শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০৯:৫৮ অপরাহ্ন

খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ণতার ইতিহাসের কোনায় নাম লেখা থাকবে: মতিয়া চৌধুরী

ভয়েস বাংলা রিপোর্ট / ১৫ বার
আপডেট : সোমবার, ১০ এপ্রিল, ২০২৩

ক্ষমতাকে উপভোগের বস্তু বানাননি উল্লেখ করে জাতীয় সংসদের উপনেতা মতিয়া চৌধুরী বলেছেন, উনি (শেখ হাসিনা) দায়িত্ব দিয়েছেন, এই দেশে যদি খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ণতা বা ইতিহাস লেখা হয়— তাহলে কোনা দিয়ে হলেও এই মতিয়া চৌধুরীর নাম একটু হলেও লেখা থাকবে। এই সুযোগ শেখ হাসিনা ছাড়া আর কেউ দেন নাই।

সোমবার (১০ এপ্রিল) জাতীয় সংসদ সংসদের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ১৪৭ বিধিতে উত্থাপন করা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তিনি। ১৯৭৯ সালে মতিয়া চৌধুরী আওয়ামী লীগে যোগ দেন। সেই কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যখন আওয়ামী লীগের অফিসে টেলিফোন লাইন, বিদ্যুৎ ছিল না, তখন আমি আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছি।

মতিয়া চৌধুরী ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি ছিলেন। পরে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপের) নেতা ছিলেন। তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়ার পরে রাজনৈতিক সহকর্মীরা বিবৃতি দিয়েছিল বলে জানিয়ে বলেন, ‘তারা বলেছিল— ক্ষমতার লোভে মতিয়া চৌধুরী আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছে। কোথায় ক্ষমতা? কোথায় আওয়ামী লীগ? কার্যালয়ে টেলিফোন কানেকশান নাই। সাজেদা আপা আসতেন, ফোন করার দরকার হলে নিচে বাটার দোকানে গিয়ে কল করতে হতো। আর বিদ্যুৎ ছিল না বলে উনি পাঁচ টাকা দিতেন, আমাদের পিয়ন গিয়ে চারটা হারিকেন ভরে তেল নিয়ে আসতেন। খুচরা পয়সা দিলে সাজেদা আপা বলতো, তুই চা খাইস। সেদিন আমার বিরুদ্ধে এ বিবৃতি দিয়ে কামান দাগা হলো।’

তিনি বলেন, ‘১০ জানুয়ারি (১০ ডিসেম্বর হবে) যখন যোগদান করি, তখন আওয়ামী লীগের অত্যন্ত… বলতে গেলে নাম্বার ওয়ান নেতা এসে বললেন, চৌধুরী এই পার্টিতে জয়েন কইরেন না। এই পার্টি আপনি করতে পারবেন না। আমি নামটা না-ই বলি…ঘড়ির দিকে তাকিয়ে বললাম, ৫টার সময় যোগদানের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি গেছে। এখন বাজে তিনটা ৩৫। তাকে ভাই বলে সম্বোধন করে বললাম, আপনি চিন্তা কইরেন না— আমি আওয়ামী লীগ অফিস ঝাড়ু দেবো। কোনোদিন পদপদবি চাইবো না।

মতিয়া চৌধুরী অভিযোগ করে বলেন, ‘যদি সত্যিকারের নেতা হতেন, আমার এই কথারে ধরে রাইখা…যখন ৮১টা সম্মেলন হলো, আমি ৭৯টায় যোগদান করেছিলাম। আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দুই বছর পার হয়ে গেছে। শেখ হাসিনার অবর্তমানে যখন কমিটি হলো— আমাকে কেন্দ্রীয় কমিটির একটা সদস্য পর্যন্ত রাখা হয়নি। ৮৬ সালে যখন সম্মেলন হলো, তখন আমি শেখ হাসিনার হাত ধরে কৃষি সম্পাদক হই। উনি কৃষি সম্পাদক হিসেবে যে মর্যাদা দিয়েছিলেন, সরকার গঠন হলে কৃষির জন্য  সুবিধা আমি জনগণের জন্য বিলিয়ে দিয়েছি।’

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রথম সাক্ষাতের কথা উল্লেখ করে ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘৬ দফা দেওয়ার পরে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আমার প্রথম দেখা হয় জেলখানায়। আমি মনে করি, বিধাতার ইচ্ছা, জেলখানায় অনেকেই গেছেন। কলমও নিতে দেয় না। সবকিছু জেল গেটে জমা দিতে হয়। আমি সবকিছু জমা দিচ্ছি, জেলার লিখছে। এই সময় পেছন থেকে একটা আশ্বস্তের হাত। আমি চমকে পেছনে ফিরে তাকাতে দেখলাম বঙ্গবন্ধু। সেই হাত দিয়ে উনি একটা কথাই বললেন— মতিয়া ভয় পাইয়ো না। বঙ্গবন্ধু আজকে আসমানের কোন স্তরে আছেন, আমি জানি না। তাঁর উদ্দেশে শুধু বলতে চাই, আমি ভয় পাইনি। ভয় পাবো না। চিত্ত যেথা ভয়শূন্য, উচ্চ যেথা শির। যেটা আপনি বলতেন। মাথা উঁচু করে যাতে মরতে পারি, এই দোয়াটুকু করবেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর