শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০৭:৫৯ অপরাহ্ন

আগামী নির্বাচনে ফাইনাল খেলা হবে: ওবায়দুল কাদের

ভয়েসবাংলা প্রতিবেদক / ৪৫ বার
আপডেট : শনিবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্দেশ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘আন্দোলন-আন্দোলন করতে করতে গলা শুকিয়ে যায়… মরা নদীতে জোয়ার আসে না; জোয়ার কি আসবে কখনও? আপনাদের সঙ্গে নেতাকর্মীদের বাইরে দেশের মানুষ জয়েন করেনি। ফয়সালার কথা কোন মুখে বলেন। আমি বলেছি— হবে হবে, ফয়সালা হবে। ফয়সালা হবে আগামী নির্বাচনে। ফাইনাল খেলা। তখন দেখা যাবে, কে হারে কে জেতে।

শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশে (কেআইবি) সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতাকালে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি জাহিদ হোসেন পারভেজের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আজিজুল হাকিম সম্রাটের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, ছাত্রলীগের সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য, সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক সরকার রেফাত সঞ্জয়,  বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিষয়ক সম্পাদক আল-আমিন রহমান।

সেতুমন্ত্রী বলেন, টেমস নদীর ওপার থেকে দণ্ডিত অর্থপাচারকারী অপরাধী হাঁক-ডাক দিচ্ছে। সেই ডাকে টেমস নদীতে ঢেউ উঠেছে কিনা জানি না, তবে পদ্মা-মেঘনা-যমুনায় ঢেউ নেই। বিএনপির শুকনো নদীতে জোয়ার আর আসবে না। চিৎকার যত পারেন করেন, ফয়সালা হবে নির্বাচনে। হুমকি দিয়ে লাশ ফেলতে চান? লাশ ফেলার দুষ্টচক্রে আবদ্ধ হচ্ছেন।

ওবায়দুল কাদের বলেনম, মির্জা ফখরুল আপনাকে সতর্ক করে দিতে চাই। আপনাদের হাতে অনেক রক্তের দাগ। ২১ হাজার আওয়ামী লীগ কর্মী, আহসানুল্লাহ মাস্টার, এ এম এস কিবরিয়া; এদের রক্ত আপনাদের হাতে। আমরা আপনাদের কাউকে হত্যা করিনি। হত্যার ষড়যন্ত্রের রাজনীতিতে আমরা বিশ্বাসী নই। হত্যাচেষ্টা হয়েছে আমাদের নেত্রীর ওপর, কিন্তু খালেদা জিয়াকে কেউ মারতে যায়নি।

ওবায়দুল কাদের প্রশ্ন রেখে বলেন, কারা বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের আইনের মধ্য দিয়ে অব্যাহতি দিলো, মির্জা ফখরুল আপনি যতই কথা বলেন, এই প্রশ্নের জবাব আজও দেননি। বারে বারে প্রশ্ন করতে চাই- কেন খুনিদের পুরস্কৃত করা হলো, নিরাপদে বিদেশ পাঠানো হলো, তাদের চাকরি দিলো আমাদেরই দূতাবাসে। আজকে এ প্রশ্নের জবাব তারা দেবে না। কারণ তারা সত্যের মুখোমুখি হতে ভয় পায়। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের লাশ প্রসঙ্গ টেনে আওয়ামী লীগের এই শীর্ষ নেতা বলেন, চট্টগ্রাম থেকে লাশ এনে চন্দ্রিমাতে জানাজা পড়লেন, কে লাশ দেখেছে? একটা ছবি দেখাতে পারবেন? একটা ছবি আপনার কাছে চাই, মৃত লাশের একটা ছবি দেখান।

ওবায়দুল কাদের বলেন, আমার পতাকা পতপত করে ওড়ে বঙ্গবন্ধু তোমার নামে, আমি আন্দোলনে উজ্জীবিত হই, আমার জাতীয় সঙ্গীত- আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি… এটিও পেয়েছি বঙ্গবন্ধু তোমার কারণে। আজ তুমি বাংলার মাটিতে আমাদের মাঝে নেই। পলাশী ষড়যন্ত্রে নবাব সিরাজউদ্দৌলার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল মীরজাফর আলী খান, সেনাপতি রায়দুর্লভ… ক্লাইভের সৈন্য সাড়ে ৩ হাজার আর নবাবের ৪৫ হাজার। সেনাপতি, প্রধান সেনাপতি বিশ্বাসঘাতকতা করলো, সৈন্যরা দুপুরের পর অস্ত্র হাতে দাঁড়িয়ে রইলো, যুদ্ধ শেষ। বিশাল পতন ঘটলো বাংলার নবাবের। সেই ষড়যন্ত্র পচাত্তরেও হলো। সেই ষড়যন্ত্রে মীরজাফরের বেশে খন্দকার মোশতাক, সেই ষড়যন্ত্রে জিয়াউর রহমান। সত্য মোছা যাবে না। সত্যের বন্যা অপ্রতিরোধ্য। এ বিশ্বাসঘাতককে ইতিহাস ক্ষমতা করবে না। তিনি বলেন, একটা পরিবারকে ধ্বংস করে দিল। মাসুম শেখ রাসেল, মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামাল, শেখ জামাল তাদের নবপরিণিতা বধু। সেদিনের সকালের সূর্যের রঙের সঙ্গে মিশে গেলো ওদের হাতের মেহেদি।

ইতিহাস অনেক সত্যের জবাব দেবে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ব্রিটিশ লেখক অ্যান্থনির বিবরণে পাওয়া যায়, তখন কারা কী করেছিল। কোথায় কোথায় বৈঠক করেছিল। সিআইএর ঢাকা স্টেশনের চিফ, মার্কিন রাষ্ট্রদূতের কী ভূমিকা ছিল; এসব নিয়ে অনেক কথা আছে।

তরুণদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ছাত্রলীগ করবেন কোন আদর্শে? সেই আদর্শের বিবর্তনের ইতিহাস জানতে হবে। তা না হলে অসম্পূর্ণ হয়ে থাকবেন। কতজনকে বঙ্গবন্ধু টেলিফোনে কী বলেছিলেন সম্পূর্ণ বিষয়টি জাতির জানা। তিনি কিছু বললেন, কিছু বলেননি। অনেক নির্মম সত্য সবসময় বলা যায় না। সে সত্যও বেরিয়ে আসবে। শুধু দেখলাম নিরাপত্তা অফিসার কর্নেল জামিল ছযুটে এসেছেন বঙ্গবন্ধুকে রক্ষা করতে, আর কেউ আসেনি। সোবহানবাগ মসজিদের কাছে তাকে ঘাতকেরা হত্যা করে। এজন্য রাজনৈতিক নেতাও সেদিন ওই সঙ্কটের সময়ে সাড়া দেননি। ৩২ নম্বরে রক্তপাতের জবাব দিতে আসেননি। এটা আমাদের রাজনৈতিক নেতৃত্বে ব্যর্থতা।

ডিসিপ্লিনটা আমদের দরকার

যে মিটিং ১০টায়, সেই মিটিংয়ের প্রধান অতিথি যদি দেড়টায় বক্তৃতা করতে ওঠার সুযোগ পান তাহলে উপস্থিত কারোর ধৈর্য থাকে না। সাংবাদিকদেরও ধৈর্য থাকে না। ছাত্রলীগের যারা কর্মী তারাও কষ্ট করে বিভিন্ন জায়গা থেকে আসে। তাদেরও ধৈর্য থাকে না। আমি সময় সম্পর্কে সচেতন হওয়ার জন্য অনুরোধ করছি। ডিসিপ্লিনটা আমদের দরকার। তিনি বলেন, আদর্শ বাঁচবে না যদি ডিসিপ্লিন না বাঁচে। আদর্শকে বাঁচাতে হলে ডিসিপ্লিনকে বাঁচাতে হবে। আমি সবাইকে এই কথা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই।বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বার্ষিক সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বার্ষিক সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের

তিনি ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে শৃঙ্খলায় আসার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন। মঞ্চে অনেক নেতা দাঁড়িয়ে আছেন দেখিয়ে তিনি বলেন, আদর্শের সৈনিকরা যদি মঞ্চে দাঁড়িয়ে থাকে কীভাবে হবে? আজকের জন্য ক্ষমা করলাম। ভবিষ্যতের জন্য সাবধান করলাম।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর