রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৬:১৩ পূর্বাহ্ন

পাটের আঁশে রেসিং কার বানালেন কুয়েট শিক্ষার্থীরা

রিপোর্টার / ১৪৩ বার
আপডেট : শনিবার, ২১ আগস্ট, ২০২১

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের শিক্ষার্থীরা তৈরি করেছেন একটি ‘রেসিং কার’। এটির বডিতে ব্যবহার করা হয়েছে পাটের আঁশ। নিজস্ব প্রচেষ্টায় ফর্মুলা কারের আদলে তৈরি করা এ রেসিং কারের নাম দেওয়া হয়েছে ‘কিলোফ্লাইট আলফা’। এ কার তৈরিকারক শিক্ষার্থীদের গ্রুপের নামও ‘কিলোফ্লাইট’। কুয়েট শিক্ষার্থীরা নিজস্ব টেকনোলজিতে প্রথম গাড়ি তৈরি করেছেন।

তিন বছরের চেষ্টায় তৈরি এ গাড়িটির বডিসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অংশ পরিবেশবান্ধব পাট দিয়ে তৈরি। কুয়েট শিক্ষার্থীরা এ গাড়ির মাধ্যমে পাটশিল্পকে নতুন উচ্চতায় তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। ‘ফর্মুলা স্টুডেন্ট ইউকে’ অনলাইন ইভেন্ট প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছে কুয়েট শিক্ষার্থীদের বানানো এ রেসিং কার। এই প্রতিযোগিতার লাইভ ও অনলাইন ইভেন্টে বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিযোগী কুয়েট। বিশ্বের ৬৪টি দেশ এতে অংশ নেয়।

কুয়েট মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ও কিলোফ্লাইটের সদস্য অম্লান বিশ্বাস বলেন, ‘গাড়িটি মূলত ফর্মুলা স্টুডেন্ট ইউকে-কে টার্গেট করে বানানো। এর বিশেষত্ব হলো সম্পূর্ণ বডি জুট ফাইবার (পাটের আঁশ) দিয়ে তৈরি। এতে উন্নত ইঞ্জিন, গিয়ার, ব্রেক, মিটার রয়েছে। চালকের জন্য রয়েছে সুরক্ষা ব্যবস্থা। গাড়িটি ঘণ্টায় ১৬২ কিলোমিটার বেগে চলতে সক্ষম।’

তিনি বলেন, ‘করোনার রেডজোনে থাকার কারণে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানসহ কিছু দেশ অনলাইন ইভেন্টে অংশ নেয়। ৬৪টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিযোগী কুয়েট ৩৩তম স্থান লাভ করেছে। আগামী বছর চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে কাজ চলছে।’

kuet-racing-car2kuet-racing-car2

আরেক সদস্য সাফায়েত সাইমুম বলেন, ‘টিম কিলোফ্লাইট ২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। চলতি বছরের জুলাই মাসে গাড়িটি তৈরি শেষ হয়।’

কিলোফ্লাইট টিমের অধিনায়ক এরফান ইসলাম বলেন, ‘কুয়েটের সাবেক শিক্ষার্থী ও নিজেদের অর্থায়নে এই রেসিং কারটি প্রস্তুত করা হয়েছে। যা অটোমোবাইলে খাতে বাংলাদেশকে এগিয়ে নেওয়া এবং দক্ষ ইঞ্জিনিয়ার তৈরির একটি উদ্যোগ। গাড়িটি পরিবেশবান্ধব পাট দিয়ে বানানো। এর বডি অ্যারো জুট ফাইবার কম্পোজিট দিয়ে প্রস্তুত করা হয়েছে।’

কুয়েট মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের শিক্ষার্থী মহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ফর্মুলা স্টুডেন্টে বাংলাদেশ থেকে আমরা প্রথম অংশগ্রহণ করি। আগামীতে আরও ভালো করার প্রচেষ্টা থাকবে।’

একই ডিপার্টমেন্টের অধ্যাপক ইঞ্জিনিয়ার ড. মুহাম্মদ মাসুদ জানান, আড়াই বছরের এ প্রজেক্টের শুরু থেকেই তিনি একাডেমিক অ্যাডভাইজার হিসেবে ছিলেন। ২৮ জনের টিমকে এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এরপর তারা নিজেরাই ডিজাইন করে সম্পূর্ণ নিজস্ব উদ্যোগে এবং শিক্ষকদের সহযোগিতায় কাজটি সম্পন্ন করে।

কুয়েটের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের প্রধান অধ্যাপক ড. মো. সাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘পরিবেশবান্ধব উপাদান দিয়ে গাড়িটি তৈরি। ৫-৭ জনের গ্রুপ প্রজেক্ট সম্পন্ন করে। এবার অনলাইন ইভেন্ট করলেও আগামী বছর তারা ইংল্যান্ডে সশরীরে অংশ নিতে পারবে।’


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর