রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৩:৪৪ পূর্বাহ্ন

গতবছরে কত টাকার ডিজিটাল বিজ্ঞাপন প্রচার হয়েছে তা জানতে চায় সরকার

ভয়েসবাংলা প্রতিবেদক / ১৮৭ বার
আপডেট : বুধবার, ১০ আগস্ট, ২০২২

সোশাল মিডিয়ায় (সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম) গত এক বছরে কত টাকার ডিজিটাল বিজ্ঞাপন প্রচার হয়েছে তার তথ্য জানতে চায় সরকার। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোর মধ্যে রয়েছে গুগল, হোয়াটসঅ্যাপ, ইয়াহু, অ্যামাজন, ইউটিউব, ফেসবুক, ইমো (আইএমও) ইত্যাদি। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনে পাঠানো চিঠিতে গত এক বছরে (২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত) মাস ভিত্তিতে সব ধরনের তথ্য জানাতে বলা হয়েছে।

টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি এই তথ্য জানতে চেয়েছে। কমিশনের উপ-পরিচালক নাহিদুল হাসান স্বাক্ষরিত এই চিঠি বুধবার (১০ আগস্ট) দেশের সব মোবাইল ফোন অপারেটর, সব আইএসপি (ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার), দেশের সব টি-ভ্যাস (টেলিকম ভ্যালু আডেড সার্ভিস) অপারেটর, মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোর সংগঠন অ্যামটব, আইএসপিগুলোর সংগঠন আইএসপিএবি, এটুপি এমএসএস এগ্রিগেটর অপারেটরদের শীর্ষ নির্বাহীদের বরাবর এই পত্র পাঠানো হয়েছে।

চিঠিতে মাস (কোন মাসে কত ব্যয়), ডিজিটাল বিজ্ঞাপন প্রচারের মাধ্যম (গুগল, হোয়াটসঅ্যাপ, ইয়াহু, অ্যামাজন, ইউটিউব, ফেসবুক, ইমো), বিজ্ঞাপনের অর্থের হার, অর্থ পরিশোধ মাধ্যমের বিবরণ, মুদ্রা (টাকা ও ডলার), মোট প্রদানকৃত অর্থ ইত্যাদি ছকে উল্লেখ করে আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে বিটিআরসিতে পাঠাতে বলা হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি লক্ষ করা যাচ্ছে বাংলাদেশে প্রচলিত বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে বিভিন্ন ধরনের ডিজিটাল বিজ্ঞাপন প্রচার হচ্ছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে আপনার প্রতিষ্ঠান হতে গুগল, হোয়াটসঅ্যাপ, ইয়াহু, অ্যামাজন, ইউটিউব, ফেসবুক, ইমো ইত্যাদি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ অন্য কোনও ইন্টারনেটভিত্তিক ডিজিটাল মাধ্যমে বিগত ২০২১ সালে প্রদানকৃত মাস ভিত্তিতে সব ধরনের ডিজিটাল বিজ্ঞাপনের তথ্য আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে কমিশন বরাবরে’ পাঠাতে হবে।

তবে দেশের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কয়েকটি বিশেষ খাত বা অপারেটরের মতো ই-কমার্স সাইটগুলো বা উদ্যোক্তারা সোশাল মিডিয়ায় প্রচুর বিজ্ঞাপন প্রচার করে। চিঠি সেই খাতের সংগঠন বা উদ্যোক্তাদের পাঠানো হয়নি। ফলে প্রতিবেদন এলেও কখনোই এই খাতের সঠিক চিত্র বোঝা যাবে না। ই-কমার্স খাত থেকে প্রচুর বিজ্ঞাপন ডিজিটাল মাধ্যমে প্রকাশ হয়।

বেসিসের সাবেক সভাপতি ফাহিম মাশরুর জানান, প্রতি বছর ডিজিটাল বিজ্ঞাপনে বাংলাদেশ থেকে ব্যয় হয় আড়াই হাজার কোটি টাকার বেশি। এগুলো শুধু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেই যায় না। অনেক অ্যাড নেটওয়ার্কের মাধ্যমেও যায়। তিনি বলেন, ডিজিটাল বিজ্ঞাপন সাধারণত দুটি মাধ্যমে যায়। একটি হলো লিগ্যাল চ্যানেলে (বৈধভাবে)। অপরটি বিদেশ থেকে সোশাল মিডিয়াগুলোতে দেওয়া হয় সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর হেড অফিস (বিদেশের কার্যালয়) থেকে সরাসরি। বিদেশ থেকে দেওয়া হলেও সেসব বিজ্ঞাপনে টার্গেট করা হয় দেশীয় ক্রেতাদের। এটা সুস্পষ্ট মানি লন্ডারিং। এ বিষয়ে সরকার কঠোর পদক্ষেপ নিলে অবৈধ কাজটা বন্ধ হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে দেশের ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন আইএসপিএবির সভাপতি ইমদাদুল হক বলেন, আমরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোনও বিজ্ঞাপন দেই না। কোনও আইএসপি প্রতিষ্ঠান দেয় না। আমাদের কোনও কাজে লাগে না এই বিজ্ঞাপন। তিনি জানান, তাদের কাছ থেকে যারা সেবা নেন তারা ব্যক্তিগতভাবে দিয়ে থাকতে পারেন। তিনি মনে করেন, দেশের ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশি বেশি বিজ্ঞাপন প্রচার করে, কনটেন্ট বুস্ট করে। ফলে তারাই বলতে পারবে কী পরিমাণ অর্থ এই খাত দিয়ে যায়।

এই বিষয়ে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন ই-ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল ওয়াহেদ তমালের কাছে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো বছরে ডিজিটাল মাধ্যমে কত টাকার বিজ্ঞাপন প্রচার করে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমাদের কাছে কোনও ডাটা নেই। এটা সাধারণ প্রতিষ্ঠানগুলো নিজ উদ্যোগে করে থাকে।

নিজের নাম ও পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে একজন ই-কমার্স উদ্যোক্তা বলেন, ফেসবুকে বুস্ট করা, বিজ্ঞাপন না দিলে পণ্য বিক্রিই তো হবে না। তিনি একসময় প্রতিদিন ৮-১০টি কনটেন্ট বুস্ট করতেন, একাধিক বিজ্ঞাপন দিতেন। এখন কিছুটা কমিয়েছেন। তার প্রতিদিন বুস্ট ও বিজ্ঞাপন বাবদ ব্যয় হয় ১০০ ডলারের মতো। আগে আরও বেশি ছিল। তিনি জানালেন, অনেক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের প্রতিদিনের বিজ্ঞাপন বাজেট আরও বেশি ছিল। বিভিন্ন মাধ্যমে তিনি বিজ্ঞাপন বিল পরিশোধ করতেন বলে তিনি জানান। বড় বড় প্রতিষ্ঠান বা করপোরেট প্রতিষ্ঠানের বাজেট তো আরও বেশি থাকে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর