রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৪:৪৬ পূর্বাহ্ন

অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের সামনে দিশেহারা বাংলাদেশ

ভয়েস বাংলা প্রতিবেদক / ২৫০ বার
আপডেট : বৃহস্পতিবার, ৪ নভেম্বর, ২০২১

বলটা খেলতে না গেলে ওয়াইড হতো নিশ্চিত। ১ রান আসবে কী, উল্টো উইকেট হারালো বাংলাদেশ! ভুল শট খেলতে গিয়ে উইকেট দিয়ে এলেন মাহমুদউল্লাহ। শুরু থেকেই বিপর্যস্ত বাংলাদেশ আরও এলোমেলো হয়ে যায় অধিনায়কের বিদায়ে।

আজ (বৃহস্পতিবার) দুবাই ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ। সুপার টুয়েলভে নিজেদের শেষ ম্যাচে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশের স্কোর ১৩ ওভারে ৮ উইকেটে ৬৫ রান।

শূন্যের খেলায় আফিফ

এবারের বিশ্বকাপে বাংলাদেশের কোন ব্যাটার ম্যাচের পরিস্থিতি পাল্টে দিতে পারেন? কুড়ি ওভারের বিশ্বমঞ্চে যাওয়ার আগে এই প্রশ্ন করা হলে আফিফ হোসেনের নাম এসেছে নিশ্চিতভাবে। আসার কথাও। ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড সিরিজে তার ব্যাটিং ছিল দেখার মতো। কিন্তু বিশ্বকাপে গিয়ে উল্টো চিত্র। শেষ দুই ম্যাচে তো অবস্থা আরও খারাপ। যেন ‘শূন্যের খেলা’য় মেতে আছেন আফিফ! তা নয়তো কী, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে আগের ম্যাচে আউট হয়েছিলেন শূন্য রানে। মুখোমুখি প্রথম বলেই ফিরেছেন খালি হাতে। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশ নেমেছে শেষ ম্যাচে। সেখানেও ভাগ্য বদলালো না আফিফের। আবারও শূন্য রানে বিদায়। এবার খেলেছেন অবশ্য ৪ বল। অ্যাডাম জাম্পার গুগলিতে খেই হারিয়ে স্লিপে ধরা পড়েন অ্যারন ফিঞ্চের হাতে। টানা দু্ই ম্যাচে রানের খাতাই খুলতে পারলেন না বাঁহাতি ব্যাটার।

উইকেট বিলিয়ে এলেন নাঈম

টপ অর্ডারের ব্যর্থতার মাঝে অন্তত কিছুটা হলেও আশার আলো দেখাচ্ছিলেন নাঈম শেখ। সুযোগ বুঝে শটসও খেলছিলেন। কিন্তু স্থির থাকতে পারলেন না এই ওপেনার। বাজে শট খেলে উইকেট বিলিয়ে এলেন তিনি। জশ হ্যাজেলউডের বাড়তি বাউন্সারে সহজ ক্যাচ দিয়েছেন প্যাট কামিন্সকে। অস্ট্রেলিয়ার পেস ঝড়ে শুরুতেই এলোমেলো বাংলাদেশের টপ অর্ডার। দ্রুত উইকেট হারিয়ে বিপর্যস্ত দলের একপ্রান্ত আগলে রেখেছিলেন নাঈম। ব্যাটারদের ব্যর্থতার বিশ্বকাপে তিনি অন্তত কয়েকটি ভালো ইনিংস উপহার দিয়েছেন। যদিও আজ পারেননি। বরং অহেতুক শট খেলতে গিয়ে উইকেট ছেড়ে এসেছেন। পুল করতে গিয়ে স্কয়ার লেগে ১৭ রান করে ধরা পড়েন কামিন্সের হাতে। ১৬ বলের ইনিংসটি সাজান ৩ বাউন্ডারিতে।

সৌম্যর বোল্ডের পর মুশফিকের বিদায়

ব্যাটে বল লেগে আঘাত করলো স্টাম্পে। লিটন দাসের আউটের মতো সৌম্য সরকারেরও একই দশা। লিটনের মতো বাঁহাতি এই ব্যাটারও বোল্ড হয়ে ফিরেছেন। জশ হ্যাজেলউডের বলে তিনি আউট হওয়ার পর আরও বড় ধাক্কা। গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের শিকার হয়ে ফিরে গেছেন মুশফিকুর রহিম। লিটনের বিদায়ে এমনিতেই চাপ তৈরি হয়েছিল। সেই জায়গায় ওয়ান ডাউনে নামা সৌম্য হাল ধরবেন কী, উল্টো আউট হয়ে আরও চাপ বাড়িয়ে গেলেন। হ্যাজেলউডের অফ স্টাম্পের বাইরের বল ব্যাট দিয়ে টেনে স্টাম্পে লাগালেন সৌম্য। ফলে ৫ রানে শেষ হয় তার ইনিংস। বাঁহাতি ব্যাটারের বিদায়ের পর আরও ধাক্কা লাগে মুশফিক আবারও ব্যর্থ হলে। মাত্র ৬ রানে ২ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকা দলের তার ওপর প্রত্যাশা ছিল অনেক। অভিজ্ঞ ক্রিকেটার তার প্রতিদান দিতে তো পারলেনই না, বরং আউট হয়ে আরও খারাপ অবস্থায় ছেড়ে আসেন দলকে। ম্যাক্সওয়েলের স্পিনের এলবিডব্লিউয়ে হয়ে ফেরার আগে তিনি করতে পারেন মাত্র ১ রান।

‘গোল্ডেন ডাক’ নিয়ে সাজঘরে লিটন

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শেষ ম্যাচ। অনেক সমালোচনার জবাব দেওয়ার সুযোগ ছিল লিটন দাসের। কিন্তু কীসের কী! ‘গোল্ডেন ডাক’-এর হতাশা নিয়ে মুখ নিচু করে সাজঘরে ফিরতে হলো তাকে। মিচেল স্টার্কের বলে বোল্ড হয়ে গেছেন লিটন। কিছুই করতে পারলেন না লিটন। হতাশা বাড়িয়ে নিজের সামর্থ্যের ওপর আবারও প্রশ্নবোধক চিহ্ন এঁকে দিলেন। স্টার্কের ফুল লেন্থ বল জায়গায় দাঁড়িয়ে খেলতে চেয়েছিলেন লিটন। কিন্তু পারেননি, ব্যাটের কানায় লেগে অফ স্টাম্পে আঘাত করে বল। ফল, মুখোমুখি প্রথম বলেই আউট!

টস হেরে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ, একাদশে মোস্তাফিজ

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালের স্বপ্ন আগেই শেষ। তাই সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ওমানের বিশ্বকাপে শেষবার মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ। দুবাইয়ের ম্যাচে টস হেরে ব্যাটিং পেয়েছে মাহমুদউল্লাহরা। টস জয়ী অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বিশ্বকাপের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের একাদশে একটি পরিবর্তন। বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদকে বসিয়ে ফেরানো হয়েছে পেসার মোস্তাফিজুর রহমানকে। অস্ট্রেলিয়ার একাদশেও একটি বদল। বাদ পড়েছেন স্পিনার অ্যাস্টন অ্যাগার, ফিরেছেন অলরাউন্ডার মিচেল মার্শ। বাংলাদেশের বিশ্বকাপ শেষ, তারপরও এই ম্যাচের গুরুত্ব আছে। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশের জয়ে হয়তো বিশ্বকাপের পয়েন্ট টেবিলে কোনও প্রভাব ফেলবে না, তবে ‘লাভ’ ঠিকই আছে।

বিশ্বকাপ দিয়েই বিশ্বকাপের পথ তৈরি হতে পারে। সেটা কীভাবে? এই ম্যাচ জেতার মধ্য দিয়ে আগামী বছরের অস্ট্রেলিয়ার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সরাসরি সুপার টুয়েলভে খেলার সুযোগ তৈরি হবে। জিতলে র‌্যাঙ্কিংয়ে উন্নতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। কিন্তু হারলে প্রতিবারের মতো প্রাথমিক পর্বে খেলে সুপার টুয়েলভ নিশ্চিত করতে হবে বাংলাদেশকে। অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়ার জন্য ম্যাচটি বাঁচা-মরার। সেমিফাইনালের স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখতে হলে জিততেই হবে অজিদের।

বাংলাদেশ একাদশ: নাঈম শেখ, লিটন দাস (উইকেটকিপার), সৌম্য সরকার, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ (অধিনায়ক), আফিফ হোসেন, শামীম হোসেন, শেখ মেহেদী হাসান, তাসকিন আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলাম।

অস্ট্রেলিয়া একাদশ: ডেভিড ওয়ার্নার, অ্যারন ফিঞ্চ (অধিনায়ক), মিচেল মার্শ, স্টিভেন স্মিথ, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, মার্কাস স্টোইনিস, ম্যাথু ওয়েড (উইকেটকিপার), প্যাট কামিন্স, মিচেল স্টার্ক, অ্যাডাম জাম্পা, জশ হ্যাজেলউড।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর