রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০২:৩২ পূর্বাহ্ন

করোনাভাইরাস বায়ুতে পাঁচ মিনিটেই সংক্রমণ ছড়ানোর ৯০ শতাংশ ক্ষমতা হারায়: জানালেন গবেষকরা

ভয়েসবাংলা প্রতিবেদক / ২৯৬ বার
আপডেট : মঙ্গলবার, ১১ জানুয়ারী, ২০২২

করোনাভাইরাস বায়ুবাহিত হওয়ার পাঁচ মিনিটের মধ্যে সংক্রমণ ছড়ানোর ৯০ শতাংশ ক্ষমতা হারায়। নতুন এক গবেষণায় এমন দাবি করা হয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, করোনা বায়ুতে ছড়ানোর পর কীভাবে বেঁচে থাকে তা নিয়ে এটিই বিশ্বের প্রথম সিমুলেশন। কোভিড যে স্বল্প দূরত্বে সংক্রমণ ছড়ায়, এই গবেষণায় তা আবারও উঠে এসেছে। ফলে সংক্রমণ ঠেকানোর কার্যকর উপায় হলো শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা ও মাস্ক পরা।

এই গবেষণার নেতৃত্বে ছিলেন ইউনিভার্সিটি অব ব্রিস্টলের অ্যারোসল রিসার্চ সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক জনাথন রেইড। তিনি বলেন, মানুষ দুর্বল ভেন্টিলেশনযুক্ত স্থানের বিষয়ে মনোযোগী বেশি। তারা দূরত্ব বা পুরো রুমজুড়ে করোনার বায়ুবাহিত সংক্রমণের কথা ভাবছে। আমি বলছি না যে এমনটি ঘটে। কিন্তু এখনও আমি মনে করি আক্রান্তের কাছাকাছি আসাটাই হলো সবচেয়ে বড় ঝুঁকি। তিনি বলেন, যখন আপনি দূরে সরে যাবেন তখন শুধু যে বায়ুকণা মিশে যায় তা নয়, এতে ভাইরাস কম সংক্রমণশীল হয় কারণ সময়ের কারণে সংক্রমণ ক্ষমতা করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে।

এখন পর্যন্ত বায়ুতে করোনা কতক্ষণ বেঁচে থাকে তা সম্পর্কে ধারণা মূলে রয়েছে একটি গোল্ডবার্গ ড্রামস (সীলকরা ভাসমান যান)-এ ভাইরাস স্প্রে করে তা পর্যালোচনা। এতে বায়ুবাহিত ড্রপলেট ঘুরতে থাকে। এই পদ্ধতি ব্যবহার করে মার্কিন গবেষকরা দেখতে পেয়েছেন, তিন ঘণ্টা পরও ভাইরাস শনাক্ত হয়। যদিও এমন পরীক্ষায় কাশি বা প্রশ্বাসে ড্রপলেট আকারে ছড়ানোর করোনার ক্ষেত্রে কী ঘটে তা সঠিকভাবে জানা যায় না।

গবেষণা প্রক্রিয়াগবেষণা প্রক্রিয়া

ইউনিভার্সিটি অব ব্রিস্টলের গবেষকরা একটি পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন যাতে অসংখ্য ক্ষুদ্র ভাইরাসবাহী কণা সৃষ্টি করা যায় এবং ৫ সেকেন্ড থেকে ২০ মিনিটের মধ্যে দুটি ইলেক্ট্রিক রিংয়ের মধ্যে ভাসানো যায়। এসময় এগুলোর আশেপাশের কঠোরভাবে তাপমাত্রা, আদ্রর্তা ও আলোর অতিবেগুনী রশ্মির তীব্রতা নিয়ন্ত্রণ করা হয়। রেইড বলেন, এটি হলো বিশ্বের প্রথম অনুকরণ। যাতে শ্বাস ছাড়ার প্রক্রিয়ায় বের হওয়া বায়ুকণার কী ঘটে তা অনুকরণ করা হয়েছে সঠিকভাবে।

গবেষণাটির এখনও পিয়ার-রিভিউ হয়নি। এতে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে, ভাইরাল কণা যেহেতু প্রায় আর্দ্র থাকে এবং ফুসফুসের কার্বন-ডাই-অক্সাইডে পরিমাণ বেশি থাকায় এগুলো দ্রুত পানি হারায় এবং শুকিয়ে যায়। একই সঙ্গে সঞ্চালনের সময় কার্ব-ডাই-অক্সাইডের মাত্রা কম থাকা দ্রুত অম্লতা বৃদ্ধির সঙ্গে সম্পর্কিত। এই দুটি ফ্যাক্টর মানবকোষকে আক্রান্ত করতে ভাইরাসের ক্ষমতাকে কমিয়ে দেয়। কিন্তু কতদ্রুত কণা শুকিয়ে যাবে তা নির্ভর করে আশেপাশের বায়ুর আর্দ্রতার ওপর। যখন এই আর্দ্রতার মাত্রা ৫০ শতাংশের কম থাকে তখন করোনাভাইরাস ১০ সেকেন্ডের মধ্যে অর্ধেক সংক্রমণ ক্ষমতা হারায়। এরপর তা ধীরে ধীরে আরও কমে যায়। ৯০ শতাংশ আর্দ্রতায় অকার্যকর হয় মন্থর। ৫২ শতাংশ বায়ুকণা পাঁচ মিনিটের মধ্যে সংক্রমণের ক্ষমতা হারায়।

গবেষণা অনুসারে, বায়ুর তাপমাত্রা ভাইরাসের সংক্রমণ হারানোর ক্ষেত্রে কোনও ভূমিকা রাখেনি। যা উষ্ণ আবহাওয়ায় করোনার সংক্রমণ কমে বলে যে ধারণা করা হয় সেটির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। গবেষক রেইড বলেন, এর অর্থ হলো কোথাও মধ্যাহ্নভোজে যদি আমি বন্ধুর সঙ্গে মিলিত হই তাহলে প্রাথমিক ঝুঁকি হলো আমি বন্ধুকে বা বন্ধুর কাছ থেকে সংক্রমিত হবো। যেখানে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব না সেখানে মাস্ক পরার গুরুত্ব এতে হাজির হয়। আলফাসহ করোনাভাইরাসের তিনটি ভ্যারিয়েন্টে একই ধরনের প্রভাব পাওয়া গেছে। গবেষকরা আশা করছেন, আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে তারা ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে পরীক্ষা শুরু করা যাবে। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর