রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০২:৪৯ পূর্বাহ্ন

জিম্বাবুয়ের কাছে হারলো বাংলাদেশ

ভয়েসবাংলা প্রতিবেদক / ৫০ বার
আপডেট : শনিবার, ৩০ জুলাই, ২০২২

তামিম ইকবাল-মাশরাফি মুর্তজা অবসরে। সাকিব আল হাসান ছুটিতে। আর মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহকে দেওয়া হয়েছে বিশ্রাম। অর্থাৎ, সিনিয়রদের ছাড়া নতুন বাংলাদেশের পথচলা শুরু হয়েছে জিম্বাবুয়ে সফরের টি-টোয়েন্টি সিরিজে। সেই পথের শুরুতে বড় ধাক্কা খেলো তারুণ্যনির্ভর বাংলাদেশ। প্রথম টি-টোয়েন্টিতে হেরেছে লাল-সবুজ জার্সিধারীরা।

আজ (শনিবার) হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে স্বাগতিকদের বিপক্ষে ১৭ রানে হেরেছে বাংলাদেশ। সিকান্দার রাজা ও ওয়েসলি মাদেভেরের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৩ উইকেটে ২০৫ রানের বিশাল সংগ্রহ দাঁড় করায় জিম্বাবুয়ে। সেই লক্ষ্যের পিছে ছুটে ৬ উইকেটে ১৮৮ রান করতে পারে নুরুল হাসান সোহানরা।

শেষ ওভারে দরকার ছিল ২৮ রান। এই সমীকরণ মেলানো সত্যি কঠিন ছিল বাংলাদেশের। তবে সামান্য সম্ভাবনাও তো জাগাতে পারেনি সফরকারীরা। অধিনায়ক হয়ে প্রথমবার মাঠে নামা সোহান দারুণ এক ইনিংস খেলেছেন সত্যি, তবে শেষ ওভারে কোথায় যেন হারিয়ে গেলেন। যে তানাকা চিভাঙ্গা আগের ওভারগুলো ছিলেন খরুচে, সেই তিনি শেষ ওভারে দিলেন ৪ ডট! ২৮ রানের প্রয়োজনীয়তার বিপরীতে আসলো মোটে ১০ রান।

লক্ষ্য অনেক বড়। শুরুটা তাই ভালো হওয়া প্রয়োজন ছিল বাংলাদেশের। কিন্তু শুরুতেই হারিয়ে বসে মুনিম শাহরিয়ারের উইকেট। ওই জায়গা থেকে দলকে দারুণ অবস্থানে নিয়ে আসেন লিটন দাস। কিন্তু ভুল বোঝাবুঝিতে অদ্ভুত রান আউটের শিকার হয়ে এই ব্যাটার ফেরার পর আবারও ব্যাকফুটে বাংলাদেশ।

২০০ রান টি-টোয়েন্টিতে কঠিন লক্ষ্য। তবে হরহামেশা এই লক্ষ্য পেরিয়ে যেতেও দেখা যায়। তাছাড়া প্রতিপক্ষ যেহেতু জিম্বাবুয়ে, তাই বাংলাদেশের মনোবল দৃঢ় হওয়ার কথা। একই সঙ্গে সিনিয়র ক্রিকেটারদের ছাড়া খেলতে নেমে তারুণ্যনির্ভর দলের প্রমাণের ব্যাপার ছিল। বোলিংয়ে সুবিধা করতে না পারায় ব্যাটিংয়ের দিকে ছিল পরিপূর্ণ নজর। যদিও বিশাল লক্ষ্যের পিছে ছুটতে গিয়ে শুরুতেই উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

মন্থর শুরুর পর ৮ বলে মাত্র ৪ রানে ফিরে যান মুনিম। ওয়েলিংটন মাসাকাদজার বলে তানাকা চিভাঙ্গার হাতে ধরা পড়েন এই ওপেনার। তার বিদায়ের পর অবশ্য তাণ্ডব চালিয়েছেন লিটন। ওয়ান ডাউনে নামা এনামুল হককে সঙ্গে করে দ্রুত রান বাড়িয়ে নিচ্ছিলেন। একের পর এক বাউন্ডারি ছাড়া করতে থাকা এই ব্যাটারের শেষটা যদিও হয়েছে হতাশায়।

শন উইলিয়ামসের বলে শর্ট ফাইন লেগে খেলতে চেয়েছিলেন লিটন। যদিও বল উঠে গিয়ে ফিল্ডার রিচার্ড এনগারাভা হাতের ওপর পড়ে। এই ফিল্ডার মুঠোতেও নিয়েছিলেন বল, তবে শেষ পর্যন্ত জমাতে পারেননি। ওই মুহূর্তে রান নেওয়ার জন্য দৌড়েছিলেন অন্যপ্রান্তে থাকা এনামুল। কিন্তু ভুল বোঝাবুঝিতে লিটন শুরুতে জায়গা থেকে নড়েননি। ইতিমধ্যে হাত ফসকে যাওয়া বল তুলে ছুঁড়ে মারেন এনগারাভা। বোলিং প্রান্তে উইলিয়ামস সহজেই ভেঙে দেন স্টাম্প। ফলে ৩২ রানে শেষ হয় লিটনের ইনিংস। ১৯ বলের ইনিংসটি তিনি সাজান ৬ বাউন্ডারিতে।

এনামুলও বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি ক্রিজে। সিকান্দার রাজার শিকার হয়ে ২৭ বলে ২৬ রানে ফিরে যান। এরপর আশার আলো হয়ে আসেন আফিফ হোসেন। ভালো শুরু পেলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি তিনি। ৮ বলে ১০ রানে তার বিদায়। ওই অবস্থায় ১০৬ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ। তবে নাজমুল হোসেন শান্ত ও সোহানের ব্যাটে লড়াইয়ে ফেরে আবার।

দুজনই আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে দ্রুত রান তুলতে থাকেন। আস্কিং রেটও কমতে থাকে। কিন্তু শান্ত আউট হয়ে গেলে আবারও ধাক্কা। বাঁহাতি ব্যাটার ২৫ বলে ৩ বাউন্ডারি ও ১ ছক্কায় করেন ৩৭ রান। যদিও সোহান খেলতে থাকেন আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে। বিশাল সব ছক্কায় লাল-সবুজ ক্যাম্পে আশা বাঁচিয়ে রাখেন। কিন্তু শেষ দিকে আর পারেননি রানের হিসাব মেলাতে। শেষ পর্যন্ত ২৬ বলে ১ বাউন্ডারি ও ৪ ছক্কায় বাংলাদেশ অধিনায়ক অপরাজিত থাকেন ৪২ রানে। আর মোসাদ্দেক হোসেনের ব্যাট থেকে আসে ১৩ রান।

জিম্বাবুয়ের সবচেয়ে সফল বোলার লুক জঙ্গোয়ে। এই পেসার ৪ ওভারে ৩৪ রানে নিয়েছেন ২ উইকেট। আর একটি করে উইকেট এনগারাভা, মাসাকাদজা ও রাজার।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

জিম্বাবুয়ে: ২০ ওভারে ২০৫/৩ (মাদেভেরে ৬৭, রাজা ৬৫*, উইলিয়ামস ৩৩, আরভিন ২১, চাকাভা ৮; মোস্তাফিজ ৪-০-৫০-২, মোসাদ্দেক ৩-০-২১-১, নাসুম ৪-০-৩৮-০, তাসকিন ৪-০-৪২-০, শরিফুল ৪-০-৪৫-০)।

বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৮৮/৬ (সোহান ৪২*, শান্ত ৩৭, লিটন ৩২, এনামুল ২৬, মোসাদ্দেক ১৩, আফিফ ১০, ‍মুনিম ৪; জঙ্গোয়ে ৪-০-৩৪-২, মাসাকাদজা ৩-০-২৩-১, রাজা ৩-০-৩০-১)।

ফল: জিম্বাবুয়ে ১৭ রানে জয়ী। ম্যাচসেরা: সিকান্দার রাজা।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর