রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০২:৩২ পূর্বাহ্ন

দুধ বিক্রি করে প্রথম বুটজুতা কিনেছিলেন ভালেন্সিয়া

ভয়েস বাংলা রিপোর্ট / ৩৩ বার
আপডেট : সোমবার, ২১ নভেম্বর, ২০২২

উদ্বোধনী ম্যাচে স্বাগতিকরাই জেতে! ২০০৬ সাল থেকে এমন একটি রীতি চলে আসছিল। তবে সেই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারেনি কাতার। পারেনি এনার ভালেন্সিয়ার কারণে। ৩৩ বছর বয়সি এই ফরোয়ার্ডের জোড়া গোলেই জয়ের উল্লাসে মাতে ইকুয়েডর।
আল বায়িত স্টেডিয়ামে তিন মিনিটেই গোল পেয়েছিলেন ভালেন্সিয়া। কিন্ত অফসাইডের কারণ বাতিল হয় তা। যদিও খুব বেশি অপেক্ষায় থাকতে পারেনি। ১৬ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করে ইতিহাসের বুকে ঠাঁই করে নেন তিনি। কিন্তু এই ভালেন্সিয়াকে বেশ কাঠখড় পুড়িয়েই ফুটবলে আসতে হয়েছে। পরিবারে ছিল না আর্থিক স্বচ্ছলতা। তাই এমন একটি পরিবার নিশ্চয়ই চাইবে তার ছেলে পড়ালেখায় ডুবে থাকুক। তবে ভালেন্সিয়ার হৃদয় জুড়ে কেবলই ছিল ফুটবল। যার নেশায় স্কুল ফাঁকি দিতেও দ্বিধাবোধ করতেন না তিনি। অভাব-অনটনে অনেকবারই না খেয়ে দিন-রাত কাটিয়েছেন ভালেন্সিয়া। বাবার সঙ্গে হাত বাড়াতেন গরুর ফার্মের কাজে। গরুর দুধ বিক্রি করেই খেলার জন্য নিজের প্রথম বুটজুতা কিনেন ইকুয়েডর অধিনায়ক ।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইলকে দেওয়া পুরোনো এক সাক্ষাৎকারে ভালেন্সিয়া বলেছিলেন, ‘হ্যাঁ এটা সত্যি যে আমি খুবই গরীব পরিবার থেকে এসেছি। বুট পায়ে দৌড়ানোর পরিবর্তে আমাকে বাবার সঙ্গে গরুর ফার্মে কাজ করতে হয়েছে। দুধ বিক্রি করে নিজের প্রথম বুট কিনেছি আমি। ‘

খেলার প্রতি নিজের ভালোবাসা সম্পর্কে ভালেন্সিয়া বলেন, ‘ক্যাপওয়েল স্টেডিয়াম ছাড়া আমাদের ঘুমানোর জায়গা ছিল না। প্রায় সময়ই না খেয়ে দিন কেটেছে, কারণ আমার কাছে কোনো টাকা ছিল না। ফুটবলের প্রতি ভালোবাসাই আমাকে এতদূর এনেছে। স্কুল ফাঁকি দিয়ে আমার খেলার ঘটনা অহরহ। খেলাটির প্রতি আমি সবসময় নিবেদিত ছিলাম। আমার মা ও বাবা সবসময়ই তা বলত। কিন্তু খেলাটির প্রতি আমার ভালোবাসা এর চেয়ে শক্তিশালী। ‘

উদ্বোধনী ম্যাচের ইতিহাসে ভালেন্সিয়ার চেয়ে বেশি বয়সে গোল করতে পারেনি আর কোনো ফুটবলার। ইকুয়েডরের সুপারম্যান খ্যাত এই ফরোয়ার্ডের বর্তমান বয়স ৩৩ বছর ১৬ দিন। এর আগের রেকর্ডটি ছিল ইতালির আলেসান্দ্রো আলতোবেল্লির । ১৯৮৬ বিশ্বকাপে বুলগেরিয়ার বিপক্ষে গোলটি করার সময় তার বয়স ছিল ৩০ বছর ১৮৪ দিন।

ভালেন্সিয়া রেকর্ড গড়েছেন দেশের হয়েও। ইকুয়েডরের প্রথম ফুটবলার হিসেবে পাঁচ গোলের মাইলফলক স্পর্শ করেন তিনি। ২০১৪ বিশ্বকাপে ইকুয়েডরের করা তিন গোলের তিনটিই এসেছে ভালেন্সিয়ার পক্ষ থেকে।

গত বিশ্বকাপে খেলতে না পারলেও এবার কাতারে ঠিকই জায়গা করে নেয় ইকুয়েডর। সুচী ঘোষণার পরপরই তাই জয়ের স্বপ্নে রাত কাটাতে থাকেন ভালেন্সিয়া। জোড়া গোলে গতকাল সেই স্বপ্নকে সত্যিতে রুপ দেন তুরস্কের ফেনারবাচে ক্লাবের হয়ে খেলা এই ফরোয়ার্ড। ম্যাচ শেষে তিনি বলেন, ‘ড্র হওয়ার সময় আমি আমার ক্লাবে ছিলাম এবং দেখলাম যে আমি উদ্বোধনী ম্যাচে খেলতে যাচ্ছি। তখন থেকেই জয়ের স্বপ্নে অনেক রাত কাটিয়েছি। আমি জানতাম, আমাদের সবারই একই স্বপ্ন হবে তা। সৌভাগ্যবশত আমি গোলও করতে পেরেছি। ‘

হাঁটুর চোটে কাতারের বিপক্ষে পুরো ৯০ মিনিট খেলতে পারেননি ভালেন্সিয়া। চোট কতটা গুরুতর সেটা চিকিৎসকরাই বলতে পারবেন। তবে ২৫ নভেম্বর নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে খেলার ব্যাপারে আশাবাদী এই ফরোয়ার্ড।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর