রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০১:২৪ পূর্বাহ্ন

এতবড় অমানবিক খালেদাকেও মানবতা দেখিয়েছি : প্রধানমন্ত্রী

ভয়েসবাংলা প্রতিবেদক / ৩৪৭ বার
আপডেট : বুধবার, ১৭ নভেম্বর, ২০২১

জিয়ার আমলের হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে কমিশন গঠন করা হবে কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ৭৫ পরবর্তী সময়ে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের আমলে সামরিক ক্যুসহ বিভিন্নভাবে ঘটানো হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে সরকার অবশ্যই ব্যবস্থা নেবে। আমি মনে করি আমাদের সাংবাদিক বন্ধুদেরও এ ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া উচিত। আপনারা যখন বলেছেন আমি সরকারের পক্ষ থেকে অন্তত ফাঁসি কাদের দেওয়া হলো, যেগুলো জেলখানায় হয়েছে সেগুলোর হয়তো তথ্য পাওয়া যাবে। কিন্তু ফায়ারিং স্কোয়ার্ডে যাদের মারা হয়েছে কোট মার্শাল করে, তাদের সবার তথ্য পাওয়া কিন্তু মুশকিল। জানি না পাওয়া যাবে কি না। তবে আমরা এটা খবর নেব, খোঁজ নেব, এ ব্যাপারে আমরা দেখব। জিয়ার আমলে হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি সামনে আসার প্রশংসা করে বলেন, বহুদিন পরে হলেও অন্তত মানুষের মনে এই প্রশ্নটা জেগেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ’৭৫-এ জাতির পিতাকে হত্যার পর ১৯টি ক্যু হয়। আর প্রতিটি ক্যুর পর সেনাবাহিনীর হাজার হাজার সৈনিক, অফিসার, বিশেষ করে মুক্তিযোদ্ধাদের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো, এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিল জিয়াউর রহমান সরাসরি নিজে। তারই নির্দেশে। সে নিজে সরাসরি এই মৃত্যুদণ্ড দিতো। প্রহসনমূলক বিচার এবং এটা শুধু ফাঁসি দেওয়া না। বলতে গেলে সামরিক আদালতে বিচার, কোর্ট মার্শাল এবং কোট মার্শালের পরে তাদের নির্মমভাবে হত্যা করে।

জিয়ার আমলে কত মানুষ হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে, তা এখনও অজানা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একেকটা ক্যু হয়েছে, কত মানুষ মারা গেছে, প্রতিটি কারাগারে যে কত মানুষকে ফাঁসি দেওয়া হলো। সেই হিসেবটাও কেউ বের করেনি। কোনো সাংবাদিক বা কেউ এটা নিয়ে আজ পর্যন্ত তদন্ত করেননি। তিনি বলেন, প্রকৃতপক্ষে কত মানুষ মারা গেছে, কত পরিবার তাদের আপনজনের লাশ পায়নি, এই ব্যাপারটা কেউ কখনও সেভাবে তুলে ধরেনি। তো এতকাল পরে হলেও যে বিষয়টা সামনে এসেছে, এটাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় কথা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, টেলিভিশনের যে চারজনকে হত্যা করা হয়, সেখানে আমার একজন ফুফাতো ভাইও ছিল। তাদের হত্যা করে বস্তাবন্দী করে সেখানে… খানা ছিল, পানি ছিল, বিল ছিল ওখানে ফেলে রাখে। তাদের কাপড় ছোপড় দেখে তাদের চারজনকে চিহ্নিত করা হয়। এভাবে এই হত্যাকাণ্ডগুলো ঘটেছে। এখন আমরা গুম-খুনের কথা শুনি, আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার অনেক কিছু হচ্ছে। কিন্তু ’৭৫-এর পর থেকে যে এই ঘটনাগুলো শুরু এবং এত হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু, আমি ধন্যবাদ জানাই অন্তত আপনাদের এ ব্যাপারে কিছুটা হলেও চেতনা ফিরেছে এবং আপনারা কথাটা তুলেছেন। আমি আশা করি আরও তথ্য সংগ্রহ হবে। কিভাবে নির্বিচারে এ দেশের মানুষকে জিয়াউর রহমান হত্যা করে গেছে, সেটা বের হবে।

একজন নাগরিক হিসেবে নিজেও বাবা-মায়ের হত্যার বিচার চাইতে পারেননি জানিয়ে বঙ্গবন্ধুর কন্যা বলেন, আমরা তো নিজেরাই ভুক্তভোগী, আমি একজন নাগরিক হিসেবে আমার বাবা-মা, ভাইয়ের হত্যার বিচার পাইনি, মামলা করতে পারিনি। ’৮১ সালে ফিরে আসার পর আমাকে অপেক্ষা করতে হয়েছে। যখন আমি ক্ষমতায় আসতে পেরেছি, তখনই ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স বাতিল করে তারপর সে মামলা করতে সক্ষম হয়েছি। তার আগে কিন্তু মামলা করতে দেওয়া হয়নি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর