রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০১:২৫ পূর্বাহ্ন

পি কে হালদারকে আইনগতভাবেই ফিরিয়ে আনা হবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

ভয়েসবাংলা প্রতিবেদক / ৭৯ বার
আপডেট : রবিবার, ১৫ মে, ২০২২

বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট ও পাচার করে আলোচিত প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদারকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনার অশোকনগর থেকে চার সহযোগীসহ গ্রেফতার করা হয়েছে। শনিবার (১৪ মে) গ্রেফতারের পর তিন দিনের রিমান্ডে নিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে ভারতের ডিরেক্টরেট অব এনফোর্সমেন্ট-ইডি। গ্রেফতারের পর থেকেই ঘুরেফিরে উঠে আসছে একটাই প্রশ্ন—পি কে হালদারকে কবে ফিরিয়ে আনা হবে বাংলাদেশে?

রবিবার (১৫ মে) স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, পি কে হালদার বাংলাদেশের ওয়ান্টেড ব্যক্তি। আমরা ইন্টারপোলের মাধ্যমে তাকে অনেক দিন ধরে চাচ্ছিলাম। ভারতে অ্যারেস্ট হয়েছেন তিনি। কিন্তু অফিসিয়ালি বিষয়টি আমাদের এখনও জানানো হয়নি। তাকে ফিরিয়ে আনতে আইনগতভাবে যা করা প্রয়োজন তা করবো।

সংশ্লিষ্টরা জানান, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)-এর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই গত শুক্রবার ও শনিবার পশ্চিমবঙ্গে পি কে হালদার, তার দুই ভাই প্রীতিশ ও প্রাণেশ হালদারসহ অন্যতম প্রধান সহযোগী সুকুমার মৃধার বাড়িতে অভিযান চালায় ইডি।

শনিবার হালদার, প্রীতিশ, উত্তম মিত্র, স্বপন মিত্র ও সুকুমার মৃধার জামাতা সঞ্জীব হালদারকে গ্রেফতারের পর রবিবার তাদের তিন দিনের রিমান্ডে নিয়ে যাওয়া হয়। গ্রেফতার হওয়া পাঁচ জনই বাংলাদেশি। পি কে হালদার ভারতে গিয়ে শিবশঙ্কর হালদার নামে, উত্তম কুমার মিস্ত্রি- উত্তম মিত্র, স্বপন কুমার মিস্ত্রি- স্বপন মিত্র নামে ভুয়া নাগরিকত্বের কাগজপত্র তৈরি করেছিলেন বলে অভিযোগ আছে।

দুদক কর্মকর্তারা জানান, পি কে হালদারের নামে গত তিন বছরে দুদকে ৩৪টি মামলা দায়ের হয়েছে। এরমধ্যে একটি মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। তাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে তারা ইতোমধ্যে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছেন। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্দিবিনিময় চুক্তি রয়েছে। ২০১৩ সালে করা এই চুক্তির আলোকেই পি কে হালদারসহ তার সহযোগীদের ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে। তবে এতে দুই দেশের উচ্চ পর্যায়ের যোগাযোগ গুরুত্বপূর্ণ। যেহেতু বাংলাদেশের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তাদের গ্রেফতার ও সম্পদ জব্দ করা হয়েছে, তাই তাদের ফিরিয়ে আনা যাবে।

বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এক কর্মকর্তা জানান, পি কে হালদারের বিরুদ্ধে ইডি বা ভারত সরকার কী ধরনের ব্যবস্থা নিচ্ছে তার ওপর নির্ভর করবে তাকে কবে দেশে ফিরিয়ে আনা যাবে। যদি তার বিরুদ্ধে অবৈধ অনুপ্রবেশ ও জালিয়াতির অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়, তবে মামলা নিষ্পত্তি হওয়ার আগে তাকে ফিরিয়ে আনা কঠিন হয়ে যাবে।

দুদকের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানান, পি কে হালদারকে ফিরিয়ে আনার জন্য সরকার আন্তরিকভাবে চেষ্টা করছে। শুক্র থেকে রবিবার টানা তিন দিন বাংলাদেশে সরকারি ছুটি ও ভারতে শনি ও রবিবার ছুটি থাকায় আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও যোগাযোগ সম্ভব হয়নি। যোগাযোগ যা হয়েছে সব আনঅফিসিয়াল। সোমবার অফিস খোলার পর আনুষ্ঠানিকভাবে যোগাযোগ করা যাবে। পি কে হালদারের মামলাগুলোর তদন্তে যুক্ত এক কর্মকর্তা জানান, ইতোমধ্যে পি কে হালদারসহ তার প্রায় ৮০ জন সহযোগীকে শনাক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এরমধ্যে ১২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

পি কে হালদারকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারলে সব মামলার তদন্ত দ্রুত সম্পন্ন করা যাবে বলে জানান তিনি। সেই সঙ্গে হালদারের অর্থ লোপাটে জড়িত আরও অনেকের নামও বেরিয়ে আসবে। ২০১৯ সালের শেষের দিকে পি কে হালদারের অর্থ লোপাটের বিষয়টি আলোচনায় আসে। ওই বছরের ২৩ অক্টোবর দুদকের পক্ষ থেকে তার বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। তবে এর আগেই দেশ ছেড়ে পালান তিনি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর