১৫ থেকে ২৫ শতাংশ ভোট পড়েছে: সিইসি: সিইসি
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, ছয় আসনের উপ-নির্বাচনে ভোটে অনিয়মেয় উল্লেখযোগ্য কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি, কোনো ভোট ডাকাতি হয়নি। আমরা যে তথ্য পেয়েছি, তাতে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খলভাবে নির্বাচন হয়েছে। তবে ভোটার উপস্থিতি কম ছিল। তারা অনুমান করছেন, ১৫ থেকে ২৫ শতাংশ ভোট পড়েছে। ভোট গণনা শেষে এটি সুনির্দিষ্টভাবে বলা যাবে।
বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) ছয়টি সংসদীয় আসনের উপনির্বাচনে ভোটগ্রহণ শেষে রাজধানীতে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সিইসি এসব কথা বলেন। গত কয়েকটি উপনির্বাচনে কমিশন সিসিটিভিতে পর্যবেক্ষণ করলেও এই ৬টি উপনির্বাচন সিসিটিভি দিয়ে তারা পর্যবেক্ষণ করেনি।
সিইসি বলেন, ছয় আসনের উপ-নির্বাচনে ৮৬৭টি ভোটকেন্দ্রে ইভিএমে ভোটগ্রহণ হয়েছে। সাড়ে আটটা থেকে বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলেছে। ভোটার ছিল ২২ লাখ ৫৪ হাজার ২১৭ জন। উপস্থিতির হার তুলনামূলক কম ছিল। আনুমানিক ১৫ থেকে ২৫ শতাংশ হতে পারে। নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।তিনি বলেন, আমরা স্থানীয় প্রশাসন থেকে তথ্য নিয়েছি। গণমাধ্যমে সার্বক্ষণিক চোখ রেখেছি। অনিয়মন বা কারচুপির উল্লেখযোগ্য কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। কোনো ব্রেকিং নিউজ স্ক্রল হয়নি। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অনলাইন নিউজ পোর্টালগুলো দেখেছি। সেখানেও কোনো তথ্য বা সংবাদ পরিবেশিত হতে দেখিনি। কমিশনের নিজস্ব পর্যবেক্ষণ সেল থেকেও আমরা তথ্য নিয়েছি। ছয়টি, চারটি জায়গায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। একটি ককটেল তাজা পাওয়া গেছে। দুই-একটা ককটেল বিস্ফোরিত হয়েছে। মিডিয়ার তথ্যের সঙ্গে এই তথ্যের সঙ্গে যথেষ্ট মিল আছে। তবে এটা ভোটকেন্দ্রের ভেতরে নয়, বাইরে।
কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ভোটগ্রহণ সাধারণভাবে বলা চলে শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এখন মেশিনের মাধ্যমে গণনা শুরু হয়েছে। আশা করছি দুই-চার ঘণ্টার মধ্যেই রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে ভোটের ফলাফল আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা হবে। সিসি ক্যামেরাও ছাড়াও নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা যে তথ্য পেয়েছি, তাতে বলবো নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, তারা সার্বক্ষণিক মাঠ পর্যায় থেকে তথ্য নিয়েছেন। টেলিভিশন ও অনলাইন সংবাদ মাধ্যমে নজর রেখেছেন। অনিয়মের উল্লেখযোগ্য কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি। কয়েকটি জায়গায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। দুয়েকটি ককটেল বিস্ফোরিত হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কয়েকটি ভোটকেন্দ্রে গোপন কক্ষে ডাকাত দেখা গেছে। এমন সংবাদ গণমাধ্যমে এসেছে। এ বিষয়ে সাংবাদিকদের সিইসি বলেন, গণমাধ্যমের খবর দেখে তারা ওই এলাকা থেকে তথ্য নিয়েছেন। একটি কেন্দ্রে একজন নারী ভোটার তার দুই বাচ্চাকে নিয়ে বুথে ঢুকেছেন। আরেকটি কেন্দ্রে এক ভদ্রমহিলা একজন অসুস্থ লোককে ভোট দিতে ভেতরে প্রবেশ করেছিলেন। এগুলো হতে পারে। এগুলোকে আমরা খুব গুরুতর বা ব্যাপক মনে করছি না। ভোটের ফলাফল পালটে যেতে পারে, এ ধরনের ঘটনা আমাদের কাছে মনে হয়নি।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, একটি কেন্দ্রে একটি মহিলা তার বাচ্চাকে নিয়ে ঢুকেছেন। আরেকটা জায়গায় আরেকজন মহিলা একজন বয়স্ক লোককে নিয়ে প্রবেশ করেছেন। এটাকে আমরা গুরুতর অপরাধ মনে করছি না যে, ভোটের ফলাফল পাল্টে যেতে পারে, এটা আমাদের কাছে মনে হয়নি। ভোট ডাকাতি হয়েছে এরকম কোনো তথ্য পায়নি। এদিক থেকে আমরা বলবো নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে সুষ্ঠু হয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের নিয়ন্ত্রণ নেই, এটা মেনে নিতে রাজি নই। সর্বাত্মভাবে পর্যবেক্ষণ করেছি। তবে একেবারে নিরঙ্কুশ, নাকি নিয়ন্ত্রণ… আমাদের জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসক, আমাদের রিটার্নিং কর্মকর্তা আছে; সেই দিক থেকে ভোট ডাকাতি হয়েছে এই রকম তথ্য আমরা পাইনি। আমরা আমাদের নিষ্ঠা, দক্ষতা, সততা এবং যে মনোবল সেটা দিয়ে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অর্থবহ ও ফলপ্রসূ করার চেষ্টা করবো। নিরুত্তাপ হতে পারে। কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা না হলে নিরুত্তাপ হতে পারে। সিইসি বলেন, ইসিকে নির্ভর করতে হবে স্থানীয় প্রশাসনের ওপর। ইসিকে প্রশাসনের ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে হয়, নির্ভরও করতে হয়। নিরপেক্ষ থাকতে তাদের বারবার বার্তা দেওয়া হচ্ছে। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী থেকে তারা যে সহায়তা পাচ্ছেন, তা নির্ভরযোগ্য, তাতে তারা সন্তুষ্ট।