শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০৮:৫৩ অপরাহ্ন

সরবরাহ কম, পোলট্রি ফিড, ওষুধ ও তেলের দাম বাড়ায় বেড়েছে ডিমের দাম

ভয়েসবাংলা প্রতিবেদক / ৪৭ বার
আপডেট : বৃহস্পতিবার, ১৮ আগস্ট, ২০২২

হঠাৎ করে অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে ডিমের দাম। খামারে ডিমের হালি ৪৪ টাকা বিক্রি হলেও বাজারে ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পোলট্রি ফিডের দাম প্রায় দ্বিগুণ, ওষুধের দাম বেড়েছে, উৎপাদন হ্রাস, তেলের দাম বাড়ায় ভাড়া বৃদ্ধি ও চাহিদার চেয়ে সরবরাহ কম হওয়ায় ডিমের দাম বেড়েছে বলে জানিয়েছেন পোলট্রি ব্যবসায়ী ও খামারিরা।

এ দাম বাড়া নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে চলছে আলোচনা। বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ গ্রাহকরা। বর্তমানে খামারে ডিমের পিস ১১ টাকা বিক্রি হচ্ছে। কয়েকদিন আগেও যা ছিল ৯ টাকা। তখন বাজারে বিক্রি হতো ১০ টাকা। বর্তমানে বাজারে বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ১৩ টাকার বেশি।

খামারি বশির গাজী বলেন, ‌আমার খামারে ৩৬ হাজার মুরগি ছিল। এখন আছে ১৪ হাজার। প্রতিদিন ছয়-সাতটি মারা যায়। এজন্য কিছু বিক্রি করে দিয়েছি। এখন সাত হাজার মুরগি নিয়মিত ডিম দিচ্ছে। তাতে চাহিদা পূরণ করা যাচ্ছে না। দাম বাড়লেও চাহিদা বেশি। তিনি বলেন, পোলট্রি ফিডের দাম অনেক বেশি, ওষুধের দামও বেড়েছে, তেলের দাম বাড়ায় যাতায়াত ভাড়া বেড়েছে, সেইসঙ্গে উৎপাদন কমেছে। এসব কারণে ডিমের দাম বেড়েছে। সব খরচ মিলিয়ে আগে ডিমের পিস বিক্রি করতাম সাত টাকা। মাসখানেক আগে বিক্রি করেছি ৯ টাকা। এখন বিক্রি করছি ১১ টাকা। বশির গাজী বলেন, মুরগির সব খাবারের দাম বেড়েছে। আগে ১০০ কেজি খাবারের দাম ছিল দুই হাজার ৮০০ টাকা। এখন খাবারের দাম পাঁচ হাজার ২০০ টাকা। দুই হাজার ৪০০ টাকা বেড়েছে। ১৮ ধরনের সামগ্রী মিশিয়ে খাবার তৈরি করা হয়। কম দামে ডিম বিক্রি করলে লোকসান হয়।

খামারি পান্না মিয়া বলেন, এক হাজার ৫০০ মুরগি দিয়ে খামার শুরু করেছিলাম। এখন এক হাজার ১০০ মুরগি আছে। ৪০০ মুরগি ইতোমধ্যে মারা গেছে। এখন ৪৮০টি নিয়মিত ডিম দিচ্ছে। আগে এক কেজি খাবারে খরচ পড়তো ২৮ টাকা। এখন পড়ছে ৫২ টাকা। আগে পানি বিশুদ্ধকরণ ওষুধের দাম ছিল ৪০০ টাকা, এখন ৪৮০ টাকা। মুরগির ভিটামিনের দাম ছিল এক হাজার ২০০ টাকা, এখন এক হাজার ৭০০ টাকা। সব খরচ মিলিয়ে আগে প্রতি পিচ ডিম সাত টাকা বিক্রি করতাম। এক মাস আগে ৯ টাকায় বিক্রি করেছি। এখন ১১ টাকার নিচে বিক্রি করলে লোকসান গুনতে হয়।

khulna3

মুরগি ও ডিম ব্যবসায়ী মনির হোসেন বলেন, তেলের দাম বাড়ায় পরিবহন খরচ বেড়েছে। এমন অজুহাতে ডিমের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন খামারিরা। এজন্য বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে আমাদের। এর আগে কখনও এত দাম দিয়ে ডিম কিনতে হয়নি। ডিমের দাম সবসময় ওঠানামা করে, এটা স্বাভাবিক। কিন্তু সম্প্রতি ৫৫ টাকা ডিমের হালি উঠেছে। এটি অস্বাভাবিক। এর আগে এত টাকা ডিমের হালি উঠেনি।নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ছে ঠিকই, কিন্তু আমাদের আয় বাড়ছে না। ফলে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষজন চরম বিপাকে পড়েছেন। ডিমের পিস কীভাবে ১৪ টাকা হয় তা আমার বুঝে আসে না।

khulna2

বর্তমানে খামারে ডিমের পিস ১১ টাকা বিক্রি হচ্ছে। কয়েকদিন আগেও যা ছিল ৯ টাকা

পোলট্রি ফিড ব্যবসায়ী মো. মামুনুর রহমান বলেন, ২০১৯ সালের পর থেকে ধারাবাহিকভাবে পোলট্রি ফিডের দাম বাড়ছে। আমরা অনেক আগে থেকেই রেডিমিক্স খাবার ৫০ কেজির বস্তা এক হাজার ৩০০ থেকে দুই হাজার ২০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করছি। এখন দাম বাড়ছে চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ না থাকার কারণে। সরবরাহ স্বাভাবিক হলে দাম কমবে।

হঠাৎ তেলের দাম বাড়ায় এবং চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ না থাকায় সব খাবারের দাম বেড়ে গেছে। দুদিন আগে ভুট্টার কেজিতে চার টাকা বেড়েছে। সয়াবিন খৈলের দাম কেজিতে দুই টাকা বেড়েছে। পোলট্রি ভ্যাকসিনের দাম ২০ শতাংশ বেড়েছে। আগে যেটা এক হাজার ৩০০ ছিল, এখন এক হাজার ৮০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। অন্যান্য ওষুধের দামও ১০ শতাংশ হারে বেড়েছে। পাশাপাশি ডিম পরিবহনে গাড়ি ভাড়া ২০ টাকা থেকে বেড়ে ৩০ টাকা, পোলট্রি খাবার পরিবহনের খরচ ৩০ থেকে ৪৫ টাকা করা হয়েছে। এসবের প্রভাব পড়েছে ডিমের বাজারে। এজন্য দাম বেড়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর