রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৩:৪৩ পূর্বাহ্ন

ডিসি সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী: জনগণের পয়সায় বেতন, সেবা দেয়া সরকারি কর্মচারীর দায়িত্ব

ভয়েস বাংলা রিপোর্ট / ৩৯ বার
আপডেট : মঙ্গলবার, ২৪ জানুয়ারী, ২০২৩

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকারি তহবিল ব্যবহারে কৃচ্ছ্রসাধন করতে হবে।জনগণের ট্যাক্সের পয়সায় আপনাদের বেতন-ভাতা হয়। জনগণ ট্যাক্স দেয় সেবা পাওয়ার জন্য। সেবা দেওয়া প্রতিটি সরকারি কর্মচারীর দায়িত্ব। সেজন্য সেবার মনোভাব নিয়ে সত্য ও ন্যায়ের পথে অবিচল থেকে আপনাদের দায়িত্ব পালন করতে হবে।

মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের (পিএমও) শাপলা হলে জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) তিন দিনব্যাপী বার্ষিক সম্মেলন উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এবং প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া। স্বাগত বক্তব্য দেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন। এছাড়াও বিভাগীয় কমিশনারদের পক্ষে রাজশাহীর বিভাগীয় কমিশনার জিএসএম জাফরুল্লাহ এবং জেলা প্রশাসকদের পক্ষে নরসিংদীর জেলা প্রশাসক আবু নাঈম মোহাম্মদ মারুফ খান ও বান্দরবানের জেলা প্রশাসক ইয়াসমিন পারভিন তিবরিজি বক্তব্য দেন।

অনুষ্ঠানে স্থানীয় প্রশাসনের সার্বিক উন্নয়নের উপর একটি ভিডিও প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এ সম্মেলনের পরবর্তী অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে।

সম্মেলনের সময়সূচি অনুযায়ী, দ্বিতীয় দিনে ২৫ জানুয়ারি জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এবং প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর সঙ্গে ডিসিরা সাক্ষাত করবেন। সম্মেলনের তৃতীয় দিনে তারা রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে আরেকটি সাক্ষাৎ করবেন।

জেলা প্রশাসক সম্মেলন আয়োজন করার জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তৃণমূল পর্যায়ে সরকারের নীতি ও কর্মসূচি বাস্তবায়ন, সমস্যা এবং এর থেকে উত্তরণের কৌশল নির্ধারণে ‘জেলা প্রশাসক সম্মেলন’ কার্যকর ভূমিকা পালন করে। জেলা প্রশাসক সম্মেলনে সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের সঙ্গে মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সরাসরি মতবিনিময়ের সুযোগ সৃষ্টি হয়।

প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে জেলা প্রশাসকদের বহুবিধ কাজের মধ্যে কিছু বিষয়ের প্রতি বিশেষভাবে লক্ষ রাখার জন্য দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তিনি বলেন, খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা গ্রহণ করতে হবে। পতিত জমিতে ফসল ফলাতে হবে, কোনও জমি যেন অনাবাদি না থাকে সে লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে’। এসময় তিনি নিজেদের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে এবং জনগণকে এ ব্যাপারে উদ্বুদ্ধ করতে জেলা প্রশাসকদের প্রতি আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারি অফিসগুলোতে সাধারণ মানুষ যেন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বিঘ্নে যথাযথ সেবা পায় তা নিশ্চিত করতে হবে। সেবা প্রত্যাশীদের সন্তুষ্টি অর্জনই যেন হয় সরকারি কর্মচারীদের ব্রত’। তিনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর পাঠদান কার্যক্রমের মানোন্নয়নে উদ্যোগী হতেও জেলা প্রশাসকদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘অপেক্ষাকৃত দুর্গম এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি বিশেষ মনোযোগ দিতে হবে।

ডিসিদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন,আর্থিক কারণে ইভিএম কেনার প্রকল্প বাতিল করা হয়নি। এ সময়ে ইভিএম অগ্রাধিকার নয়। এর প্রয়োজন এখনই নয়, এমন খাতে ব্যয়ে সতর্কতা অবলম্বন করছে সরকার। এখন মূলত মানুষের খাদ্য, চিকিৎসা, কল্যাণকেই প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, দেশের জনগণকে অর্থনৈতিকভাবে সক্ষম করতে কাজ করছে বর্তমান সরকার। আর আপনারা দেশের মানুষের সেবক এ কথাটি মনে রাখতে হবে। জনগণের টাকায় সবকিছু করা হয়। তাই গুজব প্রতিরোধের পাশাপাশি পণ্যমূল্য স্বাভাবিক রাখতে বাজার মনিটরিং করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনা মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বৈশ্বিকভাবে অর্থনীতির ক্ষেত্রে একটা বিপর্যয় চলছে। তাই অপ্রয়োজনীয় খরচের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। এসময় নিজ নিজ জেলায় বিভিন্ন প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি নিয়ে ডিসিদের তদারকির কথাও বলেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, দেশের মানুষের খাদ্য ও চিকিৎসা ঠিক রাখতে হবে। আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে দেশের অগ্রযাত্রা ঠিক রাখতে হবে। কাজেই সব পরিস্থিতি উত্তরণ করেই আমাদের উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা ধরে রাখতে হবে।

স্বাগত বক্তব্যে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, জেলা প্রশাসকদের দেয়া মোট ২৪৫টি প্রস্তাবের ওপর ২৬টি কার্য অধিবেশনে আলোচনা করা হবে। সরকার প্রধানের পাশাপাশি বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মন্ত্রী ও সচিবরা আলোচনায় যোগ দেবেন এবং ডিসিদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেবেন বলে জানান তিনি। তিনি জানান, ২৬ জানুয়ারি শেষ হতে যাওয়া তিন দিনব্যাপী সম্মেলনে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি, স্বাস্থ্য, ভূমি, ব্যবস্থাপনা ও শিক্ষা সংক্রান্ত প্রস্তাবগুলো অগ্রাধিকার পাবে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ডিসিরা গত বছরের সম্মেলনে ২৪২টি প্রস্তাব রেখেছিলেন, যার মধ্যে ১৭৭টি বাস্তবায়ন করা হয়েছে এবং অবশিষ্ট ৬৬টি প্রস্তাবের বাস্তবায়ন চলছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর