রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৩:৪৩ পূর্বাহ্ন

দেশের প্রতিটি সংগ্রাম ও অর্জনে শিল্পীদের অবদান রয়েছে: প্রধানমন্ত্রী

ভয়েসবাংলা প্রতিবেদক / ১৯৯ বার
আপডেট : রবিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২২

বাংলাদেশের প্রতিটি সংগ্রাম ও অর্জনে এ দেশের শিল্পী সমাজের অবদান রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ রবিবার জাতীয় জাদুঘরে অনুষ্ঠিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বৈচিত্র্যময় ও বহুমাত্রিক জীবন নিয়ে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব: মহাজীবনপট’ নামে শাহজাহান আহমেদ বিকাশের আঁকা দেড়শ’ ফুট আকারের চিত্রকর্মের প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ঘাতকরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে আমাদের মাঝ থেকে কেড়ে নিয়েছিল। সেই জন্য ২১ বছর এই জাতির জীবন থেকে হারিয়ে গেছে। আর এই ২১ বছর একটা চেষ্টাই করা হয়েছিল যেন জাতির পিতার নাম না থাকে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব নামটাই মুছে ফেলা…। সেটা ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস হোক আর বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস হোক, সবকিছু থেকেই তাকে সম্পূর্ণভাবে মুছে ফেলার একটি চেষ্টা হয়েছে। পাকিস্তানিরা যেমন করেছে, পঁচাত্তরের পর যারা স্বাধীনতাবিরোধী তারাও করেছেন। কিন্তু আমাদের যারা শিল্পী-সাহিত্যিক আছেন, তারা তাদের লেখনীর মধ্য দিয়ে, তাদের তুলির আঁচড়ে, কবিতার মাধ্যমে, গানের মাধ্যমে বিভিন্নভাবে এই নামটি চিরভাস্বর করে রেখেছেন। সেজন্য সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। কারণ, একটি প্রতিকূল অবস্থার মাঝেও প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে আমাদের শিল্পী, সাহিত্যিক, কবি থেকেই শুরু করে সকলেই কাজ করেছেন। আর আমরা রাজনৈতিকভাবেও চেষ্টা চালিয়েছি। আমাদের দেশের প্রতিটি অর্জনে, সংগ্রামে কিন্তু আমাদের শিল্পীদের অনেক অবদান রয়েছে।

‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব: মহাজীবনপট’-এর চিত্রকরের প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘এই অনন্য সৃষ্টিকর্মে আমাদের শিল্পী শাহজাহান আহমেদ বিকাশের অনুভূতি প্রকাশের মাধ্যমে যে তথ্যগুলো প্রকাশ হচ্ছে সেটা আমাদের অনেক কিছু জানিয়েছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, শিল্পী বিকাশ স্বাধীনতার সংগ্রাম থেকে শুরু করে সবকিছু চিত্রকর্মের মাধ্যমে তুলে ধরেছেন। আমি এবং আমার ছোট বোন রেহানা সত্যিই বিস্মিত হয়েছি। কারণ, একজন শিল্পী কখনও এমন চিত্রকর্ম আঁকতে পারে না—যদি না তারমধ্যে বঙ্গবন্ধুর প্রতি ভালোবাসা না থাকে, আত্মবিশ্বাস না থাকে! এটি একটি অসাধারণ শিল্পকর্ম।বঙ্গবন্ধু এ দেশের মাটি থেকে ওঠে আসা একজন নেতা। তার চিত্রকর্মটিও মাটির রঙ দিয়ে আঁকা হয়েছে। শিল্পীর এ কাজের প্রশংসা করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রথম সংবিধান হাতে লেখা এবং সেটার প্রথম ডিজাইন কিন্তু দেশের শিল্পী যারা ছিলেন তারাই করেছিলেন।’

চিত্রকলার প্রতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আগ্রহ ছিল বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘এটিকে এমনভাবে প্রদর্শন করা উচিত যেন সকল মানুষ এটি দেখতে পাই। শুধু এয়ারপোর্ট না টুঙ্গিপাড়ায়ও এমন একটা প্রদর্শনীর ব্যবস্থা হবে, এমন একটা জায়গায় করার চেষ্টা করছি… যারা টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে যান তারাও যেন এই চিত্রকর্মটি দেখতে পারেন। তার জন্য একটা স্থান সৃষ্টি করা হবে। তিনি বলেন, এই চিত্রকর্মটি অনলাইনেও যেন মানুষ দেখতে পারে সে ব্যবস্থাটি আমরা করবো। বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর, সেখানে আমরা এটিকে স্থাপন করবো। এই চিত্রকর্মটি সারা বাংলাদেশে যেন প্রদর্শিত হয় সে ব্যবস্থা আমরা করবো। সেই সঙ্গে আমাদের প্রবাসে যারা আছেন, তাদের দেখার ব্যবস্থা করবো। এটা করা খুব কঠিন কাজ নয়। এটা আমরা করতে পারবো। এছাড়া দেশের শিল্পীদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করার ঘোষণা দেন সরকারপ্রধান।

শিল্পী শাহজাহান আহমেদ বিকাশ বলেন, আমি সামান্য একজন চিত্রশিল্পী, আমি কিইবা করতে পারি। আমি আমার জায়গা থেকে একটা স্ক্রল পেন্টিং করেছি। তিনি বলেন, আমার নিজস্ব স্টুডিও নেই। আমি আমার ঘরের মধ্যে কাজ করি। আমার এই শিল্পকর্ম তৈরিতে আমার চেয়ে আমার স্ত্রী বেশি অবদান রেখেছে। আমার সন্তানরা কাজ করেছে। তাদের স্বাভাবিক জীবন ব্যাহত হয়েছে। শিল্পী বিকাশ এই চিত্রকর্মটি দেশের সব জেলায় নিয়ে যাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন। পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্বের যেসব দেশ ভ্রমণ করেছেন, সেসব দেশে চিত্রকর্মটির একটি কপি প্রদর্শনীর আগ্রহ প্রকাশ করেন তিনি।

উল্লেখ্য, শিল্পী শাহজাহান আহমেদ বিকাশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অলটারনেটিভ (ইউডা) চারুকলা বিভাগের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর