রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৩:০১ পূর্বাহ্ন

নারীদের দেশের কল্যাণে কাজ করার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

ভয়েসবাংলা প্রতিবেদক / ৬০ বার
আপডেট : মঙ্গলবার, ৯ আগস্ট, ২০২২

বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের আদর্শ ধারণ করে বাংলাদেশের নারীদের দেশের কল্যাণে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, শুধু চাওয়া-পাওয়া, ভোগ-বিলাসিতাই জীবন নয়; মানুষের জীবনে, মানুষের কল্যাণে কাজ করার অনেক সুযোগ আছে। আদর্শ নিয়ে চললে মানুষের জন্য অনেক অবদান রাখা যেতে পারে।

গতকাল মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে ‘বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৯২তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন’ এবং ‘বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব পদক-২০২২ প্রদান’ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন শেখ হাসিনা। রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।

দেশের নারীসমাজকে বঙ্গমাতার আদর্শ ধারণের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শুধু চাওয়া-পাওয়া, বিলাসিতা জীবন নয়। মানুষের কল্যাণে কাজ করতে হবে। আদর্শ মেনে চললে মানুষের জন্য অনেক অবদান রাখা যেতে পারে। আমার মা তার জীবনে নানা ধরনের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে গিয়েছেন। সবসময় বাবার পাশে থেকে তাকে অনুপ্রেরণা দিয়ে গিয়েছেন। মায়ের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়েই বাবার মহৎ অর্জন এ স্বাধীন বাংলাদেশ। মায়ের আদর্শ ধারণ করে ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত হয়ে বাংলাদেশের নারীরা মানুষের কল্যাণে কাজ করবেন বলে আমি প্রত্যাশা করি।

ফজিলাতুন নেছা মুজিবের মতো জীবনসঙ্গী পাওয়া বঙ্গবন্ধুর জন্য সৌভাগ্যের উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আব্বা এ রকম জীবনসাথি পেয়েছিলেন বলেই আমাদের দেশের সংগ্রামে সাফল্য অর্জন করা এবং স্বাধীনতা অর্জন সহজ হয়েছিল। বঙ্গমাতার সহযোগিতা পেয়েছিলেন বলেই বঙ্গবন্ধু মনে-প্রাণে দেশের জন্য কাজ করতে পেরেছিলেন বলে জানান তাদের কন্যা শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও আমার মা গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো দিয়েছেন, যেগুলো আমাদের স্বাধীনতা অর্জনে সহায়ক হয়েছে। ছয় দফা বাদ দিয়ে যদি আট দফায় চলে যেত আওয়ামী লীগ, তাহলে এ দেশে কখনো মানুষের মুক্তি আসত না।

৭ মার্চের ভাষণে বঙ্গবন্ধুর বক্তৃতায় বঙ্গমাতার মতামত গুরুত্ব পেয়েছিল বলেও জানান তাদের কন্যা শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, সবসময় আমার মা ছিলেন আমার বাবার ছায়াসঙ্গী। বাবার আদর্শকে তিনি ধারণ করেছিলেন। প্রতিটি কাজে তিনি সহযোগিতা করতেন। মা সংসার গুছিয়ে রাখতেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রতিটি কাজেই নিয়ম মেনে চলতেন। সেখানে তার মধ্যে কোনো হতাশা দেখিনি। যখন যেখানে যে অবস্থায় থাকতেন সেভাবে তিনি চলতেন এবং আমাদেরও তা শিখিয়েছেন।

১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষের সময়ের ঘটনা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আশপাশের মানুষ বঙ্গবন্ধুকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করত। তবে সে সময় সারা দেশের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে বঙ্গমাতার যোগাযোগ হতো। দেশের কোথায় কী হচ্ছে তাও আমার মা জানতেন। মা আব্বাকে বললেন, চালের দাম কিন্তু বেড়ে যাচ্ছে। আব্বা অফিসে এসে খবর নিলেন। অফিসে একজন তাকে বিভ্রান্ত করে ভুল তথ্য দিল। আব্বা মাকে বললেন, আমি তো ওদের খবর নিতে বললাম, ওরা বলল দাম কম। তখন মা আব্বাকে বললেন, তোমাকে সঠিক তথ্য দেয়নি। আমি টাকা দিচ্ছি, যে বলেছে তাকে বলো আমাকে এক মণ চাল কিনে দিতে।

পরে সেই দামে আর চাল কেনা যায়নি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তখন মা আব্বাকে বললেন, এরা সবসময় তোমাকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। তুমি এ ব্যাপারে সতর্ক থাকবে। অর্থাৎ রাষ্ট্র চালাচ্ছেন আমার বাবা, কিন্তু পাশে থেকেও ছোট ছোট বিষয় আমার মা খেয়াল করছেন। তারপর পদক্ষেপ নেয়ার কারণে চালের দাম কমে এসেছিল। ১০ টাকা কেজির চাল ৩ টাকায় নামিয়ে এনেছিলেন।

গতকাল অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ঢাকায় বঙ্গমাতা কর্মজীবী মহিলা হোস্টেলের নবনির্মিত ১০ তলা ভবন উদ্বোধন করেন। এ সময় তিনি মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়কে দেশের প্রতিটি জেলায় কর্মজীবী মহিলা হোস্টেল করার নির্দেশনা দেন। মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন কথাসাহিত্যিক আনোয়ারা সৈয়দ হক। আরো বক্তব্য রাখেন জাতীয় মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান চেমন আরা তৈয়ব। স্বাগত বক্তব্য রাখেন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হাসানুজ্জামান কল্লোল।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর