শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০৭:২৭ অপরাহ্ন

নতুন ইসির প্রথম ভোট কুমিল্লা সিটি করপোরেশন

ভয়েসবাংলা প্রতিবেদক / ৬২ বার
আপডেট : শুক্রবার, ৪ মার্চ, ২০২২

কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নতুন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) প্রথম ভোট হতে যাচ্ছে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনে (কুসিক)। ইতোমধ্যে এই সিটি নির্বাচনের উপযোগী হয়েছে। এ ক্ষেত্রে মে মাসের প্রথমদিকে কুসিকের নির্বাচন হতে পারে। এদিকে কুসিক নির্বাচনের পরপরই হতে পারে জেলা পরিষদ নির্বাচন। অবশ্য সংসদে উত্থাপিত জেলা পরিষদ আইনের সংশোধনী পাস না হওয়া পর্যন্ত ওই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার সম্ভাবনা নেই।  নির্বাচন কমিশন (ইসি) সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

বিদায়ী কে এম নূরুল হুদা কমিশনের সময়ে ২০১৭ সালের ৩০ মার্চ কুসিক নির্বাচন হয়েছিল। একইদিনে সুনামগঞ্জ-২ আসনের উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। কমিশন হিসেবে ব্যাপক বিতর্ক থাকলেও দায়িত্ব পাওয়ার পর প্রথম ভোট হিসেবে কুসিক নির্বাচনে বেশ সাফল্য দেখিয়েছিলেন হুদা কমিশন। নির্বাচিত কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১৭ মে। এক্ষেত্রে ভোটগ্রহণ করতে হবে আগামী ১৬ মে-এর মধ্যে।

আইন অনুযায়ী, প্রথম সভা থেকে পরবর্তী পাঁচ বছর হচ্ছে নির্বাচিত করপোরেশনের মেয়াদ। আর ভোটগ্রহণ করতে হয়, মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের ১৮০ দিনের মধ্যে। এক্ষেত্রে গত ১৭ নভেম্বর থেকে  এই সিটির নির্বাচনের সময় গণনা শুরু হয়ে গেছে।

জানা গেছে, নির্বাচনের উপযোগী হওয়ায় বিদায় হুদা কমিশনও চেয়েছিলেন তাদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে কুসিক নির্বাচন সম্পন্ন করতে। কিন্তু আইনি জটিলতা, কোভিড সংক্রমণসহ বিভিন্ন কারণে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে ইসি। ওই কমিশন জেলা পরিষদ নির্বাচন করতে চাইলেও সেটাও পারেনি। জেলা পরিষদের নির্বাচন পেন্ডিং রেখেই দায়িত্ব ছেড়েছেন হুদা কমিশন।

ইসির সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে, নতুন কমিশনের প্রথম বৈঠকেই কুসিক নির্বাচনের নথি উত্থাপনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে আইনি জটিলতা রয়েছে এখনও কিনা, সেটাও যাচাই করা হচ্ছে। ইসি সচিবালয় মনে করে, ইসির প্রথম বৈঠকেই তফসিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হতে পারে। না হলে স্বল্প সময়ের ব্যবধানে আরেকটি কমিশন বসে তফসিল ঘোষণা করা হবে। এক্ষেত্রে মার্চ মাসের শেষদিকে তফসিল ঘোষণা হতে পারে। রমজান ও ঈদের শেষে মে মাসের প্রথমদিকে কুসিকে ভোট গ্রহণের তারিখ নির্ধারণ  হতে পারে।

২০১৭ সালের ২৮ ডিসেম্বর তিন পার্বত্য জেলা বাদে দেশের ৬১টি জেলা পরিষদে একযোগে ভোট অনুষ্ঠিত হয়। পরের বছর (২০১৮) ১১ জানুয়ারি পরিষদের নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও ১৮ জানুয়ারি সদস্যরা শপথ নেন। এরপর ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিতে সব পরিষদের প্রথম বৈঠক হয়। আইন অনুযায়ী, পরিষদের প্রথম বৈঠক থেকে এর মেয়াদকাল পরবর্তী ৫ বছর। এ হিসেবে গত জানুয়ারির শেষ থেকে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে দেশের সব জেলা পরিষদের মেয়াদ শেষ হয়েছে। কিন্তু ইউনিয়ন পরিষদ (ইইউ) নির্বাচন সময়মতো শেষ না হওয়া এবং সংসদে পেন্ডিং জেলা পরিষদ আইনের সংশোধনী পাস না হওয়ায় এই ভোট করা সম্ভব হচ্ছে না। চলতি মাসের ২৭/২৮ তারিখে সংসদের অধিবেশন শুরু হতে পারে। ওই অধিবেশনে জেলা পরিষদ আইনের সংশোধনী পাস হলেই কেবল সরকার ওই নির্বাচন অনুষ্ঠানের উদ্যোগ নেবে। এছাড়া পরোক্ষ ভোটে অনুষ্ঠেয় জেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে সদ্য সমাপ্ত ইউপিসহ স্থানীয় সরকার পরিষদের সবগুলো প্রতিষ্ঠানের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের তালিকা সংগ্রহ করে ভোটার তালিকা প্রস্তুত করতে হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, আপাতত মনে হচ্ছে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনই বর্তমান কমিশনের প্রথম ভোট হতে যাচ্ছে। আইনগত কোনও জটিলতা না থাকলে মে মাসের প্রথমদিকেই এই ভোট করতে হবে। কারণ, ১৬ মে’র মধ্যে ভোট অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। নতুন কমিশন তার প্রথম সভাতে এই নির্বাচনের তফসিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন বলে মনে হচ্ছে। কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের বিষয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে আগেই আমরা রিকুইজিশন পেয়েছিলাম। তবে, আমাদের আরও একটু কোয়েরির দরকার পড়েছে। এজন্য আমরা স্থানীয় সরকার বিভাগের কাছে আরেকটি চিঠি আশা করছি। আগামী রবিবার এ বিষয়ে তথ্য চেয়ে চিঠি পাঠাবো। আশা করি, শিগগিরই তা পেয়ে যাবো।

জেলা পরিষদ নির্বাচনের বিষয়ে জানতে চাইলে অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, জেলা পরিষদ নির্বাচনের বিষয়ে আমরা সরকারের কাছ থেকে এখনও কোনও অনুরোধ পাইনি। তাছাড়া শতাধিক ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন এখনও বাকি রয়েছে। জেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের আগে এই নির্বাচন শেষ করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। এছাড়া যতদূর জানি, এ সংক্রান্ত একটি আইনও সংসদে পাসের অপেক্ষায় রয়েছে।

কুমিল্লা সিটিতে ২০১৭ সালের নির্বাচনে বিএনপি নেতা মনিরুল হক সাক্কু দ্বিতীয়বারের মতো  নির্বাচিত হয়েছিলেন। এই সিটিতে সে সময় ভোট হয়েছিল ১০৩টি কেন্দ্রে। মোট ভোটার ছিল ২ লাখ ৭ হাজার ৫৬৬ জন। ২০১১ সালে দু’টি পৌরসভাকে একীভূত করে গঠন করা হয় ‘কুমিল্লা সিটি করপোরেশন’ নামে নতুন একটি করপোরেশন। ওই বছরই প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। কুমিল্লা সিটি করপোরেশন ২৭টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর