বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ১১:১৩ অপরাহ্ন

ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী ওঠার কারণে নৌকাডুবি: মৃত্যু বেড়ে ৩২

ভয়েসবাংলা প্রতিবেদক / ১৪৮ বার
আপডেট : সোমবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২২

পঞ্চগড়ের বোদায় করতোয়া নদীতে নৌকাডুবির ঘটনায় আরও সাত মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। এ নিয়ে সোমবার সকাল পর্যন্ত মোট ৩২ জনের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে।

পঞ্চগড় ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক শেখ মো. মাহবুবুল ইসলাম জানান, ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ১৮ কিলোমিটার ভাটিতে দেবীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা দুটি এবং আরও ৩৫ কিলোমিটার ভাটিতে দিনাজপুরের খানসামা ফায়ার সার্ভিস দল করতোয়ার জিয়া ব্রিজের কাছে আরও এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে। এ ছাড়া ঘটনাস্থলের কাছাকাছি জালিয়াপাড়া এলাকা থেকে আরও একজনের লাশ উদ্ধার করেন স্থানীয়রা। পরে আরও তিন জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এখনও উদ্ধারকৃতদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, নৌকাডুবির ঘটনায় গতকাল ২৫ এবং সোমবার সকালে এক শিশুসহ আরও সাত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মৃতদের মধ্যে ৩১ জনকে শনাক্ত করা গেছে। তাদের মধ্যে নারী ১৬, শিশু ১০ ও পুরুষ ৫ জন। এখনও নিখোঁজ রয়েছেন কমপক্ষে ৫৮ জন। ঘটনাস্থলের আশেপাশে দ্বিতীয় দিনের মতো উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে ফায়ার সার্ভিসের ডুবরি দলের তিনটি ইউনিট। এখনও অ‌নে‌কে নি‌খোঁজ র‌য়ে‌ছেন ব‌লে নদীতী‌রে অ‌পেক্ষমাণ স্বজন‌দের সূ‌ত্রে জানা গে‌ছে।
ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী ওঠার কারণে নৌকাডুবি: তদন্ত কমিটি

ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী ওঠার কারণে নৌকাডুবির ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসন গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান ও পঞ্চগড় জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট দীপঙ্কর রায়। সোমবার সকালে জেলার বোদা উপজেলার মাড়েয়া বামনহাট ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে তদন্ত কাজ পরিচালনা করতে এসে প্রাথমিক তদন্তের বরাত দিয়ে এই মন্তব্য করেন তিনি।

দীপঙ্কর রায় বলেন, ‘আমরা রবিবার তদন্ত কাজ শুরু করেছি। প্রাথমিকভাবে আমাদের কাছে মনে হয়েছে অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়ার কারণে নৌকাটি ডুবে গেছে। তবে অন্য অনেক কারণও থাকতে পারে। আমরা এখনও তদন্ত কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। আশা করছি, আজকের মধ্যেই তদন্ত শেষ করে আগামীকাল মঙ্গলবার জেলা প্রশাসকের কাছে প্রতিবেদন জমা দিতে পারবো।

অতিরিক্ত যাত্রীর চাপ মোকাবিলায় ঘাট ব্যবস্থাপনায় ইজারাদারের দায়িত্বে অবহেলা ছিল কিনা, এমন প্রশ্নে তদন্ত কমিটির প্রধান বলেন, ‘আমরা ইজারাদারকে খুঁজে পাচ্ছি না। সম্ভবত তিনি পলাতক। সবদিক খতিয়ে দেখে তদন্ত কাজ করা হচ্ছে। তবে যাত্রীদের অসচেতনতার কারণে এমন দুর্ঘটনা হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে আমাদের কাছে মনে হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পঞ্চগড় জেলা পরিষদের অধীন আউলিয়ার ঘাট খেয়াঘাটটির ইজারাদার আব্দুল জব্বার। তিনি জেলার বোদা উপজেলার কুমারপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। দুর্ঘটনার বিষয়ে জানতে তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

এদিকে নৌকাডুবির ঘটনায় সোমবার বেলা ১১টা পর্যন্ত গত দুই দিনে ১৬ নারী ও ১০ শিশুসহ ৩২ মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সব মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। নিহতদের সৎকারে মাথাপিছু ২০ হাজার টাকা করে দিয়েছে জেলা প্রশাসন। এখনও কমপক্ষে ৫৮ জন নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানা গেছে। নিখোঁজদের সন্ধানে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দলের তিনটি ইউনিট দ্বিতীয় দিনের মতো করতোয়া নদীতে উদ্ধার কার্যক্রম চালাচ্ছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর