রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০২:৫০ পূর্বাহ্ন

দুদকের ২৫ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান

ভয়েসবাংলা প্রতিবেদক / ১০০ বার
আপডেট : রবিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২১

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ২৫ কর্মকর্তা অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে বিভাগীয় ও বহিরাগত তদন্তের মুখোমুখি হয়েছেন। তদন্তের সময় এসব দুদক কর্মকর্তারা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের ছাড় দিয়ে অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন এবং কিছু কর্মকর্তা দুদক ও অন্যান্য সরকারি-বেসরকারি অফিস থেকে অবৈধ সুবিধা নিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এদের মধ্যে ৩ জন পরিচালক, ১০ জন উপ-পরিচালক, ৮ জন সহকারী পরিচালক ও ৫ জন উপ-সহকারী পরিচালক অভ্যন্তরীণ ও সরকারের একটি গোয়েন্দা সংস্থার অনুসন্ধানের মুখোমুখি হয়েছেন।

দুদক সূত্র জানায়, অনুসন্ধানের মুখোমুখি হওয়াদের মধ্যে সম্প্রতি অবসরে যাওয়া বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা এবং কয়েকজন বহিরাগতও আছেন। যাদের সঙ্গে দুদকের বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তাদের ঘনিষ্ঠ সর্ম্পক রয়েছে তাদেরকেও অনুসন্ধানের মুখোমুখি হতে হয়েছে। দুদক আশা করছে, সরকারের ওই গোয়েন্দা সংস্থা খুব শিগগিরই এসব কর্মকর্তার বিষয়ে একটি প্রতিবেদন জমা দেবে।

চলতি বছরের মার্চ মাসে সাবেক সচিব মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ দুদক চেয়ারম্যান হিসেবে যোগ দেন। তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই কমিশনের অভ্যন্তরীণ দুর্নীতি রোধ এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে ৭ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেন।

দুদকের একজন কমিশনার বলেন, কর্মকর্তাদের ওপর নজরদারি বৃদ্ধিসহ বেশকিছু বিষয় সংস্কারের সুপারিশ করে সাত সদস্যের এ কমিটি সম্প্রতি কমিশনের কাছে একটি গোপনীয় প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। কমিটি কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীর নাম উল্লেখ করেনি, কিন্তু কমিশনের কর্মকর্তাদের একাংশের অনৈতিক কর্মকাণ্ডের কিছু উদাহরণ তুলে ধরেছে।

দুদক কর্মকর্তারা বলেছেন, যেহেতু তদন্ত কর্মকর্তাদের কাজের অংশ হিসেবে যে কোনো ব্যক্তিকে তলব বা নোটিশ দেওয়ার অধিকার আছে। ফলে তদন্তকারীদের একটি অংশ মাঝে মধ্যে সন্দেহভাজন দুর্নীতিবাজদের সঙ্গে কিছু নিরীহ মানুষকেও নোটিশ দিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে। এভাবে তদন্তের অংশ হিসেবে নিরীহ মানুষের ওপর চাপ সৃষ্টি করে যাতে তারা অনৈতিক সুবিধা দেয়। এছাড়াও কিছু তদন্তকারী কর্মকর্তা আর্থিক সুবিধার বিনিময়ে সন্দেহভাজন দুর্নীতিবাজদের ছাড় দিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে অসম্পূর্ণ তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়।

চলতি বছরের ১২ আগস্ট এক আদেশে দুদক সচিব মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন হাওলাদার জানান, কমিশন তার কর্মকর্তাদের  দ্বারা ‘ইচ্ছাকৃতভাবে’ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলকে দুর্নীতি হিসেবে বিবেচনা করবে। কমিশন অসম্পূর্ণ তদন্ত এবং তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবে। তদন্ত চলাকালীন যৌক্তিক কারণ ছাড়া কোনো তদন্ত বা তদন্ত কর্মকর্তা বা দল পরিবর্তন করা যাবে না। এতে বলা হয়েছে, কর্মকর্তারা তাদের অদক্ষতার জন্য বিভাগীয় মামলার মুখোমুখিও হবেন।

কমিশনের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের বিষয়ে জানতে চাইলে কোনো মন্তব্য করেননি দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আব্দুল্লাহ। তবে তিনি বলেন, কমিশনের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি দুদকের ভিতরে জবাবদিহিতা প্রয়োজন। কমিশনকে স্বচ্ছ করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

দুদকের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে ট্রান্সপ্যারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, কমিশনের দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে দুদকের দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। অন্য সংস্থার দুর্নীতি প্রতিরোধ ও নজরদারি করার প্রতিষ্ঠানকে অবশ্যই দুর্নীতিমুক্ত হতে হবে। এতে কোনো নিরীহ ও দক্ষ কর্মকর্তা হয়রানি হবেন না।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর