রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৪:৪৬ পূর্বাহ্ন

পরীমণি ও সাম্প্রতিক ইস্যুতে ১৭ বিশিষ্ট নাগরিকের বিবৃতি

রিপোর্টার / ১১৪ বার
আপডেট : শুক্রবার, ১৩ আগস্ট, ২০২১

পরীমণিকে আটকসহ শোবিজ অঙ্গন ঘিরে সাম্প্রতিক ঘটে যাওয়া কিছু বিষয়ে দেশের ১৭ জন বিশিষ্ট নাগরিক যৌথ বিবৃতি প্রদান করেছেন। 

বৃহস্পতিবার (১২ আগস্ট) সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের প্যাডে লেখা ওই বিবৃতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়, চলচ্চিত্র জগতের এক অভিনেত্রীকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের নব্য-ধনিক সমাজের যে চেহারা ফুটে উঠেছে তা আমাদের গভীরভাবে চিন্তিত, উদ্বিগ্ন ও ক্ষুব্ধ করেছে। বিবৃতিতে একই সঙ্গে সুনামগঞ্জের শাল্লায় গ্রামবাসীকে উত্তেজিত করে সংখ্যালঘুদের বাড়িঘরে হামলা ও লুটতরাজের ঘটনাকে দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেন এই বিশিষ্টজনেরা।

বিবৃতি দেওয়া ১৭ জন বিশিষ্ট নাগরিক হলেন, আবদুল গাফফার চৌধুরী, হাসান আজিজুল হক, সৈয়দ হাসান ইমাম, অনুপম সেন, রামেন্দু মজুমদার, সেলিনা হোসেন, আবেদ খান, ফেরদৌসী মজুমদার, সারোয়ার আলী, মফিদুল হক, মামুনুর রশীদ, আবদুস সেলিম, নাসির উদ্দিন ইউসুফ, শাহরিয়ার কবীর, মুনতাসীর মামুন, গোলাম কুদ্দুছ ও হাসান আরিফ।

সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের নির্বাহী কমিটির সদস্য হানিফ খান প্রেরিত এই বিবৃতিতে লেখা হয়, বাংলাদেশে সাম্প্রতিক কিছু ঘটনার মধ্য দিয়ে সামাজিক অবক্ষয়, সাম্প্রদায়িকতা এবং নারীবিদ্বেষী পুরুষতান্ত্রিকতার বিস্তার যেভাবে ফুটে উঠেছে তা আমাদের গভীরভাবে ব্যথিত ও উদ্বিগ্ন করেছে। সুনামগঞ্জের শাল্লায় গ্রামবাসীকে উত্তেজিত করে সংখ্যালঘুদের বাড়িঘরে হামলা ও লুটতরাজের ঘটনা অতীব দুঃখজনক। তার চেয়েও দুঃখবহ, এই হামলার মাধ্যমে বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িক সামাজিক আবহ বিনষ্টকারী চিহ্নিত গোষ্ঠীর অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের বিচার তো হলোই না, বরং বিনা বিচারে কারাবাসে রয়েছেন মৌলবাদী গোষ্ঠীর সমালোচনাকারী সংখ্যালঘু যুবক। এরই ধারাবাহিকতায় খুলনার রূপসা উপজেলায় ন্যক্কারজনকভাবে ভাংচুর করা হয়েছে উপাসনালয় ও প্রতিমা। নিজ ধর্মবিশ্বাসে আস্থাবান মানুষ অপরের ধর্মপালনকে সম্মান করে চলবে, এটা সবারই কাম্য। এর অন্যথা ঘটিয়ে সামাজিক অপরাধ যারা সংঘটিত করবে তাদের কঠোর হাতে দমনের দাবি করছি আমরা।

বিবৃতিতে পরীমণির ঘটনাকে উদ্দেশ করে লেখা হয়, চলচ্চিত্র জগতের এক অভিনেত্রীকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের নব্য-ধনিক সমাজের যে চেহারা ফুটে উঠেছে তা আমাদের গভীরভাবে চিন্তিত, উদ্বিগ্ন ও ক্ষুব্ধ করেছে। নারীকে বাণিজ্য ও ভোগের পণ্য হিসেবে ব্যবহারের ধারা নানাভাবে পরিপুষ্টি পেয়ে হয় সামাজিক অনাচারের ভোগবাদী। অর্থ-বিত্ত-প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতার অশুভ আঁতাতের প্রতিফল যখন ন্যক্কারজনকভাবে প্রকাশ পেতে শুরু করলো, তখন নারীর ওপরই এর দায়ভার অর্পণের বিশাল আয়োজন আমরা প্রত্যক্ষ করছি। পুরুষতান্ত্রিক কূপমণ্ডূক চিন্তার এই দাপট সামগ্রিকভাবে সমাজকে এবং বিশেষভাবে নারীকে নানাভাবে নিগৃহের শিকারে পরিণত করেছে। আমরা নারীর সাংস্কৃতিক অধঃপতনের শিকার হয়ে ওঠার জন্য যারা দায়ী, যারা এর ইন্ধনদাতা, তাদের মুখোশ উন্মোচনের দাবি করছি এবং এই ঘটনা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে সাংস্কৃতিক সামাজিক আন্দোলন বেগবান করার প্রয়োজনীয়তা সবার সামনে মেলে ধরছি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর