শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৩:২৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
সহিংসতা শুরুর আগেই শুটিং শেষ দীঘির মেট্রোরেলে নাশকতা: ডিইউজে একাংশের সাংগঠনিক সম্পাদকসহ ৬ জন রিমান্ডে প্যারিস অলিম্পিক যেন বিশ্ব ক্রীড়াবিদদের মিলনমেলা আন্দোলনকারীদের যেসব দাবি-দাওয়া লিখে দিয়েছিলেন নুর নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে আইসিসির পরোয়ানার বিরোধিতা প্রত্যাহার যুক্তরাজ্যের তারেক রহমানের নির্দেশেই রাষ্ট্রের ওপর হামলা: পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিটিভি ভবনে তাণ্ডবের চিহ্ন ঘুরে দেখলেন প্রধানমন্ত্রী বিএনপি-জামাত শিক্ষার্থীদের হত্যা করে সরকারের ওপর দায় চাপিয়েছে: কাদের বাংলাদেশকে ১০ উইকেটে বিধ্বস্ত করে ফাইনালে ভারত বিএনপি-জামায়াত ক্যাডাররা রাষ্ট্রকে অকার্যকর করতে চেয়েছিল: মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী

দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোই আমাদের লক্ষ্য: প্রধানমন্ত্রী

ভয়েসবাংলা প্রতিবেদক / ২২৪ বার
আপডেট : সোমবার, ১০ জানুয়ারী, ২০২২

দেশের বিদ্যমান অগ্রগতি ধরে রাখতে সবাইকে নিজ অবস্থান থেকে কাজ করে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তিনি বলেছেন, জাতির পিতার স্বপ্নের উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশে পরিণত করার মাধ্যমে দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোটাই আমাদের লক্ষ্য।

সোমবার ১০ জানুয়ারি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আয়োজিত ‘মুক্ত স্বদেশে জাতির পিতা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে আলোচনা পর্বে সভাপতির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর রামপুরাস্থ বাংলাদেশ টেলিভিশন সেন্টারের (বিটিভি) শহীদ মনিরুল আলম মিলনায়তনে অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশ নেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এবং বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস)-এর পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মহিউদ্দিন আহমেদ অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির সমন্বয়ক ড. কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী স্বাগত ভাষণ দেন।

ছোট ছেলেমেয়েদের অংশগ্রহণে সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এরপরই এতে মুজিববর্ষের থিম সং- ‘তুমি বাংলার ধ্রুবতারা, হৃদয়ের বাতিঘর’ সমবেত কণ্ঠে পরিবেশিত হয়। ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে জাতির পিতার স্বদেশে ফিরে আসার ওপর একটি ভিজ্যুয়াল প্রেজেন্টেশন অনুষ্ঠানে পরিবেশিত হয়। বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে শেখ রেহানার তাঁর বাবাকে নিয়ে লেখা ‘বাবা’ এবং মা’কে নিয়ে লেখা ‘রেনু আমার মা’ কবিতা দুটি অনুষ্ঠানে আবৃত্তি করে শোনান বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আসাদুজ্জামান নূর। জাতির পিতার ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) দেওয়া ভাষণের উল্লেখযোগ্য অংশও অনুষ্ঠানে প্রচার করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের লক্ষ্য যে স্বপ্ন নিয়ে জাতির পিতা বাংলাদেশ স্বাধীন করেছিলেন, সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা, দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানো এবং ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলা। আজকের দিনে সে প্রত্যয়ই ব্যক্ত করছি। তিনি বলেন, ইনশাআল্লাহ যতটুকু পারি জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করে বাংলাদেশের দুঃখী মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করে দিয়ে যাবো এবং দেশবাসীকেও আমি সে আহ্বানই জানাই, আজকে যে অগ্রগতিটা হয়েছে সেটা ধরে রেখে আমরা যেন আরও এগিয়ে যেতে পারি।

শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতার পর মাত্র সাড়ে ৩ বছর হাতে সময় পেয়ে জাতির পিতা বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তুলেছিলেন। ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ করে একেবারে তৃণমূল মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার, ভোটের অধিকার এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চেয়েছিলেন, তাদের ক্ষমতায়ন করতে চেয়েছিলেন। তিনি বলেন, যখনই জাতির পিতা সাধারণ মানুষ তথা তৃণমূল মানুষের ক্ষমতায়নের জন্য পদক্ষেপ নিলেন, আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের পদক্ষেপ নিলেন, তখনই কিন্তু ১৫ আগস্টের আঘাতটা এলো। এই আঘাতটা শুধু একজন রাষ্ট্রপতিকে হত্যা নয়, এই আঘাত ছিল একটি স্বাধীন দেশের আদর্শ ও চেতনাকে হত্যা করা। কেননা, ১৫ আগস্টের পর থেকে যারা ক্ষমতায় এসেছিল, তারা সেভাবেই রাষ্ট্রটা চালিয়েছিল। ১৫ আগস্টের খুনি, যারা স্বাধীনতাবিরোধী, যুদ্ধাপরাধী, মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী- তারাই ক্ষমতায় বসেছিল। মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের কোনও চেষ্টাই তারা করেনি। কাজেই যে মানুষগুলোর জন্য তিনি (জাতির পিতা) নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন, আজীবন জেল, জুলুম, অত্যাচার সহ্য করেছেন, সেই মানুষগুলোর ভাগ্য গড়াটাই আমাদের লক্ষ্য।

ভোট দিয়ে বারবার নির্বাচিত করায় দেশের জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা আমার ওপর আস্থা রেখেছেন, বারবার আমি ক্ষমতায় এসে দেশের মানুষের উন্নয়নে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি এবং সবচেয়ে বড় কথা জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং জাতির পিতার পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে স্বদেশে ফিরে আসার স্মরণে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসটি পালন করতে পারছি।

বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের কারাগারে ২৯০ দিন থাকার পর ১৯৭২ সালের এই দিনে (১০ জানুয়ারি) লন্ডন ও নয়াদিল্লি হয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের পবিত্র মাটিতে ফিরে আসেন। এরপর থেকে জাতি দিনটিকে জাতির পিতার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস হিসেবে পালন করে আসছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সবসময় বাঙালির হৃদয়ে ছিলেন

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সবসময় বাঙালির হৃদয়ে ছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানি সেনারা তাকে সে দেশে নিয়ে বন্দি করে রাখে। কিন্তু তিনি সবসময় মুক্তিকামী মানুষের পাশে ছিলেন। তিনি সশরীরে  আমাদের মধ্যে ছিলেন না, কিন্তু তিনি বাঙালির হৃদয়ে ছিলেন। তার ৭ মার্চের ভাষণ ধারণ করে বাঙালি জাতি যুদ্ধ করেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, দীর্ঘ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে তিনি তাঁর লক্ষ্য অর্জন করেছিলেন। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ৬ দফা, ৭০-এর নির্বাচন, ৭ মার্চের ভাষণ, সর্বশেষ আমাদের স্বাধীনতা অর্জনের সর্বাগ্রে ছিলেন তিনি। তার ভাষণ মুক্তিকামী মানুষকে প্রেরণা জুগিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীনতার পর যেদিন তিনি দেশে এলেন, দিনটি আমাদের জন্য কেমন ছিল তা ভাষায় বোঝাতে পারবো না। ১০ জানুয়ারি তিনি ফিরে আমাদের (পরিবার) কাছে আসেননি। তিনি সোজা চলে গেলেন তার প্রিয় জনতার কাছে।

বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ১০ জানুয়ারির যে ভাষণ, তার মধ্যে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র কীভাবে চলবে তার দিকনির্দেশনা তিনি দিয়েছিলেন। তার এই ভাষণে বাংলা কেমন হবে তা উঠে এসেছিল।বঙ্গবন্ধুকে যখন পাকিস্তানিরা মেরে ফেলতে চেয়েছে, তখন তিনি বলেছেন, আমাকে তোমরা মেরে ফেলতে পারো, কিন্তু আমার লাশটা বাংলার মাটিতে পৌঁছে দিও।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘হয়তো পাকিস্তানি কারাগারে তিনি অনেক অত্যাচারিত হয়েছেন, কিন্তু আমাদের কাছে কোনও কষ্টের কথা কখনও বলেননি। শুধু রেহানাকে একবার বলেছিলেন, তোদের শোনার দরকার নেই, তোরা সহ্য করতে পারবি না। এ থেকেই আমরা তার ওপর অত্যাচারের বিষয়টি বুঝতে পারি। সরকারপ্রধান বলেন, ‘তিনি ফিরে এসে দেশের মানুষের ক্ষমতায়ন ও উন্নয়নে কাজ করতে শুরু করলেন। কিন্তু তিনি তা শেষ করতে পারলেন না। আঘাত এলো, ১৫ আগস্ট তাকে হত্যা করা হলো। ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড শুধু বঙ্গবন্ধুকে হত্যা ছিল না; এটা ছিল একটি স্বাধীন দেশের চেতনাকে হত্যা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‌যে মানুষের জন্য বঙ্গবন্ধু এত কিছু করেছেন, তাদের ভাগ্যোন্নয়নই আমাদের লক্ষ্য। দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানো, ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত দেশ গঠনই আমাদের লক্ষ্য। আমরা যেন সোনার বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে পারি।’ তার ওপর আস্থা রাখায় শেখ হাসিনা দেশের মানুষকে ধন্যবাদ জানান।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর