অর্থনৈতিক উন্নয়নে এশিয়া একসঙ্গে কাজ করতে পারে: চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে প্রধানমন্ত্রী
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক সংকটে সারা বিশ্বের মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে পুরো এশিয়া একসঙ্গে কাজ করতে পারে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, দক্ষিণ এশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও চীন একসঙ্গে কাজ করলে যুদ্ধের ফলে সৃষ্ট চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা সহজ হবে।
গতকাল চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম ও বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিং উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, এর ফলে পাল্টাপাল্টি নিষেধাজ্ঞা- বরোধের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এসব কারণে বিশ্বের সব দেশই কোনো না কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে চীনসহ এশিয়ার সব অংশকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
বৈঠকে রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়েও দুজনের মধ্যে কথা হয়। শেখ হাসিনা বলেন, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ সংকট নিরসনে বাংলাদেশ চীনের সহযোগিতা চায়। জবাবে চীনা মন্ত্রী আশা প্রকাশ করে বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুটি বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান হবে। তবে এ আলোচনায় তৃতীয় পক্ষের সম্পৃক্ততার প্রয়োজন হলে চীন সে ভূমিকা পালন করবে। চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে বাংলাদেশসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ইস্যুতে সমর্থন দেবে চীন। পাশাপাশি একটি কৌশলগত অংশীদার হিসেবে বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়নে তাদের সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বের মাধ্যমে বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রশংসা করেন ওয়াং ই। তিনি বলেন, ডিজিটাল অর্থনীতির উন্নয়নেও চীন বাংলাদেশকে সাহায্য করবে। ওয়াং ই প্রধানমন্ত্রীর কাছে তাইওয়ান ইস্যুতে তাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেন। শেখ হাসিনাও বাংলাদেশের ‘এক চীন নীতিতে’ বিশ্বাসের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ চীনের সঙ্গে তার বন্ধুত্বকে মূল্যায়ন করে।এছাড়া যেসব বাংলাদেশী শিক্ষার্থী কভিড-১৯ মহামারীর সময়ে চীন থেকে দেশে ফিরে এসেছে তাদের লেখাপড়ার জন্য ফিরে যাওয়ার বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়ার জন্যও ওয়াং ইকে অনুরোধ করেন প্রধানমন্ত্রী।
কমিউনিস্ট পার্টি অব চায়নার ১০০ বছর পূর্তি উপলক্ষে বার্তা পাঠানোর জন্য চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান ওয়াং ই।