আমি শেখ হাসিনার কষ্ট বুঝতে পারি: ব্যাশেলে
ঘাতকের বুলেটে বাবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হারিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা; আর জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান মিশেল ব্যাশেলের বাবা মারা গেছেন কারাগারে নির্যাতনে। দুই বাবার একই রকম পরিণতির কথা তুলে ধরে বুধবার ঢাকা সফররত মিশেল ব্যাশেলে বলেছেন, শেখ হাসিনার কষ্ট তিনি উপলব্ধি করতে পারেন।
লাতিন আমেরিকার দেশ চিলির দুই বারের প্রেসিডেন্ট ব্যাশেলে এখন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনারের দায়িত্বে রয়েছেন। বাংলাদেশে তার প্রথম সফরের সময়টিতেই দেশবাসী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার বার্ষিকীতে জাতীয় শোক দিবস পালন করেছে। ঢাকায় আসার পর বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আসা ব্যাশেলে বুধবার দেখা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে।
এদিন ঢাকা ছাড়ার আগে ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে আসা ব্যাশেলে বলেন, চিলির নাগরিক হিসাবে আমারও একই রকমের অভিজ্ঞতা আছে। এমনকি আমার বাবাও ১৯৭৪ সালে নির্যাতনের শিকার হয়ে মারা গেছেন। আর প্রধানমন্ত্রী তার বাবাকে হারিয়েছেন ১৯৭৫ সালে। আমি তার কষ্ট বুঝতে পারি।
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে একদিন আগেই এক আলোচনায় শেখ হাসিনা পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর বিচারের পথ বন্ধ করে রাখা, খুনিদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়ার প্রসঙ্গ তুলে বলেছিলেন, আমাদের মানবাধিকার কোথায়? তার কি জবাব আমরা পাব?
১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়ে সপরিবারে প্রাণ হারান স্বাধীন বাংলাদেশের রূপকার শেখ মুজিবুর রহমান। ওই সময় দেশের বাইরে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুর দুই মেয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা।
অন্যদিকে, কারাগারে নির্যাতিত হয়ে ১৯৭৪ সালের ১৩ মার্চ মারা যান মিশেল ব্যাশেলের বাবা আলবের্তো আর্তুরো মিগেল ব্যাশেলে মার্তিনেজ। ১৯৭৩ সালে আগুস্তো পিনোশেতের সামরিক অভ্যুত্থানের বিরোধিতা করতে গিয়ে বন্দি হন চিলি বিমানবাহিনীর তখনকার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলবের্তো। কারা হেফাজতে তার মৃত্যু হয়। দুই মেয়াদে চিলির প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্ব পালনের পর ২০১৮ সাল থেকে জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের প্রধানের দায়িত্ব পালন করছেন মিশেল ব্যাশেলে।
মিশেল ব্যাশেলে বলেন, সরকার তাদেরটা বলবে। সরকারের হয়ে কথা বলার আমি কেউ না। তবে আমি বলছি স্বীকার করার গুরুত্বের কথা। এটাকে তুলে ধরা, তদন্ত করা এবং আমি তাদের সাথে সাবেক রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান হিসাবে নিজের অভিজ্ঞতা বিনিময় করেছি। নিজের দেশে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়, তা উল্লেখ করতে গিয়ে তিনি বলেন, আমিও আমার অভিজ্ঞতা বিনিময় করেছি, কীভাবে আমি ঘটনাগুলোকে দেখেছি। আমি যখন যে কোনো ধরনের অভিযোগ পেয়েছি, আমি জানার চেষ্টা করেছি এটা সত্য কি না? আমি যদি জানি, এটা ঘটেছে, তাহলে কিছু করতে পারব। যদি অভিযোগ সত্য না হয়, যদি কিছু না ঘটে, তাহলে সেটাই। সব ঠিকঠাক। যদি সত্য হয়, তাহলে আমরা কীভাবে প্রতিকার করব, পদক্ষেপ নিব। এ ধরনের আলোচনায় আমাদের হয়েছে।