শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ১০:২০ অপরাহ্ন

এই দেশ এমনি এমনি স্বাধীন হয়নি: মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী

ভয়েসবাংলা প্রতিবেদক / ৪২৩ বার
আপডেট : বৃহস্পতিবার, ২ ডিসেম্বর, ২০২১

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ২৫ মার্চের এক সপ্তাহ পূর্বে শত্রু বাহিনীরা একটি অস্ত্র কারখানায় অস্ত্র নিতে গাজীপুরে আসতে চেয়েছিল। সে কারণে বঙ্গবন্ধু নির্দেশ দিয়েছিলেন শত্রু বাহিনীরা যাতে গাজীপুর থেকে অস্ত্র নিয়ে যেতে না পারে। যেকোনও মূল্যে গাজীপুরে শত্রু বাহিনীকে প্রতিহত করতে হবে। সেদিন মাত্র ২৬ বছর বয়সের একটি যুবক ছিলাম। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে সেদিন পাকিস্তানের ব্রিগেডিয়ার জাহানজেবের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও গাজীপুরবাসীকে নিয়ে যুদ্ধ করে পরাজিত করেছিলাম। এই দেশ এমনি এমনি স্বাধীন হয়নি, ২৩ বছরের মুক্তি সংগ্রাম চূড়ান্তভাবে ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমেই স্বাধীন হয়েছে।

স্বাধীনতার সূবর্ণজয়ন্তী ও পঞ্চগড় শত্রুমুক্ত দিবস উপলক্ষে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে বৃহস্পতিবার পঞ্চগড়ে অনুষ্ঠিত হলো ‘বিজয় পথে পথে’ আঞ্চলিক মহা সমাবেশ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সন্ধ্যায় পঞ্চগড় বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম স্টেডিয়ামে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী এ কথা বলেন। জাতীয় সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে মহা সমাবেশের অনুষ্ঠান শুরু হয়। এরপর পঞ্চগড় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আনোয়ার সাদাত সম্রাট, পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম, পঞ্চগড়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইউসুফ আলী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে প্রত্যেক বিভাগে একটি করে মুক্তিযোদ্ধা আঞ্চলিক সমাবেশ করা হবে বলেও মন্ত্রী জানিয়েছেন। মুক্তিযোদ্ধা আঞ্চলিক সমাবেশে পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও ও দিনাজপুরের সহস্রাধিক বীর মুক্তিযোদ্ধা অংশ নেন। মহাসমাবেশে ভূমিজ ও হিমালয় কন্যা থিয়েটারের পরিবেশনায় বিজয় পথে পথে শীর্ষক একটি নাটক পরিবেশিত হয়। পরে লালন ব্যান্ডের শিল্পী সুমি, সঙ্গীত শিল্পী পান্থ কানাই, পঞ্চগড় শিল্পকলা একাডেমিসহ স্থানীয় শিল্পীদের পরিবেশনায় এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, পাকিস্তানি হায়েনারা গর্ব করতো তারা নাকি পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিধর সেনাবাহিনী। আইয়ুব খান তার একটি বইয়ে লিখেছিলেন, বাঙালিরা যুদ্ধ করতে জানে না। তারা ভীরু, কাপুরুষ। তাই তাদের পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে নেওয়া হয় না। সেখানে বাঙালিদের সাত শতাংশ হিসেবে নেওয়া হতো। সেই পাক হানাদার বাহিনী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে মাথা নত করেছিল। আমরা যুদ্ধ করে নিজেদের ক্ষমতার প্রমাণ দিয়েছি।

তিনি বলেন, তারা আমাদেরকে অবজ্ঞা করেছিল। সেই বাঙালিদের কাছে পাকবাহিনী মাথা নত করে হাঁটু গেঁড়ে আত্মসমর্পণে বাধ্য হয়েছিল। পঞ্চগড়ের মুক্তিযোদ্ধারাই পরাজয়ের সূচনা করেছিল। এটা আমাদের গর্বের বিষয়। আমি বীর মুক্তিযোদ্ধা ভাইদের কাছে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। আপনারা আপনাদের এই পবিত্র মাটি থেকে পাক হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে তাদের বিতাড়িত করেছিলেন। তাই আপনাদের আমি স্যালুট জানাই। জয় বাংলা কোনও দলের স্লোগান নয়, এটা ছিল আমাদের রনতরী। এই স্লোগান দিয়ে আমরা দেশ স্বাধীন করেছি। আজকে বিতর্কিত করার জন্য বলা হচ্ছে, এটা আওয়ামী লীগের স্লোগান। এটা হলো আমাদের সবার সম্পদ। যাদের স্বাধীনতার প্রতি আস্থা আছে নিশ্চয়ই তাদের জয় বাংলা প্রাণের বাণী অন্তরের বাণী। এটা দিয়ে আমরা তাদের পরাজিত করে ছিলাম। আমরা বাংলাদেশ জিন্দাবাদ বলে যুদ্ধ করিনি।

মন্ত্রী বলেন, যারা বিগত দিনে মিথ্যা কথা বলে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে কলঙ্কিত করতে চায়, অস্বীকার করে যুদ্ধে এত লোক মারা যায়নি, তারা পাক হানাদার বাহিনীর দোসর। এখনও তারা তাদের পক্ষে কথা বলে। বাংলাদেশের সঙ্গে খেলায় এখনও তাদের পক্ষ নেয়। এই পরাজিত শক্তির দোসররা এখনও তাদের গ্লানি ভোলেনি। যখনই সুযোগ পায় তখনই ছোবল মারে। এদের বিরুদ্ধে সজাগ থাকতে হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর