেরা ও ব্যালন ডি’অর জয় করেছেন। এ তালিকায় পাঁচবার করে জিতে মেসির পেছনে আছেন পর্তুগিজ মহাতারকা ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডো। ২০১৬ সালে ‘দ্য বেস্ট ফিফা ফুটবল অ্যাওয়ার্ডস’ চালুর পর ওই বছর ছেলেদের বর্ষসেরা হন রোনাল্ডো। পরের বছরও পর্তুগাল অধিনায়ক অ্যাওয়ার্ডটি জয় করেন।

এরপর ২০১৮ সালে লুকা মডরিচের পর ২০১৯ সালে প্রথমবারের মতো ‘বেস্ট’ ট্রফি জয় করেন মেসি। গত দুই বছর পুরস্কারটি জিতেছেন তখন বায়ার্ন মিউনিখে খেলা পোলিশ তারকা রবার্ট লেভানডোস্কি। যিনি এখন বার্সিলোনার হয়ে খেলেন। এবারের ‘দ্য বেস্ট’ জিতেছেন মেসি। অর্থাৎ ‘দ্য বেস্ট ফিফা ফুটবল অ্যাওয়ার্ডস’ চালুর পর এটি মেসির দ্বিতীয়বার সেরা হওয়া। সবমিলিয়ে তিনি সর্বোচ্চ সাতবার ফিফা সেরার খেতাব জয়ের কৃতিত্ব দেখিয়েছেন।
বিভিন্ন নামে ১৯৯১ সাল থেকে বর্ষসেরা ফুটবলারের পুরস্কার দিয়ে আসছে ফিফা। শুরু থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত ‘ফিফা ওয়ার্ল্ড প্লেয়ার অব দ্য ইয়ার’ নামের পুরস্কারটি একবার জেতেন মেসি। সেটা ২০০৯ সালে। পরের ছয় বছর ফরাসি ম্যাগাজিন ‘ফ্রান্স ফুটবল’ আর ফিফা একসঙ্গে দেয় ফিফা ব্যালন ডি’অর। এই পুরস্কারটি মেসি জিতেছেন ২০১০, ২০১১, ২০১২ ও ২০১৫ সালে। এরপর ব্যালন ডি’অর থেকে বের হয়ে বর্তমানের ‘দ্য বেস্ট’ নাম দেয় ফিফা। মেসি এটি জিতেছেন ২০১৯ ও ২০২২ সালে। কাতার বিশ্বকাপের ফাইনালে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে মেসি করেন জোড়া গোল।

পেনাল্টি শূটআউটেও গোল করার কৃতিত্ব দেখান। টুর্নামেন্টে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৭ গোল ও সর্বোচ্চ ৩টি অ্যাসিস্ট করেন। এই সাত গোলের মধ্যে পাঁচটিই করেন পেনাল্টি থেকে। দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে আসরের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জিতে নেন ৩৫ বছর বয়সী মেসি। সেরার লড়াইয়ে ২০২১ সালে ৮ আগস্ট থেকে ২০২২ সালের ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে ক্লাব ফুটবলে আহামরি কিছু করতে পারেননি মেসি। যে কারণে ব্যালন ডি’অরে সংক্ষিপ্ত ৩০ জনে জায়গা পাননি। কিন্তু বিশ্বের সবচেয়ে আকাক্সিক্ষত আসর বিশ্বকাপে বাজিমাত করার কারণে ফিফা সেরা হয়েছেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক।

সেরার স্বীকৃতি পাওয়ার পর মেসি বলেন, ‘এই বছরটা (২০২২) আমার জন্য দারুণ ছিল। অনেক ত্যাগের পর স্বপ্নপূরণ হয়েছে। খুব কম খেলোয়াড়ই এই স্বপ্ন পূরণ করতে পারে এবং আমি তা পেরেছি। নিজের পরিবার ও আর্জেন্টিনার মানুষদের ধন্যবাদ জানাই।’ মেসির মতো সেরা কোচের পুরস্কার পেয়েছেন আর্জেন্টিনার লিওনেল স্কালোনি। গর্বিত এই কোচ বলেন, ‘এএফএ সভাপতিকে ধন্যবাদ। ২৬ খেলোয়াড়, আইমার, আয়ালা ও আমার পুরো কোচিং স্টাফদের ধন্যবাদ। দেশের হয়ে কিছু জেতার চেয়ে সুন্দর আর কিছু নেই। এই জয়টা আমার স্ত্রী-সন্তান, আমার শহর ও দেশের মানুষের জন্য। তাদের জন্যই আমি সফল হতে পেরেছি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর