রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০২:০৮ অপরাহ্ন

উপজেলা নির্বাচন প্রথম ধাপে ৭ শতাংশ কোটিপতি প্রার্থী

ভয়েস বাংলা প্রতিবেদক / ৬ বার
আপডেট : সোমবার, ৬ মে, ২০২৪

আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপের ১ হাজার ৬০৬ প্রার্থীর ১১৭ জন কোটিপতি, যা মোট প্রার্থীর ৭ শতাংশ। তবে ৯৩ শতাংশের সম্পদ কোটির নিচে। এছাড়া পাঁচ বছরে উপজেলা চেয়ারম্যানদের অস্থাবর সম্পদও অনেক বেড়েছে। এমপিদের সম্পদ বৃদ্ধির হার সর্বোচ্চ ৩ হাজার ৬৫ শতাংশ হলেও একজন উপজেলা চেয়ারম্যানের সম্পদ বেড়েছে ৪ হাজার ২০০ শতাংশের বেশি।

সোমবার (৬ মে) ধানমন্ডি ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) অফিসে উপজেলা নির্বাচনে (প্রথম ধাপ) প্রার্থীদের হলফনামা বিশ্লেষণ ও ফলাফল নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ সব তথ্য জানানো হয়।

টিআইবি বলছে, প্রথম ধাপের ১৫২টি উপজেলার মধ্যে ১৪৪টির প্রার্থীদের হলফনামা প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। বাকি আট উপজেলার প্রার্থীদের হলফনামা প্রকাশ করা হয়নি। এ ধাপের প্রায় ৪ হাজার ৮০০টি হলফনামার আট ধরনের তথ্য বহুমাত্রিক ও তুলনামূলক বিশ্লেষণ করেছে টিআইবি।
সংবাদ সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন টিআইবির আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম।
এতে উল্লেখ করা হয়, প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীর মধ্যে ১১৭ জন কোটিপতি। ৫৬০ চেয়ারম্যান প্রার্থীর ৯৪ জন, ৬১১ ভাইস চেয়ারম্যানের ১৭ জন এবং ৪৩৫ মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের মধ্যে ছয় জন কোটিপতি প্রার্থী।
টিআইবির গবেষণা বলছে, সার্বিকভাবে প্রার্থীদের ৪০ শতাংশের আয় সাড়ে তিন লাখ টাকার নিচে দেখানো হয়েছে। সাড়ে ১৬ লাখ টাকার বেশি আয় দেখিয়েছেন মাত্র ১০ শতাংশ প্রার্থী। দ্বিগুণ হয়েছে কোটিপতি প্রার্থীর সংখ্যা।
এছাড়া ১০০ বিঘা বা ৩৩ একরের বেশি জমি আছে কমপক্ষে ১০ প্রার্থীর। ২৩ দশমিক ৪১ শতাংশ প্রার্থীর ঋণ রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১ হাজার ৫২৮ কোটি টাকা ঋণ রয়েছে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী সিলেটের বিশ্বনাথের। প্রার্থীদের ১৬ দশমিক ৬৪ শতাংশ বর্তমানে মামলায় অভিযুক্ত।
পাঁচ বছরে একজন চেয়ারম্যানের আয় বেড়েছে সর্বোচ্চ ৩ হাজার ৩১৯ শতাংশ, ১০ বছরে এই বৃদ্ধির হার সর্বোচ্চ ১৮ হাজার ২৩৩ শতাংশ। সর্বোচ্চ ৪ হাজার ২৫১ শতাংশ বেড়েছে অস্থাবর সম্পদ। স্ত্রী ও নির্ভরশীলদের সম্পদ বৃদ্ধির হার সর্বোচ্চ ১২ হাজার ৪০০ শতাংশ। পেশার দিক দিয়ে ৭০ শতাংশ চেয়ারম্যান প্রার্থী ব্যবসায়ী, ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীর প্রায় ৬৭ শতাংশ এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীর ২৪ শতাংশ ব্যবসায়ী।
টিআইবি জানায়, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও ব্যবসায়ী প্রার্থীদের দাপট বাড়ছে। তবে নারী ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীদের ৫২ শতাংশই গৃহস্থালী কাজকে পেশা হিসেবে দেখিয়েছেন। আয় নেই ১২ শতাংশের, ৩৯ শতাংশ নিজেদের আয়ের কোনও স্বীকৃত উৎস দেখাননি।
এ বিষয় টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের সম্পদের অস্বাভাবিক বৃদ্ধির বিষয়টি খতিয়ে দেখার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক)। তিনি বলেন, প্রথম ধাপে উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপির ১৩ জন স্বজন প্রার্থী হয়েছেন। চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২৬ প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।
ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, উপজেলা নির্বাচন প্রতিদ্বন্দিতামূলক করতে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে প্রার্থী দেয়নি। এতে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের অধিকাংশই আওয়ামী লীগ দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থী এবং দলের স্থানীয় নেতৃত্বের সমর্থনপুষ্ট। বিএনপি নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিলেও প্রার্থীদের আটকাতে পারেনি। তারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর