রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৯:০২ পূর্বাহ্ন

অপরাধীদের সঙ্গীরা বুদ্ধিজীবী নয়, বুদ্ধিপ্রতিবন্ধীজীবী: প্রধানমন্ত্রী

ভয়েস বাংলা রিপোর্ট / ৩৭ বার
আপডেট : মঙ্গলবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০২২

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, সাজাপ্রাপ্ত আসামি খালেদা-তারেকের সঙ্গে হাত মিলিয়ে যারা এখন গণতন্ত্রের কথা বলে তারা বুদ্ধিজীবী না, বুদ্ধিপ্রতিবন্ধীজীবী। প্রধানমন্ত্রী ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের লেখাপড়া শিখে উন্নত নাগরিক হয়ে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখা, আওয়ামী লীগ ও সরকারের বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় অপপ্রচারের জবাব দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

মঙ্গলবার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্রলীগের ৩০তম সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান। এ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বক্তব্য দেন। ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বলবো, যে যাই বলুক না কেন লেখাপড়াটা শিখতে হবে, লেখাপড়ায় মনোযোগ দিতে হবে। লেখাপড়া শিখে উন্নত নাগরিক হতে হবে, বাংলাদেশের এই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি। সব সোশ্যাল মিডিয়া ভরে গেছে আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে। তাই আমাদের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বলবো, এর উপযুক্ত জবাব সবাইকে দিতে হবে। জবাব দেওয়া তো বেশি কিছু না, ওরা যখন আমাদের বিরুদ্ধে যেটা লেখে তার জবাব দেওয়া লাগবে না, ওদেরে অপকর্মটা যদি সেখানে তার নিচে ছেড়ে দেওয়া যায় তাহলেই ওরা ওটা বন্ধ করে দেবে। এটাই হচ্ছে সবচেয়ে ভালো। ওরা যা বলবে, বিএনপি ক্ষমতায় থেকে কী করেছে, তারা কাকে কাকে মেরেছে, কী করেছে, ভোট চুরি, ডাকাতি এইগুলি ছেড়ে দিলেই তো যথেষ্ঠ। কাজেই আমার মনে হয় আপনারা এই কাজটা করতে পারেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেক জ্ঞানী-গুণী মানুষও জিয়ার সঙ্গে হাত মিলিয়ে কথা বলেছিল। এখনো অনেকে আছেন খালেদা জিয়া-তারেক জিয়ার সঙ্গে। মানিলন্ডারিং, অস্ত্র কারবারি ও ২১ আগস্টে গ্রেনেড হামলার আসামি তারেক। খালেদা এতিমের টাকা আত্মসাতের মামলার আসামি। এ অপরাধীদের সঙ্গে এখন অনেক জ্ঞানী-গুণীও গণতন্ত্রের কথা বলে। তারা বুদ্ধিজীবী না, বুদ্ধিপ্রতিবন্ধীজীবী। তারা খালেদা-তারেকের সঙ্গে গিয়ে মিলেছে।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ১৫ আগস্ট আমরা হারিয়েছি আপনজনদের। বাংলাদেশ হারিয়েছিল তার উন্নয়নের সব সম্ভাবনা। খুনিদের বানিয়েছিল সারাবিশ্বের প্রতিনিধি। তাদের যোগ্যতা কী? জাতির পিতার খুনি। ছাত্রদলের সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে খালেদা জিয়ার পেটুয়া বাহিনী সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করে দেয়। ঢাবিতে রাতের অন্ধকারে ভিসিকে সরিয়ে নতুন আরেকজনকে বসিয়ে দিয়ে ভিসির পদটাও দখল করে নেয়। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই শিক্ষকসহ বহুনেতাকর্মী হত্যা করে। তাদের অত্যাচার নির্যাতনে সারা বাংলাদেশ ছিল নির্যাতিত। শুধু ক্ষমতায় থাকলেই না, ক্ষমতার বাইরে থেকেও অগ্নিসন্ত্রাসের কথা সবার জানা। ২০১৩/১৪ সালে প্রায় তিন হাজার মানুষকে দগ্ধ করে তারা। বাস, লঞ্চ রেল কোনো কিছুই তাদের হাত থেকে রক্ষা পায়নি। তিনি বলেন, বিএনপির কাজই হচ্ছে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করা। খালেদা জিয়া বলেছিলেন, আওয়ামী লীগকে শিক্ষা দিতে ছাত্রদলই যথেষ্ট। এর প্রতিবাদে আমি ছাত্রলীগের হাতে বই খাতা কলম তুলে দিয়েছিলাম। বলেছিলাম-শিক্ষা শুধু নিজেরাই গ্রহণ করবে না, গ্রামে গিয়ে নিরক্ষর মানুষকে শিক্ষা দেবে। তারা সেটিই করেছে। আমাকে রিপোর্টও দিয়েছে। আমাদের পেটুয়া বাহিনী লাগে না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য সোনার মানুষ চেয়েছিলেন। আমি আশা করি, আমাদের ছাত্রলীগের ছেলেমেয়েরাই সেই সোনার মানুষ, যারা এই বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। জাতির পিতার স্বপ্ন আমরা পূরণ করবো। জাতির পিতা বলেছিলেন, ছাত্রলীগের ইতিহাস বাংলাদেশের ইতিহাস। বাংলাদেশের ইতিহাস ছাত্রলীগের ইতিহাসের সঙ্গে জড়িত এটা জাতির পিতাই স্বীকৃতি দিয়ে গেছেন। শহীদদের তালিকা যদি দেখি, ছাত্রলীগের শহীদই বেশি।

স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আজ ৬ ডিসেম্বর, আমরা আন্দোলন করেছিলাম ‘গণতন্ত্র মুক্তি পাক, স্বৈরাচার নিপাত যাক’। সেই আন্দোলন সফল ছিল, স্বৈরাচার এরশাদের পদত্যাগ হয়েছিল এই ৬ ডিসেম্বর। গণতন্ত্র মুক্তি দিবস হিসেবে আমরা এই দিবসটিকে পালন করি। জিয়াউর রহমান যা করেছিল, অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে একদিকে রাষ্ট্রপতি আরেক দিকে সেনাবাহিনীর প্রধান। অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে শুরু হয় তার অত্যাচার নির্যাতন। ছাত্রদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছে, মাদক তুলে দিয়েছে, তাদেরকে লাঠিয়াল বাহিনী হিসেবে ব্যবহার করেছে। প্রত্যেকটা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অস্ত্রের ঝনঝনানি। ঠিক তারই পদাঙ্ক অনুসরণ করে জেনারেল এরশাদ ক্ষমতা দখল করে। আর একইভাবে জেনারেল এরশাদও একই জায়গায় বিশ্ববিদ্যালয়সহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নানা ধরনের ঘটনা ঘটায়, আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর অত্যাচার করে। ২০০১ সালে খালেদা জিয়া ক্ষমতায় আসে, ৯১ সালে ক্ষমতায় এসে যেমন অত্যাচার এবং ৯৬ সালে ভোট চুরি করে ক্ষমতায় থাকার চেষ্টা করে। আবার ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে খালেদা জিয়ার পেটোয়া বাহিনী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করে দেয়। বিএনপির কাজই হচ্ছে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করা। নিশ্চয়ই আপনাদের মনে আছে, খালেদা জিয়া হুমকি দিয়েছিল যে আওয়ামী লীগকে শিক্ষা দিতে তার ছাত্রদলই নাকি যথেষ্ঠ। সে ছাত্রদলের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছিল। আর এর প্রতিবাদে আমি ছাত্রদের হাতে বই, খাতা, কলম তুলে দিয়েছিলাম। আমাদের শক্তি জনগণ, আমাদের পেটোয়া বাহিনী লাগে না।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর