রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৩:৪৪ পূর্বাহ্ন

কপ-২৭: মন্দার অজুহাতে জলবায়ু তহবিল অর্থায়ন অনিশ্চিত

মো. আশরাফ আলী / ৩৭ বার
আপডেট : রবিবার, ১৩ নভেম্বর, ২০২২

জলবায়ু তহবিলে অর্থায়ন অনিশ্চিত হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে চরম হতাশা দেখা দিয়েছে। রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট বিশ্ব মন্দার পরিপ্রেক্ষিতে জলবায়ু ক্ষতিপূরণ তহবিলে অর্থায়নের ক্ষেত্রে নতুন অজুহাত দাঁড় করিয়েছে উন্নত বিশ্ব। এ কারণে হতাশা ব্যক্ত করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর প্রতিনিধিরা। তবে সম্মেলনে অবশিষ্ট সময়ে গিয়ে একটি সমঝোতা পৌঁছানোর আশা করছেন আয়োজকরা।
মিসরের পর্যটন নগরী শার্ম আল শেখে চলমান কপ-২৭-এর আলোচনায় ধনী দেশগুলোর ওপর অর্থ ছাড়ের বিষয়ে চাপ দেওয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে সবুজ অর্থনীতি চালুর বিষয়ে আলোচনা অগ্রাধিকার পাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট জানান, তার দেশ সবুজ অর্থনীতি চালু করতে ৩৬ হাজার ৯০০ কোটি ডলারের একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। তাদের পাশাপাশি পুরো বিশ্বকেই এই পরিবর্তনের পথ ধরার আহ্বান জানান।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন শুক্রবার বাংলাদেশ সময় রাতে দেওয়া বক্তব্যে বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তন রোধকল্পে তার দেশ কার্বন নিঃসরণ কমানোর যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তা পূরণে সচেষ্ট রয়েছে। সেই সঙ্গে তিনি সব দেশকে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন কমিয়ে আনার লক্ষ্য পূরণের জন্য নিজ নিজ কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন ও একযোগে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তবে জলবায়ু তহবিলে অর্থায়নের বিষয়ে তিনি কোনো ঘোষণা দেননি।
সম্মেলনে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বরাবরের মতো এবারও যোগ দেননি। তবে চাইনিজ প্রতিনিধি দলের প্রধান শি জেনহুয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের জলবায়ুবিষয়ক বিশেষ দূত জন কেরির সঙ্গে আলাদা বৈঠক হয়েছে।
এতে চীন বলেছে, জলবায়ু সংকটের ফলে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতির তহবিলে দরিদ্র দেশগুলোর জন্য অর্থ দিতে রাজি তারা। এ ধরনের কর্মকাণ্ডে যোগ দেওয়ার ক্ষেত্রে তার দেশের কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। তারপরও জলবায়ু বিষয়ে ধনী দেশগুলোর ক্ষেত্রে যেসব পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে, তাতে সংহতি জানাচ্ছে চীন।
এদিকে জলবায়ু তহবিলে অর্থায়নের বিষয়ে ধনী দেশগুলোর টালবাহানায় ক্ষোভ দেখা দিয়েছে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে। পরিবেশ কর্মীরা সম্মেলন কেন্দ্রে ব্যাপক বিক্ষোভ করছে। যাতে বলা হচ্ছে, এ নিয়ে আর টালবাহানা না করে এখনই অর্থায়ন করতে হবে।
জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে দেশের পানি ও পয়োনিষ্কাশন অবকাঠামোর বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার  ক্ষয়ক্ষতি মেটাতে বিশ্ব জলবায়ু তহবিল থেকে পৃথকভাবে অর্থ বরাদ্দের দাবি জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং পরিবেশবিদ ড. হাছান মাহমুদ।  বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে আন্তর্জাতিক সংস্থা ওয়াটার এইড আয়োজিত ‘বাংলাদেশের পানি ও পয়োনিষ্কাশন অবকাঠামোর দুর্যোগজনিত ক্ষয়ক্ষতির ওপর আলোকপাত’ সেশনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ দাবি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে পানি ও পয়োনিষ্কাশনে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির এ বিষয়টি প্রথমে অনেকে স্বীকারই করতে চায়নি। অথচ বাংলাদেশসহ জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে থাকা অনেক দেশের জনজীবনে এই ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ব্যাপক। পরিবেশ পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাওয়ানো বা অভিযোজনের জন্য বরাদ্দ থেকে অর্থায়ন নয়, এই ক্ষয়ক্ষতি পূরণ ও নিরসনের জন্য আলাদা খাত তৈরি করে পৃথকভাবে অর্থ বরাদ্দ দিতে হবে।
কপ-২৭-এ মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনসহ বিশ্বনেতাদের অংশগ্রহণ অত্যন্ত আশাপ্রদ উল্লেখ করেন মন্ত্রী। সেই সঙ্গে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমরা সবাই এখানে ভালো ভালো কথা বলছি; কিন্তু যুদ্ধ যদি বন্ধ না হয় তাহলে জলবায়ু অর্থায়নের কি হবে! অর্থাৎ আমরা যদি সত্যিই পৃথিবীকে রক্ষা করতে চাই, তবে অবিলম্বে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের উদ্যোগ নিতে হবে।
facebook sharing button
twitter sharing button
linkedin sharing button
blogger sharing button
pinterest sharing button
email sharing button
sharethis sharing button


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর